Jalpaiguri: ১৬ ঘণ্টার ইরেকশন! পুরুষাঙ্গে জটিল অস্ত্রোপচারে স্বস্তি যুবকের...
বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সুমন্ত্র মুখোপাধ্য়ায় বলেন, `এটি খুবই বিরল ঘটনা।` ওই যুবকের যে সমস্যা হয়েছিল, তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় `ইসচেমিক প্রায়াপিসম` (Ischemic priapism)।
প্রদ্যুৎ দাস: দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার ইরেকশন!পুরুষাঙ্গে জটিল অস্ত্রপ্রচারে যন্ত্রণাদায়ক সেই ইরেকশন থেকে শেষেমেশ স্বস্তি মিলল যুবকের। ঘটনাটি জলপাইগুড়ির। খুব সম্প্রতি ঘটা এই ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে জলপাইগুড়ি রাজবাড়ি সংলগ্ন এক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক এবং প্যারা মেডিক্যাল কর্মীদের মধ্যে। জানা গিয়েছে, ওই যুবকের প্রস্টেট গ্ল্যান্ডে সমস্যা ছিল। সেই সমস্যা মেটাতে গিয়েই বাঁধে আরেক বিপত্তি!
এই ঘটনায় ওই বেসরকারি হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক তুহিন শুভ্র মণ্ডল জানান, ওই যুবকের যে সমস্যা হয়েছিল, তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় 'ইসচেমিক প্রায়াপিসম' (Ischemic priapism)। যার ফলে কোনও রোগীর প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরেও যন্ত্রণাদায়ক ইরেকশন হতে পারে! কিন্তু এই যুবকের ক্ষেত্রে সেই সময়টা প্রায় ১৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছিল। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কী এই ইসচেমিক প্রায়াপিসম'? 'ইসচেমিক প্রায়াপিসম'কে লো-ফ্লো প্লায়াপিসমও বলা হয়ে থাকে। এর ফলে পুরুষাঙ্গে রক্ত সঞ্চালত ব্যাহত হয়। পুরুষাঙ্গে প্রবাহিত রক্ত সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে পারে না। পুরুষাঙ্গের শিরা দিয়ে রক্ত বাইরে বেরতে না পারায়, পুরুষাঙ্গের ভিতরেই আটকে পড়ে সেই রক্ত। একইসঙ্গে পুরুষাঙ্গের পেশি সঞ্চালন টিস্যুতেও সমস্যা দেখা দেয়।
চিকিৎসক তুহিন শুভ্র মণ্ডল জানিয়েছেন, এই যুবকের ক্ষেত্রে 'ইসচেমিক প্রায়াপিসম' ঘটে একটি ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে। তিনি বলেন, বিভিন্ন মেডিক্যাল নথি ও শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় যে, ওই যুবকের প্রস্টেট গ্ল্যান্ডে সমস্যা ছিল। যার নিরাময়ে ট্যামসলোসিন নামক একটি ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেই ওই যুবকের এমন অবস্থা হয়েছিল। যারফলে দীর্ঘক্ষণ ওই যুবকের পুরুষাঙ্গে রক্ত চলাচল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি জানান, ওই যুবক তাঁদের কাছে আসার পর দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুরুষাঙ্গে জটিল অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে রোগীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তবে ভবিষ্যতে ওই যুবকের প্রজনন ক্ষমতা সহ অন্যান্য কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ির ওই বেসরকারি হাসপাতালের অন্যতম বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সুমন্ত্র মুখোপাধ্য়ায় বলেন, 'এটি খুবই বিরল ঘটনা। প্রায় ১৬ ঘন্টা পর রোগী আমার সঙ্গে নিজের সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করেছিল। তারপরই দ্রুত আলোচনার পর আমরা পুরুষাঙ্গে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিই। এদিকে রোগী ডায়াবেটিক, তারউপর দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর পুরুষাঙ্গে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল বন্ধ ছিল, ফলে অপারেশনে অনেক ঝুঁকি ছিল। তবে শেষমেশ অপারেশন সফল হয়েছে। ভবিষ্যতে প্রজনন এবং যৌন ক্ষমতার উপর এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকলেও, রোগী এখন বিপন্মুক্ত। সমস্যা থেকে স্বস্তি পেয়েছেন।'