রণজয় সিংহ: চিকিত্সকের গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগে তোলপাড় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, কর্তব্যরত চিকিত্সক শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করলেও সে বেঁচে ছিল। সময়মতো চিকিত্সা হলে শিশুটি বোঁচে যেতে পারত। অন্যদিকে, চিকিত্সকের বক্তব্য, শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসককে গভীর রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখে গ্রামবাসীরা। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-গুজরাটে নারদা গাম হিংসায় বেকসুর খালাস ৬৮ অভিযুক্ত


বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভালুকার গোবরা গ্রামের বাসিন্দা তপন মহালদারের ৫ দিনের শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাড়ির লোক তাকে স্থানীয় ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আইফানায় ইয়াসমিন ওই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন চিকিৎসক।


শিশুটির পরিবারের দাবি, মৃত ভেবে শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে চলে যানা তাঁরা। কিন্তু বাড়ি ফিরে শিশুটির পুনরায় শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে শুরু করে এবং হাত-পা নাড়াতে শুরু করে। তৎক্ষণাৎ শিশুটিকে আবার ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু চিকিৎসক আইফানায় ইয়াসমিন চিকিৎসা না করে শিশুটিকে চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে রেফার করে দেন। সেখানে পৌঁছালে চিকিৎসকেরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।


নীলম চৌধুরি নামে শিশুর এক আত্মীয় বলেন, ভালুকা হাসপাতালে বাচ্ছাটিকে নিয়ে গিয়েছিলাম। বাচ্চাটিকে দেখে ম্যাডাম বলছে, ও আর নেই। ডাক্তারের কথা বিশ্বাস করে আমরা শিশুটিকে বাড়ি নিয়ে চলে গেলাম। বাড়িতে গিয়ে বাচ্চা নাক দিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়ল ও একবার চোখ খুলে দেখল। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে ফের ভালুকা হাসপাতালে নিয়ে এলাম। ডাক্তার ম্যাডাম বললেন, বাচ্চা নেই। এর পর ওকে আমরা চাঁচল হাসপাতালে নিয়ে যাই। এর দায় চিকিত্সকের। 


অন্যদিকে, ওই ঘটনা নিয়ে চিকিত্সক আইফানায় ইয়াসমিন বলেন, বাচ্চাকে আমি দেখেছি। মৃত অবস্থায় বাচ্চাটিকে হাসপাতালে আনা হয়। আমি কি চাঁচল পাঠিয়েছিলাম বাচ্চাটিকে? হাসপাতালে এত সমস্যা সেখানে তো আপনাদের নজর পড়ে না? খালি একটু কী হল না হল আপনারা চলে এলেন?  


শিশুটির আত্মীয় নৃপেন মহলদার বলেন, গোবরার ওই বাচ্চাটিকে ভালুকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হয়। ডাক্তার ওকে দেখেই বলে বাচ্চা মারা গিয়েছে। ওকে বাড়ি বনিয়ে যাও। বাচ্চার বাবা তপন মহলদার বাচ্চাটিকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর সে জেগে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গেই বাচ্চাটিকে ফের ভালুকা হাসপাতালে আনা হয়। তাকে চাঁচলে পাঠানো হয়। সেখানে শিশুটির মৃত্যু হয়। আমার চাই এই দুই মহিলা ডাক্তারকে বদলি করা হোক।


ঘটনা খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে যায় ভালুকা ফাঁড়ির বিশাল পুলিস বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। শিশুর পরিবারের সদস্যের অভিযোগ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে শিশুটি মারা গেল। গ্রামবাসীরা ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক আইফানায় ইয়াসমিনের উপযুক্ত শাস্তির দাবি তুলেছেন। গ্রামবাসী নীরোদ চৌধুরী জানান ভালুকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে আজকে এই শিশুর মৃত্যু হল আমরা চাই ওই চিকিৎসকের জন্য উপযুক্ত শাস্তি হয়।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)