প্রতুল চক্রবর্তী খুনের তদন্তে গয়নার দোকানে ঢুঁ পুলিসের
২০ ডিসেম্বর খড়দহের শান্তিনগর খালপাড় থেকে উদ্ধার হয় প্রতুলবাবুর দেহ।
নিজস্ব প্রতিবেদন : খড়দহ প্রতুল চক্রবর্তী খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত অদিতি চক্রবর্তীকে আজ কাশীপুরে এক গয়নার দোকানে নিয়ে যাবে খড়দা থানার পুলিশ। পুলিসকে অদিতি জানিয়েছে, কিছু সোনার গয়না বন্দক রেখেই প্রতুল বাবুকে টাকা দিয়েছিল সে। তার সত্যতা যাচাই করতেই তাকে নিয়ে সোনার দোকানে যাবে পুলিস।
জেরায় অদিতির দাবি, প্রতুল চক্রবর্তী তাকে বার বার চাপ দিত ব্যাঙ্ক থেকে লোন নেওয়ার জন্য। একটি চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন প্রতুল চক্রবর্তী। আর অদিতিকে লোভ দেখাতেন ওই চিটফান্ডে টাকা খাটিয়ে জমা টাকার দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা তাকে ফেরত দেওয়ার। বাড়তি টাকার লোভেই কখনও সোনা বন্ধক রেখে, আবার কখনও মাইনের টাকা থেকেও প্রতুলকে টাকা দিত অদিতি।
অন্যদিকে প্রতুল চক্রবর্তীর দিদি চন্দনা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই প্রতুলকে তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে দিত না অদিতি। বুধবার মৃতদেহ শনাক্ত করতে গিয়ে একথা জানান প্রতুল চক্রবর্তীর দিদি। তিনি বলেন, “ভাইকে প্রথম দিকে বেশ কিছুটা খারাপ বলা হচ্ছিল, কিন্তু ভাই ততোটাও খারাপ নয়।”
পুলিসের কাছে প্রতুল চক্রবর্তীকে খুনের কথা স্বীকার করেছে অদিতি। পুলিসি জেরায় সে জানিয়েছে, খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতে নিজের পোশাক পরিবর্তন করে। তারপর সেই পোশাক একটি ব্যাগে পুরে খালে ফেলে দেয়। প্রতুল চক্রবর্তীর যাবতীয় ডকুমেন্টও খালে ফেলে দেয় সে।
প্রথম অদিতি পুলিসকে জানিয়েছিল, ঘটনার দিন প্রতুল তাকে খুন করার চেষ্টা করেছিলেন। নিজেকে বাঁচাতে প্রতুলকে খুন করেছে অদিতি। কিন্তু পরে জেরায় অদিতি স্বীকার করে, পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই প্রতুলকে খুন করেছে সে। ঘটনার দিন সাড়ে তিন ঘণ্টা প্রতুলের সঙ্গে খড়দার ওই ফ্ল্যাটে থাকে অদিতি। তারপর প্রতুলকে মদ্যপান করান। নিজেও মদ্যপান করেন। এরপর বালিশ চাপা দিয়ে প্রতুলকে খুন করে অদিতি। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন, খুনের পর পোশাক বদলে খালে ফেলে দেয়, পাকা খুনির মত 'কাজ সারে' অদিতি
গত ২০ ডিসেম্বর খড়দহের শান্তিনগর খালপাড় থেকে উদ্ধার হয় প্রতুলবাবুর দেহ। শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে প্রথমেই সন্দেহ করে পুলিস। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া যায় মহিলাদের একটি রুমাল। উদ্ধার হওয়া সেই রুমালের সূত্র ধরেই প্রতুল চক্রবর্তীর স্ত্রী অদিতিকে গ্রেফতার করে খড়দা থানার পুলিস।