শ্রীকান্ত ঠাকুর: ভোটের মুখে হঠাৎ করেই অঞ্চল থেকে শুরু করে জেলা সর্বত্রই কমিটিতে পরিবর্তন আনল জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই পরিবর্তন করতে গিয়েই বড়সড় বিতর্কের মুখে দল। কারণ এমন গুরুত্বপূর্ণ দলীয় সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর ছিল না চেয়ারম্যান তোরাব হোসেন মন্ডলের। বরং তার পরিবর্তে সেখানে স্বাক্ষর করেছেন বালুরঘাট আসনের তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব মিত্র। পঞ্চায়েত ভোট জেলা জুড়ে অভাবনীয় রেজাল্ট হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন, Thread Ceremony of Girl: শুধু ইচ্ছেপূরণের জন্য নয়, বৈদিক রীতি মেনে মেয়ের পৈত্যে দিলেন সিউড়ির দম্পতি...


যে কমিটি এতদিন কাজ করেছে সেই কমিটি কে সরিয়ে দিয়ে হঠাৎ করেই কমিটির পরিবর্তন করায় কিছুটা অবাক তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। এমনকি দলীয় নেতৃত্ব স্বীকার করে নিচ্ছেন ভোটের একমাস আগে হঠাৎ করেই এই পরিবর্তন বিরূপ প্রতিক্রিয়া আনতে পারে কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। বিজেপি অবশ্য দাবি করেছে নিজেদের ভরাডুবি বুঝতে পেরেই কমিটি পরিবর্তন করে হার রক্ষা করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।


মঙ্গলবার রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের গঙ্গারামপুর কার্যালয়ে জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল ও মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি স্নেহলতা হেমরম তাদের নতুন তালিকা প্রকাশ করেন। তারা ঘোষণা করেন, এই নতুন কমিটি বিপ্লব মিত্রের ভোট কমিটি হিসেবে কাজ করবে। তাদের ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন কমিটিতে গঙ্গারামপুর ব্লকের ১১টি অঞ্চলের সমস্ত সভাপতি ও চেয়ারম্যান পরিবর্তন করে নতুন সভাপতি ও নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়েছে৷ সব থেকে বেশী পরিবর্তন করা হয়েছে গঙ্গারামপুর ব্লকে যেখানে গত পঞ্চায়েতে সবথেকে ভালো ফলাফল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বংশীহারী ব্লকের বুনিয়াদপুর পৌরসভা কিছুদিন আগে পৌরসভার চেয়ারম্যান পরিবর্তন করে নতুন চেয়ারম্যান আনা হয় এবং নতুন কমিটিতে বংশীহারির শহর সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে।


 হরিরামপুর বিধানসভা ক্ষেত্র যেখান থেকে বিপ্লব মিত্র বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছে সেখানে পাঁচটি অঞ্চল বিশেষত বৈরহাট্টা,  শীরশি, গোকর্ণ, বাগিচাপুর, পুন্ডরি অঞ্চলের পুরোপুরি কমিটি চেঞ্জ করে দেওয়া হয়েছে। কুশমন্ডি ব্লকের উদয়পুর, কুশমন্ডি, দেউল, কালিকামোরা, আকচা অঞ্চলেও একই রকম ভাবে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তপন ব্লকের আওটিনা, আজমতপুর, হযরতপুর, গুড়াইল, রামচন্দ্রপুর, রামপাড়া চাঁচড়া, হরশুড়াতে পূর্ব কমিটিকে ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি তৈরি করা হয়েছে।


কুমারগঞ্জ ও বালুরঘাট ব্লকে ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে জয়েন্ট কনভেনার নিয়োগ করা। জয়েন্ট কনভেনর নামে নতুন পদের সৃষ্টি করা হয়েছে। ব্যাপক এই সাংগঠনিক পরিবর্তন কেন করা হল এবং তার প্রভাব কি পড়তে পারে তা নিয়ে সন্ধিহান তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। সরাসরি বা প্রকাশ্যে বলতে না চাইলেও জেলা তৃণমূলের শীর্ষ  নেতৃত্বদের একাংশ দাবি করেছেন, এর ফলে বিজেপির সুবিধা হবে। লোকসভা ভোটে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কারণ যাদের নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস ভালো ফলাফল করেছিল গোটা জেলা জুড়ে। সেই কমিটিকে পরিবর্তন করে নতুন কমিটি তৈরি করার ফলে তার নেতি প্রভাব পড়তে বাধ্য। এই ধরনের পরিবর্তন না করে বরং বর্ধিত কমিটি করে পরিস্থিতি সমাল দেওয়া যেত।


জেলা রাজনৈতিক মহল মনে করছে পঞ্চায়েত ভোটে যেহেতু বিপ্লব মিত্রের বিরোধী গোষ্ঠী বলে পরিচিত মৃণাল সরকারের নেতৃত্বে এই কমিটিগুলি তৈরি হয়েছিল, তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে মৃণাল সরকারের প্রভাব যাতে কোন অঞ্চলে না পড়ে তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার চেয়ারম্যান তোরাব হোসেন মন্ডল জানান, পার্টিতে প্রার্থীকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। যেহেতু বিপ্লববাবু বালুরঘাট লোকসভা আসনের প্রার্থী, তাই তার ইচ্ছা মতো এই নতুন কমিটি তৈরি হয়েছে। তিনি প্রার্থী হিসেবে সই করতে পারেন। আমার সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছিল। এই কমিটির প্রতি আমার সমর্থন রয়েছে। কিন্তু এটা ঠিক যে ভোটের আগে এইভাবে কমিটি পরিবর্তন করার ফলে পুরনো যারা ছিলেন তারা মনঃক্ষুণ্ণ হতেই পারেন। 


তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল গতকাল বলেন, এটা রাজ্য কমিটির নির্দেশেই ইলেকশন কমিটি তৈরি করা হচ্ছে। এত বড় জেলায় অনেক বড় জেলা কমিটি যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া সময় সাপেক্ষ হয়। যার ফলে চটজলদি সিদ্ধান্ত নিতে গেলে একটা নির্বাচন কমিটি তৈরি করা দরকার তাই ১৭ জনের নির্বাচন কমিটি তৈরি হয়েছে প্রাথমিকভাবে। যারা শহরের সভাপতি ছিলেন তাদের পরিবর্তন করে তাদেরকে জেলা কমিটিতে নেওয়া হচ্ছে এবং তিনটি পৌরসভা তে নতুন সভাপতি নিয়োগ করা হচ্ছে। ব্লকের নির্বাচন কমিটি তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রার্থীকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে তিনি তার পছন্দ মত লোকদের দিয়ে ব্লকের নির্বাচন কমিটি তৈরি করবেন।


বিজেপির স্বরূপ চৌধুরী বলেছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভার নামে ফ্লপ শো করার পর দায় কার তাই নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করছেন। তার ঠিক দুই দিনের মধ্যে জেলা জুড়ে পরিবর্তনও করা হয়েছে কমিটিতে কিন্তু তার সুফল কিছু হবে না। তৃণমূল কংগ্রেসকে সাধারণ মানুষ পছন্দ করছে না তাদের হার এবার নিশ্চিত।



আরও পড়ুন, Malbazar: মৃত্যু, অভাব, অভিযোগ! চা-বাগান খোলার দাবিতে বাগানের সামনেই এবার ধর্নায় চা-শ্রমিকেরা...


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)