নিজস্ব প্রতিবেদন: কালীঘাটের দশনার্থীরা কেউই খালি হাতে ফেরত যায় না। মা কালী সবারই মনস্কামনা পূর্ণ করেন। প্রতিবছর দীপান্বিতা কালীপূজোর দিন প্রচুর লোক মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। কলকাতা মহানগরীর একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থানএই কালীঘাটের মন্দির।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মহাদেব যখন দক্ষ কন্যা, দেবী সতীর মৃত শরীরকে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য শুরু করেন, তখন পৃথিবী ধংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ভগবান বিষ্ণু তার সুদর্শন চক্র দিয়ে দেবী সতীর দেহকে খন্ড বিখন্ড করে দিয়ে ছিলেন। দেহাংশগুলি যেখানে গিয়ে পরে সেগুলি একেকটি শক্তি পিঠে পরিণত হয়। এই রকমই একটি শক্তি পিঠ হলো কালীঘাট মন্দির। যেখানে দেবীর ডান পায়ের আঙ্গুল পড়েছিল বলে লোকমুখে কথিত আছে। 


এটি প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো মন্দির। কথিত আছে এক ব্রাহ্মণ হুগলি (ভাগীরথী) নদীর তীরে সাধনা করার সময় নদীর থেকে আসা অলৌকিক আলো দেখে আকৃষ্ট হন, কাছে গিয়ে তিনি আঙুলের আকারের পাথর খুঁজে পান সেটি তিনি তুলে নিয়ে আসেন এবং পূজা করা শুরু করেন।


ছোট মন্দির স্থাপন করেন। বর্তমানে যে মন্দির কালীঘাট নামে পরিচিত। প্রথমে মন্দিরটি একটি কুঁড়েঘরের মতো ছিল। পরে সেটিকে বর্তমান রূপ দেওয়া হয়। লোকমুখে সোনা যায় আগে এই মন্দিরে নিয়মিত মায়ের চরণে বলি দেওয়া হতো। বর্তমানে বিশেষ বিশেষ দিনেই এই বলি দেওয়া হয়। প্রতিবছর একটি নির্ধারিত দিনে দেবীকে স্নান করানো হয় যা স্নানযাত্রা নাম পরিচিত।


বর্তমান মন্দির টি ৬ টি ভাগে বিভক্ত-ষষ্ঠী তলা, নাট মন্দির, জোড় বাংলা, হারকাঠ তলা ,রাধা কৃষ্ণ মন্দির এবং কুন্ড পুকুর । বর্তমানে যে মূর্তিটিকে পুজো করা হয় সেটি কষ্টি পাথরের তৈরী এবং সোনা ও রূপ দিয়ে কাজ করা। ২০১৬ সালে প্রায় ৪০ বছর পর দেবীর জিভটিকে পাল্টানো হয়। বর্তমান জিভটি প্রায় ২ কিলো ১৯১ গ্রাম রুপোর ওপর ৫৫৮ গ্রাম সোনা দিয়ে মোড়া। দেবীর খড়গটি পাল্টে একটি দু কেজি ওজনের সোনার খড়গ দেবীরহাতে স্থাপন করা হয়েছে।


কালীঘাটের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িগঙ্গা দিয়ে চারশো বছর আগে ছোট ছোট জাহাজ চলত। ভক্তেরা পুণ্যস্নান করে মা কালীর থানে পুজো দিতেন। মন্দিরের সামিনেই ছিল স্নানের ঘাট। ঘাটের পাশে চিনু শাঁখারি নামের এক গরীব মানুষ শাঁখা বিক্রি করত। মেয়েরা স্নান করতে এসে, পুজো দিতে এসে তার কাছ থেকে শাঁখা কিনে নিয়ে যেত। কিন্তু একদিন তার একটিও শাঁখা বিক্রি হল না। কিন্তু একটাও বিক্রি না হলে তো পরিবার শুধু তার পুরো উপোষ। ছেলেমেয়ের কথা ভেবে সে কেঁদে ফেলল। তখন তার ওপর মা কালীর দয়া হল, তিনি একটি বিবাহিত মেয়ের রূপ ধরে তার কাছ থেকে শাঁখা কিনে পরলেন। তাকে অনেক রত্ন দিলেন আর বর দিলেন অভাব ঘোচার। দেখতে দেখতে মায়ের কৃপার কথা রটে গেল মুখে মুখে। লোকবিশ্বাস সৃষ্টি হল, এখানে বিয়ে হলে সারাজীবন শাঁখাসিঁদুর অক্ষয় থাকবে।