নিজস্ব প্রতিবেদন : নিমতায় যুবকের রহস্যমৃত্যুতে জোরালো হচ্ছে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব। নবমীর রাতে বান্ধবীকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে ফেরার সময়ই মৃত্যু হয় দেবাঞ্জন দাসের। পুলিস দাবি করেছে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দেবাঞ্জনের। যদিও দেবাঞ্জনের পরিবার সেই দাবি মানতে নারাজ। বান্ধবীর প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনেছে নিহতের পরিবার। কিন্তু এখনও অভিযুক্ত অধরা। ঘটনার পর ৮ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও হাতে আসেনি ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট। আগামিকাল রিপোর্ট আসবে। গোটা ঘটনায় পুলিসের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগও এনেছে নিহত দেবাঞ্জনের পরিবার।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

জানা গিয়েছে, নবমীর রাতে বান্ধবীকে নিয়ে নাইটক্লাবে গিয়েছিল দেবাঞ্জন। তারপর রাত ২টো বেজে ৪ মিনিট নাগাদ বান্ধবীকে বিরাটির সর্দার পাড়ায় তাঁদের বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে এসেছিল দেবাঞ্জন। দেবাঞ্জনের ফোনের কল ডিটেইলস ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, বাড়িতে নামানোর পর রাত ২টো বেজে ৮ মিনিট নাগাদ বান্ধবীকে প্রথম ফোনটি করে দেবাঞ্জন। এরপর ২টো বেজে ১৬ মিনিট নাগাদ আবার বান্ধবীকে ফোন করেছিল দেবাঞ্জন। কিন্তু সেইসময় ওই তরুণী আর ফোন ধরেনি। রাত ২টো ২১ মিনিট পর্যন্ত ফোনটি বেজে যায়। অর্থাৎ রাত ২টো ২১ মিনিট পর্যন্ত ফোনে অ্যাক্টিভ ছিল দেবাঞ্জন।



পুলিসের দাবি, এরপরই বাড়ি ফেরার পথে বিরাটি ব্রিজের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন নিমতার দাগা কলোনির বাসিন্দা দেবাঞ্জন দাস। প্রথমে ল্যাম্পপোস্ট, তারপর পাঁচিলে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায় তাঁর বিলাসবহুল গাড়ি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কুড়ি বছরের যুবকের। নিমতা থানা থেকে খবর পেয়ে এরপর রাতেই ঘটনাস্থলে যান দেবাঞ্জনের পরিবার ও পরিচিতরা। বিরাটি ব্রিজে গাড়ির ভিতর উদ্ধার দেবাঞ্জন দাসের রক্তাক্ত দেহ। তবে পুলিস দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কথা বললেও ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ির চেহারা দেখে সন্দেহ হয় পরিবারের।


এরপর দশমীর সকালে অভিযোগ জানাতে নিমতা থানায় যান দেবাঞ্জনের বাবা। তখনই তাঁর নজরে আসে যে, গাড়ির বাঁদিকে সিটের নীচে পড়ে রয়েছে বুলেটের অংশ। এরপরই গোটা ঘটনায় বান্ধবীর প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনেছেন নিহত দেবাঞ্জনের বাবা। তাঁর অভিযোগ, অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে তিন বছর সম্পর্ক ছিল ওই তরুণীর। মাত্র আড়াই-তিন মাস আগে ওই তরুণীর সঙ্গে আলাপ হয় দেবাঞ্জনের। আর তারপর থেকেই দেবাঞ্জনকে প্রাণে মারার হুমকি দিত ওই তরুণীর প্রাক্তন প্রেমিক। সে-ই দেবাঞ্জনকে খুন করেছে বলে দাবি করেছেন দেবাঞ্জনের বাবা।



আরও পড়ুন, ভোট দিতেই এলেন না বিজেপির কাউন্সিলররা, বিনা বাধায় নৈহাটি পুরসভা পুনর্দখল তৃণমূলের


দেবাঞ্জনের পরিবারের অভিযোগ, নিমতা থানায় তাঁরা যখন ওই ব্যক্তির নামে অভিযোগ জানাতে যান, তখন তাঁদের হয়রানির মুখে পড়তে হয়। পাশাপাশি নিহতের বাবার আরও অভিযোগ, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে দেবাঞ্জনের ঘাড়ে ও হাতে ক্ষতচিহ্ন থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে। সম্ভবত পিছন থেকে গুলি করা হয়েছে দেবাঞ্জনকে। একইসঙ্গে নিহতের পরিবারের আরও দাবি, গাড়িটি যদি দুর্ঘটনার কবলে পড়ত, তাহলে চালকের সিটের এয়ারব্যাগ খুলে যেত। কিন্তু, গাড়িতে থাকা এয়ারব্যাগ খোলেনি। তাই দুর্ঘটনা হয়ে থাকলে এয়ারব্যাগ খুলল না কেন? এমনকি ঘটনার পর ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও গাড়িটির এখনও কোনও ফরেন্সিক পরীক্ষা হয়নি কেন? গাড়িটি কেন এখনও খোলা অবস্থায় এমনি থানায় পড়ে রয়েছে? সেই প্রশ্নও তুলেছে দেবাঞ্জনের পরিবার।