নিজস্ব প্রতিবেদন : বক্সে তারস্বরে বাজছে 'লুঙ্গি ড্যান্স'। আর তার সঙ্গে হাত নেড়ে, কোমর দুলিয়ে নাচছেন অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা। শিক্ষক দিবসে ঠিক এমনটাই ঘটেছে কবিগুরুর বিশ্বভারতীতে। আর বিশ্বভারতীতে হিন্দি গানের সঙ্গে অধ্যক্ষ-অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের নাচের এই ভিডিও সামনে আসতেই বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, এঘটনা একেবারেই সমর্থন যোগ্য নয়। আবার কেউ বলছেন, এতে দোষের কী আছে? সবমিলিয়ে বিশ্বভারতীকে ঘিরে নতুন করে মাথাচাড়া দিল বিতর্ক। তবে এসব বিতর্কের মাঝে মুখে কুলুপ এঁটেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন, বিপর্যয় মোকাবিলায় মন্ত্রিগোষ্ঠী গড়লেন মমতা, নেতৃত্বে থাকছেন পার্থ


ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সঙ্গীতভবনের মূল মঞ্চে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান চলছে।  অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের মধ্যে মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা চলছে। আর ব্যাকগ্রাউন্ডে তারস্বরে বাজছে 'লুঙ্গি ড্যান্স', 'লেড়কি বিউটিফুল'-এর মতো বহুল জনপ্রিয় হিন্দি গান (কারোও কারোও মতে চটুল)। সেই গানের সঙ্গেই দৌড়ে চেয়ারে নিজের নিজের জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা। তবে শুধু দৌড়চ্ছেন না। গানের সঙ্গে রীতিমতো হাত নেড়ে নাচের অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যায় তাঁদের। হাততালি দিতে দেখা যায় অধ্যক্ষ নিখিলেশ চৌধুরী সহ অন্যান্য অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের। কোমর দুলিয়েও নাচের তালে তাল দিতে দেখা যায় তাঁদের। আর এতেই উসকে উঠেছে বিতর্ক।


প্রকাশ্যে সঙ্গীতভবনের মঞ্চে এভাবে হিন্দি গানের সঙ্গে নাচে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। শান্তিনিকেতনের সংস্কৃতিতে এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় বলেই দাবি করেছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে একদিকে যেমন রয়েছেন রবীন্দ্র অনুরাগীরা, তেমনই রয়েছেন প্রাক্তন ও বর্তমান আশ্রমিকরা। বিশিষ্ট লেখিকা নবনীতা দেবসেন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, "এমন ঘটনা যে কোনওদিন বিশ্বভারতীতে সম্ভব, তা তিনি বিশ্বাস-ই করতে পারছেন না।" আরও বলেন, এঘটনা রবি ঠাকুরের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত শান্তিনিকেতন-বিশ্বভারতীর পক্ষে অত্যন্ত 'লজ্জার, অপমানের, অস্বস্তির'। নিজেকে 'মর্মামত, লজ্জিত' বলে দাবি করেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্রী এই বিশিষ্ট লেখিকা।


আরও পড়ুন, সিদ্ধিদাতার বরেই উনিশে মোক্ষলাভের আশা


আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুরেরও সাফ দাবি, এঘটনা কখনওই সমর্থনযোগ্য নয়। রুচিসম্মত নয়। কবিগুরুর শান্তিনিকেতনে এরকম ঘটনা ঘটে, তবে তার থেকে দুঃখের আর কিছু হয় না। শিক্ষক দিবসের এই ভিডিও ইতিমধ্যেই শান্তিনিকেতন জুড়়ে ভাইরাল হয়ে গেছে। নিন্দার ঝড়। কটাক্ষের তির বিশ্বভারতীর দিকে। তবে এর ভিন্ন মতও রয়েছে।



গায়ক শিলাজিতের সাফ বক্তব্য, এরমধ্যে তিনি অন্যায়ের কিছু দেখছেন না। এতে এত বিতর্কেরও কিছু নেই। রবি ঠাকুরের জায়গায় শুধু রবি ঠাকুরেরই গান চলবে এমনটা নয়। এমনটা কোথাও বলা নেই। তাঁর স্পষ্ট কথা, "গান নিয়ে এভাবে বিশ্বভারতীতে পুলিসিং করা অহেতুক।"


আরও পড়ুন, ডিএ মামলায় রাজ্য সরকারের হলফনামা তলব স্যাটের


কিন্তু, বিশ্বভারতীর এক প্রাক্তনী জানিয়েছেন, বিশ্বভারতীতে এভাবে প্রকাশ্যে হিন্দি গানবাজনা-নাচ কখনওই অনুমোদিত নয়। অনেকসময় ডিপার্টমেন্টের মধ্যে হয়ে থাকে। তবে সব ডিপার্টমেন্টও এই বিষয়কে অনুমতি দেয় না। অনুমতির বিষয়টি নির্ভর করে সেই ডিপার্টমেন্টের উপরই। শিক্ষক দিবসের আনন্দে যতই কেউ মশগুল হোক না কেন, এধরনের ঘটনা বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যের পরিপন্থী।