নিজস্ব প্রতিবেদন:  সাধারণ শয্যাকে আইসিইউ বেডে রূপান্তরিত করার আর্জি স্বাস্থ্য কমিশনের...আগামী কয়েক মাসের কথা ভেবে শঙ্কিত কমিশন। বেসরকারি হাসপাতাল গুলিকে আইসিইউ ভেন্টিলেটর যন্ত্রপাতি কিনতে সাহায্য বা ধার দিতে চায় সরকার। কিন্তু সেসব চালানোর চিকিৎসক, নার্স, কর্মী কোথায়??


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আগামী কালীপুজো দীপাবলি উৎসবের মরশুমে করোনা সংক্রমণ এবং আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থদের চিকিৎসা হবে তো ঠিকঠাক? শেষ পর্যন্ত সামাল দেওয়া যাবে তো? কোভিড চিকিৎসার রূপরেখা নিয়ে এমনই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশনে। আজ, শনিবার সেকথাই বলেছেন রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীম বন্দোপাধ্যায়।


সাধারণ পরিসংখ্যান অনুযায়ী করোনার আক্রান্তদের ৮০% সংক্রমিতকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে। অসুস্থ হয়ে পড়া বাকিদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হচ্ছে। ওই অসুস্থদের ৬% কে আইসিইউ-তে রেখে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ছে। রাজ্যে এখন দৈনিক গড় সংক্রমিত ৪ হাজারের কাছাকাছি। এর ৬ শতাংশ মানে ২৩৬ জন। প্রতিদিন এই সংখ্যক আইসিইউ বেডের প্রয়োজন হলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে পারে।
সে কারণে বেসরকারি হাসপাতালের অন্তত কিছু সাধারণ বেডকে আইসিইউ বেডে রূপান্তরিত করার আর্জি জানাল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন।


কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতী অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ধরে নেওয়া হচ্ছে লেভেল ওয়ান, লেভেল টু হাসপাতালে বেডের অভাব নেই। বেডের অভাব হচ্ছে লেভেল থ্রি পর্যায়ে। যেখানে গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগী রয়েছেন। বেসরকারী হাসপাতালগুলির সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি অন্তত কিছু জেনারেল বেডকে আইসিইউতে রূপান্তরিত করুন। দুর্গাপুজো পার হয়েছে। সামনে আরও উৎসব রয়েছে। প্রয়োজনে লোনে ভেন্টিলেটর কিনুন। আমাদের পক্ষ থেকে যা যা সাহায্য প্রয়োজন তা আমরা দেবো।"


রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। পুজোর আগে যেখানে প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছিলেন। এখন সেই সংখ্যাটাই চার হাজার ছুঁই ছুঁই। স্বাস্থ্য দফতরের শেষ বুলেটিনেও আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯৪২। সামনে কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, কার্তিক পুজোর মতো একাধিক উৎসব। তারপর চালু হয়ে যাচ্ছে লোকাল ট্রেন। আবার সামনে শীতকাল। সেকেন্ড ওয়েভ আসার সম্ভাবনা। সব কিছু মাথায় রেখেই উদ্বিগ্ন প্রশাসনও।
শুক্রবার নন্দনে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান।


শহরের তুলনায় জেলায় আইসিইউ, ভেন্টিলেশন, সুপারস্পেশালিটি ব্যবস্থার হাসপাতাল কম। বেডেরও অভাব রয়েছে সেখানে। জেলায় আচমকা গুরুতর কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে কি করে সামাল দেওয়া যাবে তা নিয়েই চিন্তিত স্বাস্থ্য কমিশন।


হাসপাতালে আইসিইউ শয্যার অভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য কমিশন। গত দু সপ্তাহ ধরে শহরের বড় বেসরকারি হাসপাতালে কার্যত কোনও শয্যা নেই। মন্ত্রী, আমলা, স্বাস্থ্যকর্তা থেকে সাধারণ মানুষ করোনা আক্রান্ত অসুস্থের জন্য একটা বেড জোগাড় করতে হিমশিম অবস্থা ba পারছেন না। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড ভাঙছে।  সরকারি-বেসরকারি দু’ক্ষেত্রেই সিসিইউ বেড, ভেন্টিলেশন সঙ্কট মারাত্মক আকার ধারণ করছে। কোনও সঙ্কটজনক রোগীকে আইসিইউ শয্যার অভাবে ভর্তি করা না গেলে কী উপায়ে ওই রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে?  ঠিক সময়ে আইসিইউ শয্যা ba ভেন্টিলেশন সাপোর্ট  অভাবে রোগী মৃত্যুর হার একধাক্কায় বাড়িয়ে দিতে পারে, আশঙ্কায় চিকিৎসকেরা।


নভেম্বর ডিসেম্বর ঋতু পরিবর্তন। আবহাওয়ার কারণে এসময়টায় ফুসফুসের সংক্রমণ, নিউমোনিয়া নিয়ে অনেকেই আইসিইউ আইটিইউ-তে থাকেন। এর মধ্যে করোনার চাপ এড়াতে কমিশন চাইছে বেসরকারী হাসপাতালগুলি অন্তত অস্থায়ীভাবে কিছু আইসিইউ তৈরি করুক।


একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারছেন না, আইসিইউ তৈরি করলেও তা চালানোর দক্ষ টেকনিশিয়ান, নার্স, চিকিৎসক কোথায় পাওয়া যাবে? রাজ্যে এমনিতেই দক্ষ চিকিৎসক নার্সের অভাব। চার শিফটে একটি আইসিইউ চালাতে যে পরিমাণ ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান লাগবে তা কীভাবে আসবে তা ভেবে পাচ্ছেন না শহরের বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


মেডিকার এক কর্তা বলেন, "সরকারি জায়গায় পড়ে থাকা  ভেন্টিলেটর আইসিইউ দিয়ে কিংবা সরকারী উদ্যোগে সেগুলি ধার হিসেবে বেসরকারি হাসপাতালে দেওয়া হবে বলে কথা দিয়েছেন। সরকারি স্তরে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমাদের পরিকাঠামোতেও বেড জায়গায় সীমিত। লোকবল আর বাড়াবো কিভাবে? "


পিয়ারলেস হাসপাতালের কর্তা সুদীপ্ত ভট্টাচার্য স্বাস্থ্য কমিশনের প্রস্তাবে সহমত। বলেন, "কমিশনের বক্তব্য শুনেছি। এটাও মাথায় রাখতে হবে একটি ১০ বেডের আইটিইউতে যদি প্রত্যেকটিতে রোগী থাকে, তা চার শিফটে চালাতে দক্ষ নার্স, চিকিৎসকের প্রয়োজন। আজ বললেই কাল দক্ষ চিকিৎসক যোগাড় করা সম্ভব নয়। ফলে সবটাই চিন্তার। "