Uttarpara: বাবার প্রয়াণে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে `মৃত্যুর অপেক্ষা`! হাসপাতালে মৃত্যু `স্বেচ্ছাবন্দী` ছেলের
Hoogly News: বেশ কয়েকদিন ধরে প্রায় না খেয়ে দেয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছিলেন তিনজনই। ২০ দিন না একমাস তারা এভাবে ছিলেন তা কেউ খোঁজ নেয়নি। প্রতিবেশিরা জানতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত উত্তরপাড়া পুরসভা শেষকৃত্যের দায়িত্ব নিল।
বিধান সরকার: উত্তরপাড়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাজেন্দ্র অ্যাভিনিউ থার্ড লেনের গগণ ভিলার বাসিন্দা শ্যামলী মুখোপাধ্যায় (৭৮), তার ছেলে সৌরভ (৫৫) ও মেয়ে নন্দীতা (চুমকি ৫০) মুখোপাধ্যায় নিজেদের গৃহবন্দী করেছিলেন। গত বেশ কয়েকদিন ধরে প্রায় না খেয়ে দেয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছিলেন তিনজনই। ২০ দিন না একমাস তারা এভাবে ছিলেন তা কেউ খোঁজ নেয়নি। প্রতিবেশিরা জানতে পারেননি।
আরও পড়ুন, Cooch Behar: রিজার্ভার পরিষ্কার করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, মৃত ২ শ্রমিক!
সৌরভ তার এক আত্মীয়কে ফোন করে শুধু জানিয়েছিলেন, মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছেন। সেই আত্মীয় বৈষ্ণব দাস মুখোপাধ্যায় কিছু একটা হয়েছে আন্দাজ করে উত্তরপাড়ায় আসেন ৪ ফেব্রুয়ারি। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। আত্মীয় বৈষ্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, 'গৃহকর্তা গগণ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর থেকে মানসিক অবসাদ তৈরি হয় পরিবারের। বাড়ি থেকে বেরনো বন্ধ করে দেন তারা। কারও সঙ্গে যোগাযোগও ছিল না। মাস খানেক না খেয়েদেয়ে এভাবেই হয়ত পড়ে ছিলেন।'
তাঁর বিবরণ অনুযায়ী, 'আমাকে ফোন করে সৌরভ একদিন বলে দাদা আমার শরীর খুব খারাপ। এক মাস আমরা কিছু খাইনি। একবার আসবে। আমি আসতে চাইলে বলে আজ পূর্ণিমা কাল এসো। তা সত্ত্বেও আমি আসি। দরজা খোলে না। এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকি তারপর কড়া নাড়ি। দরজা খুলেই বলে আর দু দিন বাঁচব। আমি বলেছিলাম, তুই মারা গেলে মা বোনকে কে দেখবে?'
গত সোমাবার আবার আসেন বৈষ্ণব বাবু। দরজা বন্ধ থাকায় ভিতর থেকে সারা না পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যানকে খবর দেন তিনি। পুলিস ডাকেন চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব। উত্তরপাড়া থানার পুলিস তিনজনকে উদ্ধার করে উত্তরপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে।সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তাদের। বুধবার ভোর রাতে মৃত্যু হয় সৌরভের। তার মা কিছুটা সুস্থ হলেও বোনের অবস্থা এখনও সংকটজনক।
আজ মৃত্যুর খবর পেয়ে চেয়ারম্যান দিলীপ যাবদ রাজেন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের ওই বাড়িতে যান। মৃতের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে হাসপাতালে যান। শেষকৃত্যের যাবতীয় ব্যবস্থা করেন। দিলীপ যাদব বলেন, এই ধরনের মৃত্যুতে নিজেদের অপরাধী মনে হয়। আমাদের পাড়ার একজন মানুষ তারা কতদিন বাড়ি থেকে বের হননি, খাননি, অসুস্থতা ছিল। কোনও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলেননি, কেউ জানতে পারেনি। সমাজে বা প্রশাসনের কারও কাছে কোন সাহায্য চাননি এটা আমাদের কাছে খুব কষ্টের। সমাজের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ যেই শুনবে তার কাছে খুবই কষ্টের। আমরা যখন জানতে পেরেছি তারপর কিছু ব্যবস্থা নিয়েছি। গগন বাবুর স্ত্রী এবং মেয়ের চিকিৎসা চলছে আশা করব তারা সুস্থ হয়ে উঠবেন।
আরও পড়ুন, Mango: মুকুল কম! মধ্য বসন্তে ম্লান হাসি আমচাষীদের...
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)