নিজস্ব প্রতিবেদন : সারাদিন ধরে খাটিয়া বানাচ্ছিলেন বৃদ্ধ। বার বার মৃত্যুর কথা বলছিলেন। বাড়ির সবাই সতর্ক ছিল যেন অঘটন কিছু ঘটে না যায়। কিন্তু সকালবেলা সেই অঘটনটা ঘটেই গেল। সবার অলক্ষ্যে ভোরবেলা আত্মহত্যা করলেন সেই বৃদ্ধ। তারপর নিজের তৈরি খাটিয়াতে করেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল শেষ যাত্রায়। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কালনার ইপলপতি গ্রামের উত্তর পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন প্রেমানন্দ মাঝি। বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাঁশ-দড়ি নিয়ে লেগে পড়েন। বাড়ির পিছনে বসে শুরু করেন খাটিয়া বানাতে। বাড়ির লোকেরা জানিয়েছেন, ভীষণ নেশা করতেন প্রেমানন্দ। সকাল সকাল উঠেই তাঁর নেশা করা শুরু হয়ে যেত। এদিনও তাঁর ব্যতিক্রম হয়নি। তাই প্রেমানন্দকে বাঁশ-দড়ি নিয়ে খুট খুট করতে দেখে অবাক হননি তাঁরা। ভেবেছিলেন, নেশার ঘোরেই এসব করছেন প্রেমানন্দ। তাই খাটিয়া তৈরিতে প্রথমে বাধাও দেননি তাঁরা।


আরও পড়ুন, নাতনির সামনেই দিনের পর দিন বউমাকে 'ধর্ষণ'-এর চেষ্টা শ্বশুরের, পরিণতি মর্মান্তিক


কিন্তু তাঁদের 'ঘোর' ভাঙে যখন প্রেমানন্দ বার বারই বলতে থাকেন- তিনি নিজের মৃত্যুর প্রস্তুতি সারছেন। এটাই তাঁর শববাহী খাটিয়া। প্রেমানন্দের স্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি আর তাঁর ছেলে চেষ্টা করেন খাটিয়া তৈরি থেকে প্রেমানন্দকে নিরস্ত করতে। কিন্তু স্ত্রী-পুত্রের আপত্তি কানেই তোলেননি তাঁর প্রেমানন্দ।


সারা রাত ধরে সতর্ক ছিল বাড়ির লোক। কিন্তু ভোরের দিকে বাড়ির সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়তেই নিজের কার্যসিদ্ধি করে ফেলেন প্রেমানন্দ। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে প্রেমানন্দ। এদিন সকালে উঠে প্রেমানন্দের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় বাড়ির লোক। বাড়ির লোক বুঝতে পারে, কোনও নেশার ঘোর নয়। সজ্ঞানেই নিজের শেষযাত্রার খাটিয়া তৈরি করছিলেন প্রেমানন্দ। এদিন সেই খাটিয়াতেই শোওয়ানো হয় প্রেমানন্দের দেহ। নিজের তৈরি খাটিয়াতে করেই ছেলের কাঁধে চেপে শেষ যাত্রায় রওনা দেন প্রেমানন্দকে। বাস্তবে এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় উপন্যাসের পাতার বইজুকে। কমলকুমার মজুমদারের লেখা বিখ্যাত উপন্যাস 'অন্তর্জলী যাত্রা'।


আরও পড়ুন, পরপুরুষের সঙ্গে প্রেম! বোনের ভালোবাসা মানতে না পেরে গুলি দাদার


কিন্তু হঠাত্ কেন আত্মহত্যা করতে গেলেন প্রেমানন্দ? শুধুই কি নেশার ঘোর? নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে? প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, অবসাদে ভুগছিলেন প্রেমানন্দ। যদিও স্ত্রী বা পুত্র কেউ-ই আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কালনা থানার পুলিশ।