রণজয় সিংহ: মাত্র ৪ মাস কাজ করার পর শিক্ষকতার চাকরি চলে গিয়েছিল মালদহের ইংরেজবাজারের মিরাজ শেখের। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশে সেই চাকরি ফিরে পেয়েছেন মালদহের ওই তরুণ। কিন্তু বিগত কয়েক মাস তাঁকে যে মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে তা কাউকে বোঝাতে পারছে না মিরাজ। জি ২৪ ঘণ্টাকে তিনি বলেন, পাওয়া চাকরি চলে গিয়েছিল। সেই চাকরি ফিরে পেয়ে ভালো লাগছে। ২০২১ সালে ইন্টারভিউ হয়েছিল। ডিসেম্বরে চাকরি হয়। পরের বছর ৩১ মার্চ আমার চাকরি চলে যায়। আমাকে ডিপিএসসি থেকে জানানো হয়, ওঁদের কাছে নোটিফিকেশন ছিল বিএড দিয়ে যায়া প্রাইমারিতে চাকরি পাবেন তাদের  গ্রাজুয়েশনটা লাগবে। এনসিটির নিয়ম অনুযায়ী ৫০ শতাংশ মার্কস চাই। ওবিসি হলে মার্কস কমবে। আমার ক্ষেত্রে অনার্সের মার্কসের এগ্রিগেটে ঠিক মার্কস ছিল। কিন্তু শুধু অনার্স ধরলে মার্কস কম ছিল। এনিয়ে পর্ষদে গিয়েছি। কাগজপত্র পাঠিয়েছি। কিন্তু আমার কোনও কথ শোনা হয়নি। শেষপর্যন্ত চাকরি চলে গেল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-হাসপাতালে যাওয়ার পথ দুর্গম, রাস্তাতেই রক্তক্ষরণ মায়ের, বাঁচল না যমজ সন্তানরাও


এই কমাসের যন্ত্রণার কথা বলতে গিয়ে মিরাজ বলেন, গোটা ঘটনায় আমার সম্মানহানি হয়েছে। চাকরি হঠাত্ তা চলে যাওয়া খুবই মারাত্মক। এখন যা চলছে তাতে বলা হচ্ছে টাকা দিয়ে চাকরি কেনা হচ্ছে। অনেকের চাকরি চলেও গিয়েছে। লোকজন মনে করেছিল আমিও হয়তো টাকা পয়সা দিয়েই চাকরি পেয়েছিলাম। সবাইকে তো বোঝানো যায় না যে আমার গ্রাজুয়েশেনর মার্কস নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। এরকম সমস্যায় যারা ভুগেছে তাদের জন্য আমার ক্ষেত্রে জাজমেন্টটা কাজে আসবে।


এদিকে, মিরাজের মামলার রায় দিতে গিয়ে মঙ্লবার বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়। ওই মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যকে টাকা দেয়নি। তাই হয়তো মামলাকারীর চাকরি বাতিল হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ এমন একটা রাজ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে টাকা না দিলে চাকরি হয় না। চার মাস চাকরি করার পর একজনের চাকরি বাতিল হয় কীভাবে? 


উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ইন্টারভিউ এর জন্য বিজ্ঞপ্তি বের হয়। ডাক পান মিরাজ। ২০২১ সালে ১১ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ এলাকার ৬৭ নম্বর পুথীয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিতে যোগদান করেন তিনি। কিন্তু ৩১ জানুয়ারি তাঁর বেতন বন্ধ হয়ে যায়। এরপরে মুর্শিদাবাদ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে যোগাযোগ করা শুরু করেন মিরাজ। দেখা করেন খোদ পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে। কিন্তু লিখিতভাবে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তার আর চাকরি নেই। এরপরই মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন মিরাজ। মুর্শিদাবাদ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ এবং রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। সেই মামলার রায় মিরাজকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর জন্য আদালতকে ধন্যবাদ দিলেন মিরাজ।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)