নিজস্ব প্রতিবেদন- থমথমে পরিবেশ। যেন ছাই চাপা আগুন। শনিবার কোচবিহার জেলার শীতলকুচির আমতলি গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। ঘটনার জেরে তীব্র ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রাম। ময়নাতদন্তের পর রবিবার নিহতদের দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। সম্পন্ন হয়েছে শেষকৃত্যও। রবিবার নিহতদের পরিবারের সঙ্গে শিলিগুড়ি থেকে ভিডিও কলে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। রাজনৈতিক নেতাদের আগামী ৩ দিন কোচবিহার জেলা সফরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কমিশন। চতুর্থ দিন অর্থাৎ বুধবার যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন - WB Assembly Election 2021: ‘নন্দীগ্রামের মতই এও এক গণহত্যা’, ঝাঁঝালো আক্রমণ মমতার


শনিবার মাথাভাঙার জোড়পাটকায় আমতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বুথে তখন ভোট চলছিল। হঠাৎই খবর পাওয়া যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে এলাকার ৪ বাসিন্দার। বুলেটের আঘাতে একজনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। বাকি তিন জনকে গুরুতর অবস্থায় গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বাকি ৩ জন। এলাকার ঐ ৪ বাসিন্দা মণিরুল জামান (২৮), হামিদুল মিঞা (৩০), ছামিউল হক(২০) এবং নুর আলম মিঞা (২০)। রবিবার দুপুরে তাঁদের দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। আমতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মৃতদের শেষ শ্রদ্ধা জানান গ্রামের বাসিন্দারা। কালো পতাকা তোলা। বিকালে দেহগুলো নিয়ে যাওয়া হয় সমাধিস্থ করার জন্য।


জোড়পাটকা এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া। শনিবার ৪ জনের হত্যা দেখার পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রাম। গ্রামে সকাল থেকেই বাহিনী নেই বটে, তবে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে পুলিশ। নিহতদের বেশিরভাগেরই বয়স ২০ থেকে ৩০-এর মধ্যে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মনিরুল সিকিমে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ভোট দেওয়ার জন্যই গ্রামে এসেছিলেন। হামিদুলও মাথাভাঙায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ছামিউল ছিলেন মাথাভাঙা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। মুখ্যমন্ত্রীর ফোনের উত্তরে নিহত মনিরুলের মামা ফোনে জানান,  তাঁর ভাগ্নে মনিরুল বাইরে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। ভোট দিতে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনী মনিরুল ও আরও ৩ জনকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। তাদের বাড়িতে বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান  রয়েছে। শিশু সন্তানের বয়স মাত্র ৪৫ দিন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, তাঁরা বিচার চান। হত্যাকারীদের শাস্তি চান। গুলিতে মৃত হামিদুলের দাদা মুখ্যমন্ত্রীকে ফোনে জানান, তাঁর ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করত মাথাভাঙায়। হামিদুলের ৩ বছরের মেয়ে আছে। স্ত্রী আবারও গর্ভবতী। গোটা ঘটনায় দেশের আইনকানুনের দিকেই আঙুল তুলেছেন মৃতদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজন। দোষীদের শাস্তি চেয়ে মমতার কাছে দরবার তাঁদের।