নিজস্ব প্রতিবেদন: দশম শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যায় গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানার পতিরাম এলাকায়। দশম শ্রেণীর ওই ছাত্রী গত ২৫ নভেম্বর বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রথমে এই পরিবারের তরফে এই ঘটনাকে নিছক আত্মহত্যা বলে মনে করা হলেও কয়েকদিন পরে মৃতার বইপত্র ঘাঁটতে গিয়ে ওই ছাত্রীরই লেখা একটি চিঠি হাতে আসে পরিবারের। আর তার পরই মৃত্যুর কারণ হিসাবে গৃহশিক্ষকের দিকে সন্দেহের তির ওঠে। ওই চিঠিতে ছাত্রীটি লিখেছে, গৃহশিক্ষক সুজন মন্ডল দীর্ঘদিন ধরে যৌন নির্যাতন করছেন। রোজ তাকে জড়িয়ে ধরে নানা কুকর্ম করতেন ওই শিক্ষক। গৃহশিক্ষকের লাগাতার যৌন অত্যাচারে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েই ছাত্রীটি আত্মহত্যা করেছে বলে বাড়ির লোকেদের অভিযোগ। ওই চিঠিটি উদ্ধারের পরই অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।


বুধবার দুপুরে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বালুরঘাট থানার পুলিশ অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক সুজন মন্ডল (৩৭)-কে ঠাকুরপুরা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। আগামীকাল তাকে বালুরঘাট আদালতে তোলা হবে। পাশাপাশি অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আর্জিও আদালতের কাছে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ডিএসপি হেড কোয়ার্টার সৌমজিৎ বড়ুয়া। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।


আরও পড়ুন- জমি নিয়ে বিবাদ, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে বাইক চাপা দিয়ে মারার চেষ্টা এসএসবি জওয়ানের


প্রসঙ্গত, পতিরাম গার্লস হাই স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়ত বালুরঘাট থানার ঝাপুর্সি এলাকার মীরা রায়। সে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য তার গৃহ শিক্ষক ছিলেন সুজন মন্ডল। অবিবাহিত সুজন মন্ডলের বাড়ি কুমারগঞ্জ থানার বেলতারা এলাকায়। বিগত ১৭ বছর ধরে পতিরাম এলাকায় গৃহ শিক্ষকতার কাজ করে আসছেন তিনি। বছর দুয়েক থেকে মীরা রায় তার কাছে পড়ছিল। গত মাসের ২৫ তারিখ গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় মীরা।


প্রথম দিকে তেমন কিছু মনে না হলেও মৃতার খাতা থেকে পাওয়া একটি চিঠিতে মৃত্যুর কারণ নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। জানা যায়, মৃতা ছাত্রী গৃহ শিক্ষককে ভালবাসতো। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হত গৃহ শিক্ষক, এমনটাই অভিযোগ। এ বিষয়ে ডিএসপি হেড কোয়ার্টার সৌমজিৎ বড়ুয়া জানান, মৃতা ছাত্রীর সঙ্গে অভিযুক্তের ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মৃতা ছাত্রীর গায়ে হাত দিত অভিযুক্ত। মৃতার বই খাতার ভাঁজ থেকে একটি চিঠি পাওয়া গিয়েছে বলেও তিনি জানান। আরও পড়ুন- প্রৌঢ়ের বিকৃত যৌন লালসার শিকার শিশুকন্যা


এদিকে অভিযুক্তের অন্যত্র বিয়ের কথা বার্তা চলছিল। সেই খবর হয়তো মীনার কানে আসে। আর এর পরই সে আত্মঘাতী হয়, এমনটাও মনে করা হচ্ছে। বালুরঘাট থানায় মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।