চম্পক দত্ত: হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন বাবা। বাবার মৃত্যুর পর মৃত বাবার পরিবর্তে জীবিত ছেলের নামে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ঘটনায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ আনলেন মৃতের ছেলে। বাবার ডেথ সার্টিফিকেট ছেলের নামে ইস্যু হওয়ায় বিভিন্ন কাজে সমস্যার সম্মুখীন মৃতের পরিবার। ঘটনায় জেলা জুড়েপড়ে গিয়েছে শোরগোল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-বাবার অসুস্থতা-মৃত্যু, দীর্ঘ আইনি লড়াই লড়ে ২৭ বছর পর ছেলের চাকরি কলকাতা পুরসভায়!


পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কমরগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা উত্তম নন্দী, বয়স ৫৪। পেশায় কৃষক পরিবার উত্তম নন্দীর পরিবার বলতে স্ত্রী ও ২ ছেলে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৭ নভেম্বর দুপুর নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বিষপান করায়। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন ওইদিনই রাতে মৃত্যু হয় উত্তম নন্দীর।



মৃত উত্তম নন্দীর ছোটো ছেলে বলরাম নন্দী। তিনি জানান,বাবা মারা যাওয়ার পর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বাবার ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। আবেদনের ভিত্তিতে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি তার মোবাইলে মেসেজ আসে এবং একটি লিঙ্কও তার সাথে দেওয়া হয় যে তার বাবার ডেথ সার্টিফিকেট সাবমিট হয়ে গেছে। মেসেজের সাথে দেওয়া লিঙ্ক থেকে বাবার ডেথ সার্টিফিকেট ডাউনলোড করা হয়। মাকে নিয়ে সেই সার্টিফিকেট দেখিয়ে গ্যাস অফিসে গ্যাসের বই সংশোধন ও  লিঙ্ক করাতে গিয়ে জানতে পারেন বাবার যে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে তা ভুল। মৃত উত্তম নন্দীর জায়গায় তার ছোটো ছেলে বলরাম নন্দীর নামে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। মৃতের নামের জায়গায় জীবিত ছেলে বলরাম নন্দীর নাম উল্লেখ থাকায় তা জানতে পেরে হকচকিয়ে যায় ছেলে বলরাম।


মৃতের ছেলে বলরাম নন্দী জানায়, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের গাফিলতির জেরেই এত বড়ো ভুল হয়েছে। আর এর জেরে তার বাবার নামে থাকে গ্যাসের বই মায়ের নামে সংশোধন থেকে আরও অন্যান্য কাজে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ঘটনা জানাজানি হতেই পড়ে গিয়েছে শোরগোল। জেলা সদর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মতো একটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের এমন গাফিলতিতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মৃতের ছেলের দাবি,এই ভুল সংশোধন করে যাতে বাবার ডেথ সার্টিফিকেট হাতে পায় তার ব্যবস্থা করুক মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।


এই বিষয় নিয়ে হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত কুমার রাউত বলেন, বিষয়টা আমরা দেখে নিচ্ছি। কোনও টেকনিক্যাল প্রবলেম হয়ে থাকতে পারে। আমরা সেটা চেক করে দেখে নেব। ওটা কারেকশন হয়ে যাবে।


পুরো বিষয় নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শংকর গুছাইত বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থায় যা দুরাবস্থা মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার প্রতিচ্ছবি বারবার দেখা যাচ্ছে। এখানকার হাসপাতাল সুপার এবং সিএমওএইচ কে বলব যে হাসপাতালগুলোকে যেভাবে ডাস্টবিনে পরিণত করছেন, জীবন নিয়ে ছেলে খেলা করছেন এবং মানুষকে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু পর্যন্ত ঠেলে দিচ্ছেন আর আজকে সার্টিফিকেট ভুল দেওয়া প্রমাণ করে আপনারা কাজের প্রতি কতটা সচেতন।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)