Raju Sahani: থাইল্যান্ড-ব্যাঙ্কক-হংকং-এ ৩টি কোম্পনির মালিক হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু!
২০১৫ সালে হালিশহর পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে যেতেন রাজু সাহানি। ২০২১ সালে ২০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেন
বাসুদেব চট্টোপাধ্য়ায়: চিটফান্ড কাণ্ডে জড়িয়ে জেল ঠাঁই হয়েছে হালিশহর পুরসভার তৃণমূলের চেয়ারম্য়ান রাজু সাহানির। সেই রাজু সাহানিকে ১৪ দিন জেল হেফজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। রাজু সাহানির সঙ্গে যে চিটফান্ডের সরাসরি যোগ রয়েছে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আদালতে জমা দিল সিবিআই। এদিন রাজুর পক্ষে তাঁর জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী প্রদীপ কর ও সৌমেন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বর্ধমান সন্মার্গের সঙ্গে রাজুর সরাসরি যোগসাজসের কোনও তথ্য দিতে পারেনি সিবিআই। রাজুর পরিবারের একাধিক লোকজন ব্যবসা করেন। তাই তাঁর বাড়ি থেকে যে নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে তা পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। রাজুর পক্ষে তাঁর আইনজীবী আরও বলেন, চিটফান্ড কাণ্ডে যারা মূল অভিযুক্ত তারা জামিন পেয়ে বাইরে ঘুরছে। তারা প্রমাণ নষ্ট করতে পারছে না। তাহলে রাজু কীভাবে প্রমাণ নষ্ট করবে?
আরও পড়ুন-Raju Sahani: চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতার হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান, কীভাবে উত্থান এই তৃণমূল নেতার!
এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী শিবেন্দ্র সাচ্চান তাঁর পাল্টা সওয়ালে রাজুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, হংকং, থাইল্যান্ড ও ব্যাংককে রাজুর ৩টি কোম্পানির হদিস পাওয়া গিয়েছে। থাইল্যান্ডের একটি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে সৌম্যরূপ ভৌমিক নামে রাজুর এক ঘনিষ্ঠের নামে। ওই অয়াউন্ট খুলতে সাহায্য করেছে রাজু। সৌম্যরূপ পলাতক থাকাকালীন রাজুর বাড়িতেই ছিল। মোবাইল টাওয়ার লোকশন-সহ আরও অনেক তথ্য সিবিআইয়ের কাছে এসেছে। তাই আরও তথ্য পাওয়ার জন্য রাজুকে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানিকে তাকে তার নিউ টাউনের ফ্ল্য়াট থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার বাড়ি থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। নিউ টাউনের ফ্ল্যাট ছাড়াও হালিশহরে তাঁর নিজের বাড়ি ও অন্য়ান্য জায়গা থেকে বিপুল টাকার সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। নিউটাউনের পাশাপাশি এ রাজ্য় ও বেঙ্গালুরুতে মোট ৩টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে সিবিআই। সিটিসেন্টার ২ এর সামনে একটি দোকান রয়েছে। নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া ২-এ ফ্ল্যাট রয়েছে রাজুর। সেখানে একটি আবাসনের বারোতলায় থাকেন রাজুর স্ত্রী ও সন্তান। জানা যাচ্ছে ওই আবাসনের এক একটি ফ্ল্যাটের দাম কোটি টাকার উপরে। এরকম একটি আবাসনের ৯ তলাতেও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। কিন্তু কীভাবে এত সম্পত্তির মালিক রাজু। কীভাবে তাঁর উত্থান?
একসময় হালিশহরের দাপুটে সিপিএম নেতা ছিলেন লক্ষ্ণণ সাহানি। লোহার ব্যবসা করতেন। সিপিএমের টিকিটে কাউন্সিলরও হয়েছিলেন। পরে তিনি যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। ২০১০ সালে হালিশহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন লক্ষ্ণণ সাহানি। ২০১২ সালে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে সেই জায়গাটা দখল করেন লক্ষ্ণণ সাহানির ছেলে রাজু সাহানি।
২০১৫ সালে হালিশহর পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে যেতেন রাজু সাহানি। ২০২১ সালে ২০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেন রাজু। সূত্রের খবর, করোনা কালে ২০২০ সালে হালি শহর পুরসভার নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। তখন পুরো প্রশাসক হিসেবে চেয়ারম্যান অংশুমান রায় কিছুদিন দায়িত্বে ছিলেন। তারপর সেখান থেকে তিনি সরে আসেন। এরপর পুর প্রশাসকের সেই জায়গা দখল করেন রাজু। পরবর্তীতে নির্বাচন হলে, চেয়ারম্যান হন রাজু।