সৌমিত্র সেন


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সঙ্গীতশিল্পী জোজো-র একটি পোস্ট, তা ঘিরে দানা বাঁধা বিতর্ক এবং সেই বিতর্কের জেরেই চেগে উঠল বঙ্গরাজনীতির আসর। ছুটি কাটাতে পাহাড়ে গিয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী জোজো। সেখান থেকেই বুধবার সকালে কিছু ছবি পোস্ট করেন তিনি। পোস্ট করে বিতর্কের মুখেও পড়েন।


কেন বিতর্ক? 


জোজোর পোস্ট করা ছবির লোকেশন ট্যাগে দেখা যায় রিশপে বেড়াতে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু রিশপের পাশেই লেখা, 'গোর্খাল্যান্ড, ইন্ডিয়া'! এই লোকেশন ট্যাগ দেখেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তোলেন নেটিজেনরা। নানা রকম প্রশ্ন-- 'এই গোর্খাল্যান্ডটা ঠিক কোথায়? কবে হল?','বাংলায় গোর্খাল্যান্ড কোথায়?' কেউ আবার শিল্পীকে পরামর্শও দিয়েছেন-- 'একটু চোখ কান খোলা রাখুন'। 


জোজোর সঙ্গে এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি 'জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল'কে জানান, 'ইচ্ছে করে কিছু করিনি। ফেসবুকের লোকেশন ট্যাগে রিশপ লিখতে গেলে পোস্টটি নিজে থেকেই ওই ট্যাগ নিয়ে নেয়। গুগলের উপর আমার কিছু করার নেই। একেবারেই অনিচ্ছাকৃত ভুল।' তবে নেটিজেনরা প্রশ্ন তোলার পরই ছবিটি থেকে লোকেশন ট্যাগ তুলেও দেন জোজো।  


প্রসঙ্গত, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বহুদিন ধরেই আন্দোলন করছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। কিন্তু গোর্খাল্যান্ড এখনও অধরা। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজেপি নেতা নানা মন্তব্য করেছেন। এদিকে, মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রী আলিপুরদুয়ারে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, 'রক্ত দেব কিন্তু রাজ্য ভাগ হতে দেব না। কিছু বিজেপি নেতার মদতে এসব হচ্ছে।'


প্রাক্তন মন্ত্রী এবং শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি 'জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে বলেন, 'গোর্খাল্যান্ডের কোনও অস্তিত্ব নেই, কিন্তু (কারও পোস্টের ক্ষেত্রে ) যদি এরকম ঘটে থাকে, তবে সেটা গুগলের শুধরে নেওয়া দরকার। আমি বিষয়টা জানলাম, এবার বিষয়টি যেখানে জানাবার সেখানে জানাব।'  


এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল তৃণমূলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'গুগল এই আশ্চর্য কাণ্ডটা আগেও করেছে। ভারতের ম্যাপ থেকে তো কাশ্মীরকেই একবার বাদ দিয়ে দিল! আসলে নর্থ-ইস্ট পোরশনের এই স্টেটগুলিকে কেন্দ্র করে একটা অন্যরকম হাওয়া তো আছেই, আর ভারতের অখণ্ডতার জন্য এই অঞ্চলের সংহতিটা খুবই জরুরি। জোজোর পোস্টের ক্ষেত্রে যা হয়েছে, তাতে এই সংহতিটা ক্ষুণ্ণ হয় আর সেটার জন্য অবিলম্বে ভারত সরকারের উচিত হবে বিষয়টি গুগলের নজরে আনা, তাদের সতর্ক করা, যদি না গুগলের এই অসাবধানতা বিষয়ে তাদেরও কোনও প্রচ্ছন্ন ইচ্ছা কাজ করে!'


একই বিষয়ে সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'জোজোর সঙ্গে যা ঘটেছে, যে কোনও ব্যক্তির সঙ্গেই সেটা ঘটতে পারত। এক্ষেত্রে ওঁর ক্ষণিক অসতর্কতার জন্যই হয়তো এমনটা হয়েছে, কিন্তু গুগলে এমন একটা অপশন আসবে কেন? গুগল এটা কেন দেখাবে? অচিরেই বিষয়টি নিয়ে গুগল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যোগাযোগ করা উচিত।' 


কিন্তু যে দল বরাবর গোর্খাল্যান্ড ইসুকে সমর্থন করে এসেছে, কী বলছেন তাদের প্রতিনিধি? বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডার সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলে তিনি এ বিষয়ে বলেন, 'জিটিএ তৈরি করে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারই তো গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে প্রকারান্তরে মান্যতা দিয়েছিল। তবে এটুকু বলতে পারি, বিজেপি রাজ্য বিভাজন চায় না, বঙ্গভঙ্গ চায় না। কখনও কখনও কোনও বিজেপি বিধায়ক যদি তেমন দাবির কথা তোলেনও, তবে বুঝতে হবে সেটা তাঁরা বঞ্চনার জন্যই বলেন। এবং সেটা একেবারেই তাঁদের ব্যক্তিগত কথা, দলের স্ট্যান্ড নয়।' 


সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত জোজোর পোস্টে গোর্খাল্যান্ড লোকেশন ট্যাগ প্রসঙ্গে  জানান, 'আমার মনে হয়, ফেসবুক তো এভাবে দেবে না। গুগল ম্যাপে যদি একটি নির্দিষ্ট জায়গাকে মানুষ কোনও নির্দিষ্ট নামে খুঁজতে থাকেন তখন গুগলও সেটাই দেখাতে থাকে। গুগল নিজে কিছু জানে না। মানুষ মেশিনকে যেরকম শেখায় মেশিন সেরকমই শেখে। কেউ যদি কোনও নির্দিষ্ট জায়গাকে কোনও বিশেষ নামে দাগিয়ে দেয়, তবে গুগল সেটাই দেখাবে। এক্ষেত্রে হতে পারে ওই অঞ্চলের অসংখ্য মানুষ বারবার গোর্খাল্যান্ড কথাটা লেখেন, তাই গুগল সেটা পিক করে নিয়েছে।'


তা হলে কি ফেসবুকের বা গুগলের এটা শুধরে নেওয়া জরুরি নয়? 


সন্দীপের ব্যাখ্যা-- ওরা এভাবে কাজটা করে না। তবে কেউ ওদের ভুল রিপোর্ট করলে ওরা সেটা শুধরে নেয়। না হলে এই বিরাট পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ কোথায় কখন কী লিখছে সেটা দেখার মতো কোনও পরিকাঠামোও ওদের নেই, ওরা সেটা সেভাবে দেখতেও চায় না।


(Zee 24 Ghanta App: দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)


আরও পড়ুন: North Bengal Tourism: ধস এড়িয়ে দার্জিলিং-সিকিম যেতে চান ঘোর বর্ষাতেও? জেনে নিন অল্টারনেটিভ রুট, খরচও