একজন অ্যাকসিডেন্ট করছে, অন্যজনকে থানায় সারেন্ডার করাচ্ছে, জাগুয়ারকাণ্ডে মমতা
জাগুয়ার গাড়ি দুর্ঘটনাকাণ্ডে এদিন পুলিসের তদন্ত ঘুরে গিয়েছে একশো আশি ডিগ্রি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: জাগুয়ার গাড়ি দুর্ঘটনা-কাণ্ডে নাম না করে কি পুলিসের ভূমিকায় উষ্মাপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন দিঘায় জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বলেন,'অপরাধীকে রেহাই দিয়ে অন্য কাউকে আত্মসমর্পণ করানো বেআইনি।'
জাগুয়ার গাড়ি দুর্ঘটনাকাণ্ডে এদিন পুলিসের তদন্ত ঘুরে গিয়েছে একশো আশি ডিগ্রি। দুর্ঘটনার রাতে তীব্র গতিতে গাড়ি চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল আরসালান পারভেজকে। যাঁকে নিয়ে পাঁচদিন ধরে তোলপাড় শহর কলকাতা,সেই আরসালান পারভেজ দুর্ঘটনার রাতে নাকি গাড়িতেই ছিলেন না। সেরাতে স্টিয়ারিং ছিল রাঘিব পারভেজের হাতে। পুলিসের দাবি, রাঘিব পারভেজ সম্পর্কে আরসালানের বড় দাদা। শুক্রবার রাত ১১.৩০ মিনিটে বাড়ি থেকে গাড়ি বের করেন রাঘিব। বাড়ির সিসি ক্যামেরায় ফুটেজে রাঘিবকে গাড়িতে উঠতে দেখা গিয়েছে। দুর্ঘটনার পর গাড়ি থেকে নেমে যান রাঘিব, যোগাযোগ করেন মামা মহম্মদ হামজার সঙ্গে। হামজার সাহায্যে পরের দিনই দুবাই পালিয়ে যান রাঘিব। বুধবার শহরে ফেরার পর বেনিয়াপুকুর থেকে রাঘিবকে গ্রেফতার করে পুলিস। রাঘিবকে সাহায্য করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে মহম্মদ হামজাকেও।
আচমকা এমন নাটকীয় মোড় বদলে উঠছে নানা প্রশ্ন। আর তা নিয়ে নাম না করেই কি পুলিসের ভূমিকায় অসন্তোষপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঠিক কী বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'রাফ ড্রাইভিং টলারেট করব না। টাকা পয়সা নেওয়া যাবে না। একবার সতর্ক করুন। তারপর ব্যবস্থা নিন। এই তো দেখছি একজন অ্যাকসিডেন্ট করছে আর একজনকে থানায় সারেন্ডার করিয়ে দিচ্ছে। এসব তো নানা চালাকি চলে।'
জাগুয়ার গাড়ি দুর্ঘটনার তদন্তে যে প্রশ্ন উঠছে-
প্রশ্ন ১
৫দিন ধরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে পুলিস, সেরাতে জাগুয়ার ৭ বার সিগন্যাল ব্রেক করে তার প্রমাণ মিলল, কিন্তু কে স্টিয়ারিংয়ে তা বোঝা গেল না?
প্রশ্ন ২
আরসালান যদি সেই রাতে গাড়িতেই না থাকেন, তবে পরিবারের কথায় কেন পরের দিন কেন আত্মসমর্পণ করতে গেলেন?
প্রশ্ন ৩
দুর্ঘটনার পর রাঘিব মামার সাহায্যে দুবাইতে গা ঢাকা দিল, পরিবার কি কিছুই জানত না? জেনে বুঝে কেন আরসালানকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হল?
প্রশ্ন ৪
পুলিসের দাবি, সেরাতে সিসি ক্যামেরা ফুটেজে গাড়ি থেকে একজনকে পালাতে দেখা যায়, তারসঙ্গে রাঘিবের চেহারার মিল আছে। আরসালানের নয়। এটা বুঝতে ৫দিন সময় কেন লেগে গেল গোয়েন্দাদের?
প্রশ্ন অনেক..উত্তর নেই। যেমন উত্তর নেই, পরিবার কেন রাঘিবকে দোষী জেনেও, আরসালানকে আত্মসমর্পণ করতে বলল? নেপথ্যে কি বড় কোনও ষড়যন্ত্র কাজ করছে? আপাতত সেটা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন- সময় বড়ই নিষ্ঠুর! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদম্বরমের জমানায় অমিতকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই