অরূপ বসাক:  দুর্গা পুজোর নিরঞ্জনের সময় ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা জলপাইগুড়ির মাল নদীতে। বিসর্জনের সময় আচমকাই ছুটে এল হড়পা বান। তাতেই ভেসে গেলেন ভাসানে আসা বেশ কয়েকজন। মোট ৩০-৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনওপর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। মৃতদের মধ্যে ১টি শিশুও রয়েছে। নদীর পাড় থেকে নদীগর্ভে অনেকটাই নেমে প্রতিমা বিসর্জন করছিলেন মানুষজন। সেইসময় আচমকাই ছুটে আসে ওই হড়পা বান। কয়েকদিন পাহাড়ে বৃষ্টি হওয়ার ফলেই আচমকা এই জলস্ফীতি বলে মনে করা হচ্ছে। একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে বহু মানুষ সাঁতার কেটে পাড়ে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু জলের তোড়ের সঙ্গে পেরে উঠছেন না।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

পড়ুন- বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা


ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানালেন, হঠাত্ হড়পা বান আসার ফলে অনেকেই স্রোতে ভেসে গিয়েছেন। কেউ বলছেন ২০, কেউবা বলছেন ২৫। কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না। চোখের সামনে ঘটে গেল ঘটনাটা। কয়েকজনকে মালবাজার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নদীর জল ক্রমশ বাড়ছে। আপাতত বিসর্জন বন্ধ রাখা হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক জানিয়েছেন ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


মাল নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ঘাট তৈরি ছিল। মোতায়েন ছিল নিরাপত্তা সরঞ্জাম। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী বুলু চিকবরাইক, চেয়ারম্য়ান সহ অনেকেই। আচমকাই প্রবল বেগে ছুটে আসে হড়পা বান। তাতেই ভেসে যান নদীতে নামা বহু মানুষ। সাবধান হওয়ার কোনও সুযোগই তাঁরা পাননি। নদীগর্ভে বেশ কয়েকটি গাড়িও ছিল। সবকিছুই জলের তোড়ে ভেসে যায়। নদীতে বিসর্জনের জন্য যেসব ট্রাক নেমেছিল জলের তোড় সেইসব ট্রাকের উপর দিয়ে চলে যায়। ফলে ট্রাকে থাকা মানুষজন ভেসে যান। মাল নদীতে এরকম হড়পা বান নতুন কিছু নয়। কিছুদিন আগেই এরকম এক হড়পা বানে ভেসে গিয়েছিল একটি আস্ত ট্রাক। ঘটনার খবর পেয়েই উদ্ধারে নেমে পড়ে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। কিন্তু ততক্ষণে বহু মানুষ ভেসে গিয়েছেন। ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।


ঘটনা নিয়ে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা জানিয়েছেন, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। তাদের উদ্ধার করতে নামানো হয়েছে এনডিআরএফ টিম।  এদিকে, জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকেই মাল নদী প্রতিটি ঘাটে পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে যাতে মানুষজন বিসর্জন দিতে নদীতে নামতে না পারে।


ঘটনা নিয়ে মালের বিধায়ক বুলু চিকবরাইক বলেন, প্রতি বছর মাল নদীতে বিসর্জন হয়। আজ আচমকাই এমন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এখওপর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যুর খব পাচ্ছি। নিখোঁজদের সঠিক খবর আমরা কাছে নেই। ঘটনার সময় নদীর পাড়ে ছিলেন কমপক্ষে ৯-১০ হাজার মানুষ। পাহাড় থেকে বিপুল জল আসাতেই এই বিপত্তি। 


দুর্ঘটনার পরই মালবাজার হাসপাতালে ভিড় করেছেন এলাকার মানুষজন। রাত দশটার সময়ে নদী থেকে এক স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সে জীবিত না মৃত তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। ওদলাবাড়ি থেকে এনডিআরএফের টিম এসে নদীতে আলো জ্বালিয়ে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। হাসপাতালে জড়ো হওয়া মানুষজনের ক্ষোভ, প্রশাসনের কাছে এমন জলের খবর কি ছিল না?


মালবাজার মিউনিশিপ্যালিটির চেয়ারম্যান বলেন, বিসর্জনের সময় আমরা বারবার মাইকে ঘোষণা করেছিলাম নদীর মধ্যে যাবেন না। কিন্তু কিছু অতি উত্সাহী মানুষ নদীর মধ্যে চলে যান। সেই সময় হড়পা বান আসার ফলে কিছু মানুষ ভেসে যায়। অনেকেই আমরা উদ্ধার করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কিছু মানুষকে উদ্ধার করতে পারিনি। জলের স্রোত খুবই প্রবল ছিল। তার সঙ্গে পেরে ওঠা অসম্ভব ছিল। আপাতত বিসর্জন বন্ধ রাখা হয়েছে।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)