রাজ্যের বিধানসভাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার ঘাড়ে শ্বাস ফেলছে বিজেপি, বলছে পাটিগণিতের অঙ্ক
১২৯টি বিধানসভা আসনে এগিয়ে গেরুয়া শিবির।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের জন্য সতর্কবার্তা দিয়ে গেল লোকসভা ভোট। রাজ্যে ৪২-এ ৪২টি আসন জয়ের বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিরোধীশূন্য লোকসভা করতে পারলেন না তৃণমূল নেত্রী। বরং বড়বাজারের গণ্ডি পেরিয়ে বাংলায় প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এল ভারতীয় জনতা পার্টি। এখনই বিধানসভা সভা ভোট হলে ১২৯টি আসনে এগিয়ে থাকবে নরেন্দ্র মোদীর দল।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ১৮টি আসন জেতার থেকেও চমকপ্রদ তথ্য হল ১২৯টি বিধানসভা আসনে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। আর তৃণমূল এগিয়ে ১৫৮টি আসনে। ২৯৪ আসনের বিধানসভায় ১৪৪টি পেলেই সরকার গড়ার চাবিকাটি পেয়ে যাবে বিজেপি। অর্থাত্ পাটিগণিতের সহজ অঙ্কে বাকি আরও ১৫টি আসন। বেশ কয়েকটি আসনে ব্যবধান এতটাই কম যে বাম-কংগ্রেস ভোট আরও কমলে বিজেপির জয়জয়কার নিশ্চিত।
ভোট শতাংশেও চমকে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। ৪৩.২৮ শতাংশ পেয়েছে তৃণমূল। ৪০.২৫ শতাংশ পেয়ে ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে বিজেপি। মাঝখান থেকে প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে বাম-কংগ্রেস। সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ৬.২৮%। ৫.৬১% ভোট পেয়েছে কংগ্রেস। ভোটের হারে স্পষ্ট, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপিকেই বিকল্প ভাবছেন বাংলার মানুষ। বাম ভোটই গিয়েছে রামে। ঘটনা হল, এমন ইঙ্গিত উপনির্বাচনগুলিতেই মিলেছিল।
এটাও আবার সত্য পাটিগণিতের অঙ্কে ভোটের হিসেব সবসময় মেলে না। বাংলায় ভোটে জিততে দরকার সংগঠন ও পোক্ত নেতৃত্ব। তবে বিজেপি হাতে আরও ২ বছর সময় রয়েছে। রাজনীতিও স্বাভাবিক নিয়মে বাঁক বদল করবে। অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটেও যেতে পারে। বাংলাতেই তো একজন সাংসদের দল থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক পাঁচবছর পর ২০০৯ সালে নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর তৃণমূলকে পৌঁছে দিয়েছিল ১৯-এ। বিজেপি যেমন সংগঠন গোছানোর জন্য ২ বছর সময় পাবে, ঠিক তেমনই তৃণমূলের কাছেও রয়েছে ভুল শোধারানোর সুযোগ। অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। আর শুধু ঘুরে দাঁড়ানোই নয়, প্রবলভাবে ফিরে আসতে পারেন তৃণমূল নেত্রী।
কেন্দ্রে মোদী সরকারের কাজের উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করছে। নরেন্দ্র মোদীর উপরে ভরসা করে ভোট দিয়েছেন মানুষ। দিল্লিতে তাঁর কাজের সঙ্গে বাংলায় বিজেপির ভাগ্য অনেকখানি নির্ভর করছে। ফলে এখনই আগাম ভবিষ্যতবাণী করা মুর্খামি। ২ বছরে গঙ্গা দিয়ে বয়ে যাবে অনেক জল। এটা বলাই বাহুল্য, বিজেপি আর বাংলায় উত্তর ভারতের দল নয়। তারাই এখন তৃণমূলের প্রধান চ্যালেঞ্জার।
আরও পড়ুন- ঝড় আটকাতে গিয়ে মোদী সুনামিকে ডেকে আনলেন বিরোধী নেতানেত্রীরা