নিজেস্ব প্রতিবেদন: দীর্ঘদিনের অসুস্থতার পর মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হল বর্ষীয়ান সিপিএম সাংসদ অনিল বসুর। অগস্টে মূত্রনালীতে সংক্রমণ নিয়ে মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। চলছিল কিডনির ডায়ালিসিসও। ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন চিকিত্সায় সাড়া দিচ্ছেন অনিল বাবু। মাস খানেকও গেল না, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হার স্বীকার করতে হল তাঁকে। বয়স হয়েছিল ৭২।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

উল্লেখ্য, অনিল বসু সর্বপ্রথম আরামবাগ কেন্দ্র থেকে জিতে লোকসভায় পা রাখেন। সেটা ছিল ১৯৮৪ সাল। এরপর টানা ৬ বার ওই লোকসভা কেন্দ্র থেকেই তাঁকে প্রার্থী করে কমিউনিস্ট পার্টি মার্ক্সবাদী। এবং সেখান থেকেই জয়ী হয়ে লোকসভায় গিয়েছেন হুগলির এই বাম নেতা। প্রসঙ্গত, যতদিন তিনি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন কখনই হারের সম্মুখীন হতে হয়নি তাঁকে। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ভোটে জিতেছিলেন অনিল বাবু। ওই বছর আরামবাগের সিপিএম প্রার্থী অনিল বসুর সঙ্গে নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটের ব্যবধান ছিল ৫ লাখ ৯২ হাজার ৫০২। যা কোনও রাজ্যে তো বটেই দেশেও সর্বোচ্চ। অনিল বসুর সেই রেকর্ড এখনও অক্ষত। শেষ লোকসভা নির্বাচনে ভদোদরা আসন থেকে ৫ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবুও তিনি ছুঁতে পারেননি অনিল বাবুর রেকর্ড।


এহেন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিল রাজ্য সিপিএম। তাঁর বিরুদ্ধে উচ্ছৃঙ্খলতা ও দলবিরোধী কাজ করার অভিযোগ ছিল এবং সে কারণেই তাঁর পার্টি সদস্যপদ বাতিল করে দেয় বিমান বসুরা। ২০১২ সালে তাঁর বিরুদ্ধে তিন সদস্যের একটি কমিশন গঠন করেছিল রাজ্য সিপিএম। তাঁরাই অনিল বসুকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাঁকে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে কেন্দ্রীয় কমিটি কমিশনের সিদ্ধান্তে পাকাপাকি শিলমোহর বসায়। সেই থেকেই পার্টির সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ-ই রাখেননি অনিল বসু। তাঁর অসুস্থতার কথা জানতে পেরে ৬ বছর পর বহিষ্কৃত সাংসদ-কে দেখতে হাসপাতেলে পর্যন্ত গিয়েছিলেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, শ্যামল চক্রবর্তী ও প্রাক্তন সাংসদ সুধাংশু শীল। এমনও শোনা যায়, তাঁর পার্টি সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। সোমনাথের মতো তাঁর ক্ষেত্রেও সেটা আর হয়নি। সাড়ে তিন দশক সাংসদ থাকার পরও পার্টির পতাকা জুটবে না অনিল বসুর।