জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বীরভূম লোকসভায় ত্রিমুখী লড়াই ৷ একদিকে, তিনবারের জয়ী এই লোকসভা কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদ তারকা-সাংসদ শতাব্দী রায়। অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য। যার হয়ে প্রচার করেছেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী ও যোগী আদিত্যনাথ। মাঝে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মিলটন রসিদ। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র বঙ্গ রাজনীতিতে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের নিরিখে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন বীরভূমের মাটি থেকে দূরে রয়েছেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রতের অভাব কী প্রভাব ফেলবে বীরভূমের ভোটে। এ বারও কী জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে চতুর্থ বারের জন্য সাংসদ হবেন শতাব্দী রায়। বীরভূম আসনে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে চতুর্থবার জয়ী শতাব্দী রায়। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪: বীরভূম


দল- প্রার্থী - প্রাপ্ত ভোট 
তৃণমূল- শতাব্দী রায়- জয়ী
বিজেপি- দেবতনু ভট্টাচার্য- পারজিত
কংগ্রেস- মিলটন রশিদ- তৃতীয় স্থানে 


কবে ভোট 


চতুর্থ দফায় ১৩ মে ভোট হয় বীরভূমে। এই লোকসভা এলাকায় প্রায় ২২, ৪৭,০৮৯ জনের বাস। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় ৩৫ শতাংশ সংখ্যালঘু, ৬ শতাংশ আদিবাসী মানুষের বাস। যার মধ্যে ৮৫.৭৭ শতাংশ গ্রামে ও ১৪.২৩ শতাংশ মানুষ শহরে বাস করেন। এই কেন্দ্রের মোট ভোটার ১৮ লক্ষ ৫৭ হাজার ২২ জন । ১৯৪৩ টি বুথে হয়েছে ভোটগ্রহণ। তার মধ্যে ৬৪০ টি স্পর্শকাতর বুথ। নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয় ১৩১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ছিল ৬,১৭২ জন রাজ্য পুলিসের কর্মী। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে ৭ বিধানসভা- নলহাটি, মুরারই, হাসন, রামপুরহাট, সাঁইথিয়া, সিউড়ি, দুবরাজপুর। 


আসনের ইতিহাস 


একদা বামদুর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র। প্রথম লোকসভা নির্বাচন ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বীরভূম কেন্দ্রটি ছিল কংগ্রেসের দখলে। ১৯৭১ সালের লোকসভা ভোটে ক্ষমতা দখল করে সিপিএম। ১৯৬২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত এই আসনটি সংরক্ষিত থাকলেও ২০০৯ সালের পর থেকে তা সাধারণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ১৯৫২ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে জাতীয় কংগ্রেসের অরুণ কুমার চন্দ্র জয় লাভ করেন। ১৯৫৭ সালের কংগ্রেসের কমল কৃষ্ণ সেন এবং  এস কে দাস ১৯৬৭ সালের লোকসভা নির্বাচনে জাতীয় কংগ্রেসের থেকে জয়ী হন। এরপর ১৯৭১ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত গদাধর সাহা সিপিআইএমের পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রে সাংসদ নির্বাচিত হন।  ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় সিপিএমের রামচন্দ্র ডোম প্রত্যেকটি লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের আগেই অর্থাৎ ২০০৯ সালে তৃণমূল বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বে বাম-গড় দখল করেন অভিনেত্রী শতাব্দী রায়। তারপর ২০১৪ ও ২০১৯ সালেও এই কেন্দ্রে ঘাসফুলই ফোটে ৷ এর পর গত দেড় দশক ধরে জেলায় দাপট দেখিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর ২০১৩ সাল নাগাদ উত্থান হয় তাঁর। এর পর আর বিরোধীরা কবি গুরুর জেলায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। ২০০৯ সালে সিপিএমের ব্রজ মুখোপাধ্যায়কে ৬১ হাজার ৬১১ ভোটে হারিয়েছিলেন শতাব্দী রায়। ২০১৪ সালেও ৬৭ হাজার ১২০ ভোটে জিতেছিলেন তিনি। 


২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল


২০১৯ সালে এই কেন্দ্রে বিশাল মার্জিনে জেতেন শতাব্দী। ৮৯ হাজার ৭১১ ভোটে তিনি জেতেন।  অন্যদিকে বিজেপির তরফে প্রার্থী হয়েছিলেন দুধকুমার মণ্ডল। ধোপে টিঁকতে পারেননি বিজেপির দুধকুমার। শতাব্দীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৬ লাক ৫৪ হাডার ৭৭। অন্যদিকে দুধকুমার মণ্ডলের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৬৫ হাজার ১৫৩। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেবার বিজেপির ঝুলিতে ভোট বেড়েছিল ২০ শতাংশ। এর পর বীরভূমকে পাখির চোখ করে ঝাঁপিয়েছিল বিজেপি। এবারে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটে জোটের প্রার্থী থাবা বসালে সংকটে পড়তে পারে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শতাব্দী রায়। তাতে আখেরে লাভবান হতে পারে বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য। 



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)