Panchayat Eection 2023: বামেদের প্রার্থী তালিকায় রয়েছে নাম, শশী বললেন আমি তো তৃণমূল!

Panchayat Eection 2023: নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের মোট ১৭ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটি আসনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে নমিনেশন জমা করছেন। ব্লক অফিসগুলিতে লাইন দিয়ে নমিনেশন জমা দিচ্ছেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা
তপন দেব: বামেদের প্রার্থী তালিকায় রয়েছে নাম। কিন্তু সেই প্রার্থীই বলছেন তিনি দলে নেই। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হতেই কাজিয়া শুরু আলিপুরদুয়ারে। প্রার্থী হাইজ্যাকের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বামেরা। পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের দাবি, তৃণমূল সমর্থককে কীভাবে প্রার্থী করতে পারে বামেরা?
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বগটুইয়ে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা!
আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া মাদারিহাট ব্লকে জেলা পরিষদের ১৭ নম্বর আসনে প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছে শশী সোনোয়ারের। আর সেই ঘোষণা হতেই গোলমাল শুরু। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক বলেন, শশী সোনোয়ার আমাদের দলের সমর্থক। গতকালই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তাই তাকে আরএসপি কীভাবে প্রার্থী করে।
অন্য়দিকে, জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক কিশোর দাস বলেন শশী সোনোয়ার আরএসপি-র প্রার্থী হবেন। সেই কথা প্রচার হতেই রাতের অন্ধকারে তৃণমূল কংগ্রেস তাকে ভয় দেখিয়ে তাদের দলের পতাকা হাতে ধরিয়ে দিয়েছে। আণরা শশীকে প্রার্থীূ করছি না। এভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস অন্য দলের প্রার্থীদের হাইজ্যাক করতে শুরু করেছে।
উত্তরবঙ্গ চা বাগান শ্রমিক সংগঠন নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের সভাপতি ছিলেন শশী সোনোয়ার। আরএসপি সূত্রে খবর, শশীর মত নেই তাকে জেলা পরিষদে প্রার্থী করা হয়। কিন্তু প্রার্থী হিসেবে তার ঘোষণার পরই তিনি এখন বেঁকে বসেছেন। একসময় আরএসপির গড় ছিল এই বীরপাড়া মাদারিহাট। জোয়াকিম বাকলা, মনোহর তিরকের মতো নেতারা উঠে এসেছিলেন ওই জায়গা থেকে। কিন্তু বর্তমানে জেলা পরিষদ এখন তৃণমূলের দখলে। তবে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফের একবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে আরএসপি।
শশী সোনোয়ার বলেন, জেলা পরিষদে আরএসপি-র তরফে আমার নাম দেওয়া হয়েছে। এটি একেবারে ভুল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে লড়ব তা আগে কখনও বলিনি। বেশ কয়েকবছর ধরে আমি দিদির নেতৃত্বে কাজ করছি। গতকাল তৃণমূলের পতাকাও ধরেছিলাম। ব্লক প্রেসিডেন্ট জয়প্রকাশ টোপ্পার হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছি। তৃণমূল কংগ্রেস চা বাগানের মানুষদের জন্য যেভাবে সহযোগিতা করছে বা কাজ করছে তা দেখেই আমি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের জন্য কেউ আমার উপরে চাপ দেয়নি। নিজের ইচ্ছেতেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। আরএসপির তরফে যেভাবে আমার নাম দেওয়া হয়েছে তা ভুল।
উল্লেখ্য, প্রার্থী দেওয়াকে শুরু করে জেলায় জেলায় সংঘর্ষ শুরু হয়েছে রাজ্যে। মনোনয়ন কেন্দ্রের এক কিলোমিটারের মধ্যে ১৪৪ ধরা জারি থাকলেও সংঘর্ষ এড়ানো যাচ্ছে না। মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এদিন সিপিএম তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলে। চলে ইট বৃষ্টি। যখন সিপিএম প্রার্থীরা তাদের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বর্ধমানের ২ নম্বর বিডিও অফিসে যাচ্ছিলেন তখন জাতীয় সড়কের ধারে বড়শুল মোড়ে তাদের পথ আটকায় তৃণমূল। অভিযোগ তেমনই। এই নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। শুরু হয় ইট বৃষ্টি। সিপিএমের একজন প্রার্থী সহ বেশ কয়েকজন কর্মী জখম হয় ইট বৃষ্টিতে। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ সিপিএম কর্মী সমর্থকরা প্রার্থীদের নিয়ে বর্ধমান ২ নম্বর বিডিও অফিসে মনোনয়ন দাখিল করতে যাচ্ছিলেন। ওই সময় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা তাদের পথ আটকায় বলে অভিযোগ।
নন্দীগ্রামের বিডিও অফিসে সোমবার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেসের নির্দল প্রার্থীরা একে একে নমিনেশন জমা করলেন। মঙ্গলবারও নন্দীগ্রাম এক ও দুই ব্লকে নির্দল প্রার্থীদের নমিনেশন চলবে বলে জানা গিয়েছে। তবে সোমবার অধিকাংশরাই নমিনেশন জমা করেছেন।
নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের মোট ১৭ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটি আসনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে নমিনেশন জমা করছেন। ব্লক অফিসগুলিতে লাইন দিয়ে নমিনেশন জমা দিচ্ছেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। নন্দীগ্রাম জুড়ে নন্দীগ্রাম উন্নয়ন পর্ষদের ব্যানারে নির্দল প্রার্থী হিসেবে নমিনেশন জমা করছেন তাঁরা। এই নির্দলদের তালিকায় রয়েছে এলাকার অনেক পঞ্চায়েত সদস্য এবং সদস্যারা। তৃণমূলের দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য তথা তৃণমূল নেতা আব্বাস বেগ বলেন, ‘নন্দীগ্রাম জুড়ে সুফিয়ান পন্থীদের সাইড করে দেওয়া হয়েছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘নন্দীগ্রামের এক তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্ত গর্গ যবে থেকে দলের সভাপতি হয়েছেন তবে থেকে এই ধরনের সুফিয়ান পন্থীদের সাইড করা শুরু করেছে। গ্যারেজ করার পাশাপাশি তাদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদেরকেই টিকিট দেওয়া হচ্ছে। নন্দীগ্রামে নবজোয়ার কর্মসূচিতে গেছিলেন তাদেরকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি’। উল্টে তাদেরকে মেরে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও করেন তিনি।