নিজস্ব প্রতিবেদন : বাড়িতে আসছে নতুন অতিথি। গর্ভস্থ সন্তানকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধছিলেন দম্পতি। কিন্তু তাল কাটল প্রসবের মাসেই। জানা গেল, বছর চল্লিশের গৌরী দেবী নাকি গর্ভবতী-ই নন! এদিকে সরকারের 'মা ও শিশু সুরক্ষা যোজনা'র আওতায় তাঁর ওষুধ, ইনজেকশন সবই চলেছে! এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মেদিনীপুরের চাঁইপুর গ্রামে। গোটা ঘটনায় প্রশ্নের মুখে স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত চাঁইপুর গ্রামের বাসিন্দা গৌরী নায়েক। চলতি বছর মে মাসের শেষে পেটে যন্ত্রণা নিয়ে গ্রামীণ সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। মাস কয়েক আগেই ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গৌরী নায়েকের। ফলে রোগী মা হতে চলেছেন এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী থেকে আশা দিদিরা। এখন প্রথমবার প্রেগন্যান্সি টেস্ট নেগেটিভ আসায় দ্বিতীয়বার ফের গৌরী নায়েককে বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করানোর পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। দ্বিতীয় টেস্টের রিপোর্টে দেখা যায় গৌরী নায়েক 'গর্ভবতী'। সেইমতো সরকারের 'মা ও শিশু সুরক্ষা যোজনা'য় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় বছর ৪০-এর গৌরীদেবীর। 



তারপর থেকে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন থেকে পথ্য সবই চলছিল নিয়মমতো। মালকুড়ি সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র ও চাঁদড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়মিত চেকআপও করাতেন ওই গৃহবধূ। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, অক্টোবর মাসে গৌরী নায়েকের প্রসব হবে। সেইমতো শেষ চেকআপের আগে গৌরী নায়েককে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এরপর ওই গৃহবধূকে নিয়ে পরিবারের লোকেরা চেকআপের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও নিয়ে যান। সেখানেও চিকিৎসকেরা ইউএসজি সহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় টেস্ট লিখে দেন। এরপর অক্টোবর মাসের শুরুতে ঝাড়গ্রামে ইউএসজি করেন গৌরী দেবী। 


সেই ইউএসজি রিপোর্ট দেখেই চক্ষু চড়কগাছ চিকিত্সকদের। রিপোর্টে দেখা যায়, গর্ভবতী নয় গৌরী নায়েক। প্রসবের ঠিক আগে ৯ অক্টোবর দেপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ওই মহিলাকে জানান, তিনি গর্ভবতী নন! চিকিৎসকদের কথা শুনে রীতিমতো আকাশ থেকে পড়েন গৃহবধূ। প্রশ্ন ওঠে, যদি তিনি গর্ভবতী  না-ই হয়ে থাকেন, তাহলে এত ওষুধ-ইনজেকশন কেন দেওয়া হল? এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। 



যদিও নিজেদের দায় এড়িয়ে ওই গৃহবধূর ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছেন মালকুড়ি সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ইনচার্জ অঞ্জলি সেনাপতি। তাঁর দাবি, একাধিকবার বলার পরেও সময়মতো আলট্রাসনোগ্রাফি করেননি গৌরীদেবী। একই দাবি এলাকার আশা কর্মী স্নেহলতা মুর্মু। কিন্তু আসলে এই ঘটনায় গাফিলতি কার? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবন হাঁসদার দাবি, বিভিন্ন কারণেই এ ধরনের ভুল ঘটে থাকে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কারও কর্তব্যে গাফিলতি আছে কিনা, দফতর তা খতিয়ে দেখবে। 


আরও পড়ুন, Darjeeling: নতুন করে ধসে বন্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক, জল-বিদ্যুৎহীন পাহাড়ে আটকে পর্যটকরা, ভাঙন নদীবাধেও


স্বাভাবিকভাবেই এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো প্রশ্ন উঠছে সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে। রাজ্য সরকার মা ও শিশু সুরক্ষার বিষয়ে এতটা সচেতন হলেও, এ ক্ষেত্রে আদৌ কি নিজেদের কর্তব্য ঠিকমতো পালন করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা? উঠছে সেই প্রশ্নও। প্রসঙ্গত, এর আগে গৌরীদেবীর ২ কন্যাসন্তান রয়েছে।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)