পিয়ালি মিত্র: কটকের হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ভানু বাগের। শুক্রবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর। বিস্ফোরণের পরে শরীরে প্রায় ৭০ শতাংশ বার্ণ ইনজুরি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। কটকের হাসপাতালেই চলছিল তাঁর চিকিৎসা। তাঁর ছেলে এবং ভাইপো তাঁকে কটক পর্যন্ত পৌঁছে দেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় ভানু বাগের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক ছিল। বিস্ফোরণের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিনি নিজে। মুখ, হাত, পা  পুড়ে যায় তাঁর। বিস্ফোরণের রাতেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি। কটকের হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর।     


সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে যে গতকালই খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছায় সিআইডি-র দল। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে যে বিস্ফোরণের সময় আগুনের পুড়ে যাওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।


আরও পড়ুন: Egra Blast: বিজেপির মিছিলে বোমা, গুলি! জখম বিধায়ক-সহ ৭


ভানুর ছেলে পৃত্থীজিৎ বাগকে কটক সদর থানায় নিয়ে এসে নথি তৈরি করে রাজ্যে ফেরত নিয়ে যায় সিআইডি। হাসপাতাল থেকেই সন্ধেয় থানায় নিয়ে আসে। আধঘণ্টার মধ্যেই রওনা দেয়। আজ আদালতে তোলা হবে ভানুর ছেলেকে। রাতে কটকের হাসপাতাল কর্মী, চিকিৎসক, নার্স, অ্যাটেন্ডেন্টদের দীর্ঘক্ষন জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। বৃহস্পতিবার রাতে ভানুকেও জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করে সিআইডি। যদিও কথা বলার মতো অবস্থায় থাকলেও জেরায় কিছুই জানাতে চাননি তিনি।  


ঘটনায় মূল যে অভিযুক্ত তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ফলত ভানু বাগের মৃত্যুতে তদন্তকারী অফিসারদের একটু সমস্যা হবে তা মনে করা হচ্ছে। কীভাবে সম্পূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল অথবা যা মনে করা হচ্ছে যে বিস্ফোরণ হয়েছে বাজি পরীক্ষা করার সময় এই সব তথ্য ভানু বাগের কাছ থেকে যাচাই করার প্রক্রিয়া ব্যহত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।


আরও পড়ুন: WBBSE Madhyamik Result 2023: রাত পোহালেই মহাযুদ্ধের ফলাফল, কীভাবে কোথায় দেখা যাবে রেজাল্ট?


ফলত তদন্তকারী অফিসারদেরকে পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণ এবং অন্যান্য ফরন্সিক এভিডেন্স এবং সাইন্টিফিক এভিডেন্সের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করতে হবে। জানা গিয়েছে মূল অভিযুক্তের মৃত্যু হলেও অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে।


যেহেতু এটি একটি  আনন্যাচেরাল ডেথ তাই এই ঘটনার পোস্টমর্টেম হবে বলে জানা গিয়েছে। ভানু বাগের পোস্টমর্টেম কটকের শ্রীরামচন্দ্র ভঞ্জ মেডিকেল কলেজে হবে বলে জানা গিয়েছে। এরপরেই স্বাভাবিক পদ্ধতিতে তাঁর পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হবে। যদিও জানা গিয়েছে দেহ কাকে তুলে দেওয়ার সেই নিয়ে ধন্দ্ব রয়েছে। যেহেতু তাঁর ছেলে এবং ভাইপো এই মুহূর্তে সিআইডি হেফাজতে রয়েছে, তাই তাঁর দেহ কে নেবেন অথবা হাসপাতালের নথিতে কে সই করবেন সেই নিয়ে ধন্দ্ব তৈরি হয়েছে।


রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, ‘তদন্ত স্তিমিত হবে এর ফলে। এবং তদন্তে প্রথমথেকেই যেভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছিল, লঘু ধারা দেওয়া থেকে শুরু করে বিস্ফোরক আইন অন্তর্ভুক্ত না করা, যাতে এনআইএ না আসতে পারে। প্রথম থেকেই এইসব চলছিল। ভানু বাগের মৃত্যুর পরে আবার একটি বড় ধাক্কা খেল এই তদন্ত। এই মৃত্যুরও তদন্ত হওয়া উচিত। কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, কেন হয়েছে, মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক। কারণ প্রথম থেকেই একটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছিল’।


তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবে ছিন্নভিন্ন দেহ দেখা গিয়েছে তাতে এটা শুধু দেশই বোমা বলে মনে হয়না। এর পিছনে কোনও জঙ্গিগোষ্ঠী রয়েছে কিনা তাঁর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন’।         


অন্যদিকে এগরার এই ঘটনায় খুন ও খুনের চেষ্টার ধারা যোগ করা হয়েছে। তার সঙ্গে বিস্ফোরক আইনের ধারাও যোগ করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা করা হয়েছিল। ইএস অ্যাক্টের ৯বি ধারা যোগ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৩০২ এবং ৩০৭ ধারাও যোগ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)