মনোরঞ্জন মিশ্র: তপসিলি উপজাতি তালিকাভূক্ত করার দাবিতে আন্দোলেন নেমেছে জঙ্গলমহলের কুড়মি সম্প্রদাযের মানুষজন। তাদের দাবি, রাজ্য সরকার তাদের ওই দাবির সমর্থনে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করুক। এনিয়ে তাঁরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় থামিয়েও তাঁর হাতে তাদের দাবিপত্র তুলে দিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা ঘোষণা করে দিয়েছেন, কুড়মি সম্প্রদায়ের কারও বাড়ির দেওয়ালে কোনও রাজনৈতিক দলকে ভোটের প্রচার করতে দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা অংশ নেবেন কিনা তা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-রাজ্যে বর্ষা সোমবারই!


পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ নেবে না, কোনও রাজনৈতিক মিটিংয়েও তারা নেই। তাহলে তাদের অবস্থান কী হবে? আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত মাহাতো আজ বলেন, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ব্লকস্তরের নেতারা বৈঠক বসছেন বান্দোয়ানে। আজ পাঁচটা থেকে ওই বৈঠক চলবে টানা ২৪ ঘণ্টা। নির্বাচন সম্পর্কে ওই বৈঠকে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা হবে। আমরা আগেই বলেছি, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের জন্য রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করে ততক্ষণ আমরা তৃণমূলকে সমর্থন করছি না। অন্যান্য রাজনৈতিক দলকেও আমাদের দেওয়ালে লিখতে দেব না। আজকের মিটিংয়ের পরই আমারা ঘোষণা করব পঞ্চায়েত নির্বাচনে আদিবাসী কুড়মি সমাজের ভূমিকা কী হবে। 


অজিত মাহাতো বলেন, ভোটে আমরা আদিবাসী কুড়মি সমাজ লড়াই করছি। তবে কোনও পার্টির প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না। এনিয়ে আজ স্দ্ধান্ত হয়ে যাবে। অন্যদিকে, ঘাঘর গ্যাং কুড়মি সামাজের উপরে হুমকির প্রতিবাদ করেনি। ওদেরকেও আমরা অনুরোধ করব, আমরা যেভাবে লড়াই করছি সেভাবেই করো।


একদিকে ঝাড়গ্রামে ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেছে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা প্রার্থী দেবে । অন্যদিকে আদিবাসী কুড়মি সমাজ নির্বাচনে সরাসরি অংশ নেবে না বলে ঘোষণা করেছে। ফলে নির্বাচনের আগেই কুড়মি সম্প্রদায়ের দুই সংগঠনের মধ্যে মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এনিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসল আদিবাসী কুড়মি সমাজ । বৈঠকে সিদ্ধান্ত কি হবে, তা জানা হবে সোমবার । জানালেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাতো।


প্রসঙ্গত, কুড়মি আন্দোলন জটিল করে তুলেছে কুড়মিদের সংরক্ষণের বিরোধিতাকারী আদিবাসীরা। গত ৮ জুন কুড়মিদের সংরক্ষণের বিরুদ্ধে বনধও পালন করেছে। রাজ্যের বহু জেলায় ওই বনধের প্রভাব পড়ে। বনধে কাটোয়া শহরের ভিতরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও, বন্ধ ছিল বাস পরিসেবা। কাটোয়ার জাজিগ্রাম মোড়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষরা রাস্তা অবরোধ করেন। কাটোয়া-বর্ধমান, কাটোয়া-বোলপুর, কাটোয়া-সিউড়ি সহ বিভিন্ন রুটে প্রত্যেক দিন প্রায় ১৪৪টির বেশি বাস যাতায়াত করে। সকাল থেকে দু-একটি বাস কাটোয়ায় ঢুকলেও, কাটোয়া থেকে কোনও বাস কোনও রুটে চলাচল করেনি বলেই জানা যাচ্ছে। প্রায় সব বাসই কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছে। ফলে কাজের জন্য বাইরে বেরিয়ে, বাস না পেয়ে ভোগান্তির শিকার নিত্যযাত্রীরা।


খড়গপুরেও একাধিক এলাকায় আদিবাসীদের বিক্ষোভ। সরকারি, বেসরকারি কোনও বাস চলছে না। সকাল থেকে বেলদা, নারায়ণগড়, দাঁতন, সবং, পিংলা, ডেবরা সহ বেশকিছু এলাকায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বনধকে সফল করতে ডেবরা-পটাশপুর রাজ্য সড়ক ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধ করেছেন আদিবাসীরা। এই নিয়ে ডেবরা এলাকায় আদিবাসীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ বিবাদেও জড়িয়ে পড়েন। দক্ষিণ ভারতের সাথে পূর্ববঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বাঁকুড়া-দুর্গাপুর ৯ নম্বর রাজ্য সড়কও অবরোধ করেছেন আদিবাসীরা। পশ্চিম বর্ধমান জেলার কোকওভেন থানা এলাকার শ্যামপুর মোড়ের কাছেও ৯ নম্বর রাজ্য সড়ক অবরোধ আদিবাসীদের। পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করেছেন আদিবাসীরা। পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা থানা এলাকার পানাগড়-মোড়গ্রাম ৯ নম্বর রাজ্য সড়কে এগারো মাইলেও অবরোধ আদিবাসীদের। ফলে চারদিক থেকে অবরোধে সবমিলিয়ে চূড়ান্ত দুর্ভোগে যাত্রীরা। 


বনধের সমর্থনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বর্ধমান-আরামবাগ রোডের উপর পলেমপুরেও অবরোধ শুরু হয়েছে। ফলে আরামবাগ,বাঁকুড়া ও দক্ষিণ দামোদর এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অবরোধ পশ্চিম বর্ধমান জেলার বোগরা চটিতে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে। জামুড়িয়ার চাকদোলা মোরে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কেও অবরোধ।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)