নিজস্ব প্রতিবেদন : স্বামী বিভিন্ন অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাই বছর দেড়েক আগেই স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করেছিলেন মহিলা। আর তারপর থেকেই আক্রোশ বশে প্রাক্তন স্ত্রীর উপর প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে উঠেছিল স্বামী। শেষমেশ মেয়ে সেজে প্রাক্তন স্ত্রীকে অপহরণের ছক কষল স্বামী। যদিও শেষপর্যন্ত স্ত্রীর চিত্কারে অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এলাকাবাসী। চলে উত্তমমধ্যম। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের সিউড়িতে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বছর দুয়েক আগে সিউড়ির মাটপলসা গ্রামের বাসিন্দা রাজিয়া বিবির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ছোট আলুন্দা গ্রামের বাসিন্দা শেখ আবদুল্লাহের। বাড়ির সম্মতিতেই চার হাত এক হয়। কিন্তু বিয়ের পর পরই সামনে আসে আবদুল্লাহের আসল রূপ। রেজিয়া জানতে পারেন, বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আবদুল্লাহ। এলাকার মানুষের কাছে মেয়ে ও মাদক পাচারকারী বলে পরিচিত তাঁর স্বামী।


রাজিয়া শোনেন, তাঁর স্বামী আবদুল্লাহ কখনও মাদ্রাসা স্কুল খুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে মেয়ে পাচার করেছে। কখনও আবার লুকিয়ে মাদক পাচারের সঙ্গেও যুক্ত ছিল। এছাড়াও আরও নানাধরনের অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আবদুল্লাহ। স্বামীর এসব কুকীর্তি মানতে পারেননি রাজিয়া। প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, এরপরই স্ত্রী রাজিয়ার উপর অত্যাচার করতে শুরু করে আবদুল্লাহ। শুরু হয় মারধর। নিজেদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকে সে।


আরও পড়ুন, অমিতের সভার নিরাপত্তায় ড্রোন না সিসিটিভি? বদল নিরাপত্তা পরিকল্পনায়


এরপরই মাস ছয়েকের মধ্যে আবদুল্লাহকে ডিভোর্স দিয়ে বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন রাজিয়া। অভিযোগ, তারপর থেকেই প্রাক্তন স্ত্রীকে বিক্রি করার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে আবদুল্লাহ। নানা ফন্দি আঁটে সে। যদিও কোনও চেষ্টাই সফল হয়নি। আবদুল্লাহ জানতে পারে, রোজই সিউড়ি আসেন রাজিয়া। একথা জানতে পেরেই ফের রাজিয়াকে অপহরণের ছক কষে আবদুল্লাহ।


বোরখা পরে প্রথমে মেয়ে সাজে আবদুল্লাহ। তারপর বোবার অভিনয় করে। টাকা দিয়ে ড্রাইভারকে হাত করে একটি মারুতি গাড়ি ভাড়া করে আবদুল্লাহ। তারপর সেই গাড়ি নিয়ে রাজিয়ার সামনে হাজির হয়। মেয়ের ছদ্মবেশে আবদুল্লাহকে দেখে স্বাভাবিকভাবেই চিনতে পারেনি রাজিয়া। নিশ্চিন্ত মনে গাড়িতে উঠে বসেন তিনি। রাজিয়া গাড়িতে ওঠার পরই ছদ্মবেশে ছেড়ে আসল মূর্তি ধরে আবদুল্লাহ। শুরু হয় মারধর। রাজিয়া যাতে চিত্কার করতে না পারেন, সেজন্য তাঁর মুখ চেপে ধরা হয়। গলাও টিপে ধরা হয়।


এইভাবেই বেশ কিছুটা রাস্তা পেরিয়ে যায়। তারপর ছোটো আলুন্দা গ্রামের কাছে গাড়ি আসতেই, কোনওভাবে নিজেকে ছাড়িয়ে চিত্কার শুরু করেন রাজিয়া। ধাক্কাতে থাকেন গাড়ির কাঁচ। এদৃশ্য চোখে পড়ে গ্রামবাসীদের। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা গাড়ির পিছু ধাওয়া করতে শুরু করেন। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর গাড়িটি ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় রাজিয়াকে। টেনেহিঁচড়ে বের করা হয় আবদুল্লাহকেও। তারপরই রাজিয়ার মুখ থেকে সব শোনার পর শুরু হয় গণধোলাই।


আরও পড়ুন, নিজের তৈরি শববাহী খাটিয়াতেই শেষযাত্রা আত্মঘাতী বৃদ্ধের


খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সিউড়ি থানার পুলিস। অভিযুক্ত আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে সিউড়ি থানার পুলিশ ।