চরমে পত্রযুদ্ধ! `রাগের চেয়ে বেশি দুঃখ পেয়েছি` রাজ্যপালকে ১৩ পাতার পাল্টা চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর
বলার অপেক্ষা রাখে না, দু-তরফের একেরপর এক টুইট এবং পত্রাঘাতে সামগ্রিকভাবে খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি। শনিবার সকালেই কোভিড মোকাবিলার পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ নিয়েও একাধিক মন্তব্য করেছেন রাজ্যাপাল।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সার্বিকভাবে জারি ধুন্ধমার পত্রযুদ্ধ। জগদীপ ধনখড়ের জোড়া চিঠির জবাবে এবার তাঁকে পালটা চিঠি পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৪টি পয়েন্টের ১৩ পাতার এই চিঠির ছত্রে ছত্রে রয়েছে ক্ষোভ। আক্রমণ, পালটা আক্রমণে কার্যত অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতির। করোনা আবহেই চরমে পৌঁছে গিয়েছে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। যা কার্যত নজিরবিহীন।
চিঠিতে কড়া ভাষায় রাজ্যপালের সমালোচনা করেছেন তিনি। বলেছেন রাজ্যপাল যে ভাষায় তাঁকে এবং তাঁর মন্ত্রীদের এবং তার প্রশাসনকে সমালোচনা করেছেন তা নজিরবিহীন। রাজ্যপালের ভাষা প্রয়োগ নিয়েও তীব্র প্রতিবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
চিঠিতে রাগের চেয়ে বেশি কষ্টই পেয়েছেন বলেই মন্তব্য নেত্রীর। ১৩ পাতার ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্যপালের এই ভাষা ব্যবহার একেবারেই কাম্য নয়, রাজ্যপালের কাছে সহযোগীতাই কামনা করি।" এই ভাষা অন্যান্য মন্ত্রীদের কাছেও যে অপমানজনক তাও চিঠিতে জানিয়েছেন মমতা।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর পত্রবোমা রাজভবনে পৌঁছনো মাত্রই টুইট করে তাঁকে পাল্টা উত্তরও দিয়ে ফেলেছেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির কোনও সারবত্তা নেই বলেই মত ধনখড়ের। অথচ টুইটে রাজ্যপাল কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই লিখেছেন, "সংঘাতের এটা হাতে হাত ধরেই পরিস্থিতি মোকাবিলার সময়।"
পাশাপাশি রাজ্যপাল এও জানিয়েছেন যে, আবারও রাজভবন থেকে চিঠি যাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। যদিও ওই ১৩ পাতার চিঠিতেই মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে, এরপর রাজ্যপালের আর কোনও চিঠিরই উত্তর দেবেন না তিনি, কারণ এটা চিঠি চালাচালির নয়, মানুষকে সাহায্য করার সময়।
বলার অপেক্ষা রাখে না, দু-তরফের একেরপর এক টুইট এবং পত্রাঘাতে সামগ্রিকভাবে খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি। শনিবার সকালেই কোভিড মোকাবিলার পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ নিয়েও একাধিক মন্তব্য করেছেন রাজ্যাপাল। করোনাভাইরাস নিয়ে রাজ্য তথ্য গোপন করছে বলে অভিযোগ তুলে একটি টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে সরাসরি তোপ দেগে রাজ্যপালের বক্তব্য, কোভিড-১৯ নিয়ে তথ্য ধাপাচাপা দেওয়ার বদলে মুখ্যমন্ত্রী স্বচ্ছ ভাবে সব কিছু প্রকাশ করুন।
২৩ ও ২৪ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রীকে ১৪ পাতার চিঠি পাঠান রাজ্যপাল। যে চিঠিরও প্রতি ছত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি দোষারোপ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর সাফ অভিযোগ ছিল, 'করোনা ঠেকাতে রাজ্য সরকার ব্যর্থ'। সেবার ১৪ পাতার চিঠি বোমাতে ৩৭ দফা অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীর ৫ পাতার চিঠির প্রসঙ্গ তুলে জবাব দিয়েছেন ধনখড়।