প্রদ্যুত্ দাস ও মৌমিতা ভট্টাচার্য: শনিবার ধুপগুড়িতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের হাত ধরে বিজেপি যোগ দেন বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি দীপেন প্রামাণিক। ওই যোগদানের পর অনেকেই ভেবেছিলেন ধুপগুড়িতে উপনির্বাচনের আগে এক গোল দিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু পাল্টা আক্রামণে গিয়ে সেই গোল শোধ করে দিল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন জেলার বিশিষ্ট তৃণমূল নেত্রী ও ধুপগুড়ির প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মিতালি রায়। ধুপগুড়ির নেতাজিপাড়ায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের হাত থেকে পদ্মপতাকা হাতে তুলে নেন  মিতালি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-ফুসফুসে সংক্রমণ, জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি সোনিয়া গান্ধী


শনিবারই ধুপগুড়িতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় ছিলেন  মিতালি। গত কয়েক দিন তৃণমূলের প্রচারেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। রাত পোহাতেই একেবারে একেশো আশি ডিগ্রি ঘুরে বিজেপিতে চলে গেলেন  মিতালি রায়। যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ ডা. জয়ন্ত কুমার রায়-সহ বেশ কিছু বিজেপি  বিধায়ক ও দলের নেতারা।


ধুপগুড়ি উপ নির্বাচনের আগে মিতালি রায়ের বিজেপিতে যোগদানকে গুরুত্ব দিয়েই দেখছে রাজনৈতিক মহল। ছাত্র আন্দোলন থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন মিতালি। কামতাপুর আন্দোলনেও তাঁর ভূমিকা ছিল। ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ধুপগুড়ি থেকে তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন। মিতালি রায়ের বক্তব্য, অরূপ বিশ্বাস এসে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। তার পরই তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যান। তবে বহুদিন ধরেই তাঁর সঙ্গে দলের একটা দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল। চাপের কারণে বিধানসভা ভোটে ধুপগুড়িতে হারার পর তৃণমূলের বহু কর্মসূচিতে তিনি থাকেননি। সেই চাপ কাটাতে ও উন্নয়ণের কাজ করতেই তিনি বিজেপিতে যোগদান করেছেন বলে তাঁর দাবি।


রাতারাতি যে মিতালি এই সিদ্ধান্ত নেননি তা একপ্রকার স্পষ্ট। শিবির বদল করার একটা যে প্রক্রিয়া চলছিল বোঝাই যায়। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ফিরে আসার কথা থাকলেও তিনি গতকাল ধুপগুড়িতে থেকে যান। তারপরই সুকান্ত মজুমদার ও মঙ্গল পান্ডের উপস্থিতিতে মিতালি বিজেপিতে যোগ দেন। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, ধুপগুড়ি উপনির্বাচনের আগে বিজেপি তৃণমূলকে একটা ধাক্কা দিতে চাইছিল। তাতে তারা সফল।


বিজেপিতে যোগদান নিয়ে মিতালি রায় বলেন, একটা জায়গা ছেড়ে অন্য একটা জায়গায় এসেছি। গতকাল আমাকে তৃণমূলের মঞ্চে সবাই দেখেছিলেন। কিন্তু এই উপনির্বাচনের প্রচারে আমি ঘরেই বসেছিলাম। প্রচারের আলোতে সেভাবে আসিনি। বের হতে চাইনি। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আমার কাছে আসেন। তাঁকে খুবই সম্মান করি। সেই জন্যই তাঁর সঙ্গে আমি ২ দিন ঘুরেছিলাম। আমি আগেই বলেছিলাম আমি প্রচারে যাব না। আমাকে চাপ দিও না। কিন্তু যখন দেখলাম আমাকে চাপ দিয়ে বের করা চেষ্টা করল তখন আমার মন ভেঙে গেল। সেই কারণে গতকাল রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম এখানে আমি থাকব না। দল থেকে আমার উপরে প্রচুর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে।


এদিকে, মিতালি রায় বিজেপিতে যোগদানে বিজেপির একাংশে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।  মিতালি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখিয়ে বিজেপির অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান বিজেপির ধূপগুড়ি শহর মন্ডল সভাপতি শিবু চক্রবর্ত্তী, সাধারণ সম্পাদক পাপাই বসাক, পশ্চিম মন্ডল সভাপতি কমলেশ সিংহ রায়, বিজেপি নেতা মাধব রায়-সহ অনেকে। মাধব রায় বলেন,"আমরা যোগদানের বিষয়টা জানি না। কিছু কর্মীদের ক্ষোভ হয়েছে। আমাদের অন্ধকারে রেখে যোগদান করানো হয়েছে।" বিষয়টি নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে নারাজ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।


অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ  সম্পাদক রাজেশ কুমার সিং কটাক্ষ করে বলেন, এটা মাস্টারস্ট্রোক নাকি সার্জিকাল স্ট্রাইক বিজেপি বুঝবে। নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দল থামাক। যে আগের দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় তৃণমূল কংগ্রেসকে জেতানোর আহ্বান করে পরের দিন সকালে বিজেপিতে যায় তার ব্যক্তিত্ব কী মানুষ জেনে গিয়েছে।



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)