Rail News: দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা কাটোয়া লোকালের, প্লাটফর্মে রাখা স্লিপারে ধাক্কা মারল ট্রেন
Rail News: শনিবার বর্ধমান মেইন লাইনে প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে স্তব্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। রাত পোহাতেই বাঁকুড়ার ওন্দায় দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িকে ধাক্কা মারল অন্য একটি মালগাড়ি। ভেঙে চুরমার ইঞ্জিন ও একাধিক বগি। ওই দুর্ঘটনার জেরে বন্ধ আদ্রা-খড়গপুর শাখায় রেল চলাচল। দুর্ঘটনার জেরে বাতিল ১১টি ট্রেন
অয়ন ঘোষাল ও সন্দীপ ঘোষ চৌধুরী: বাঁকুড়ার মালগাড়ি দুর্ঘটনার পর এবার আতঙ্ক বর্ধমানে। কোনও ক্রমে দুর্ঘটনা এড়াল হাওড়া-কাটোয়া লোকাল। যাত্রী বোঝাই ট্রেনটি আচমকা ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে যাওয়ায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। দ্রুত ট্রেন থেকে নেমে পড়েন তাঁরা।
আরও পড়ুন-সকালে তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন, রাতে বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধানের ভাইকে গুলি দিনহাটায়
মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার দাঁইহাট স্টেশনের কাছে। ট্রেনের সামনে চোট লাগার দাগ স্পষ্ট। এদিন দাঁইহাট স্টেশনের চার নম্বর প্লাটফর্মে প্রচুর স্লিপার রাখা ছিল। সেগুলি প্লাটফর্ম থেকে বেরিয়ে ছিল। তাতেই ধাক্কা মারে ট্রেনটি। সঙ্গে সঙ্গেই চালক এমার্জেন্সি ব্রেক কষলে ট্রেনটি থেমে যায়। যাত্রীরা হুড়মুড়িয়ে নেমে পড়েন ট্রেন থেকে। এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই।
প্লাটফর্মে ঢোকার সময় ট্রেনটির গতি খুব বেশি ছিল না। তবে স্লিপার বেরিয়ে থাকায় ট্রেনটি তাতে ধাক্কা মারে। সবাই ভয় পেয়ে যান। এরপর ট্রেনটি বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে লাইনে। ফলে, যাত্রীরা অসুবিধায় পড়েন। পরে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। তৎপরতার সঙ্গে স্লিপারগুলিও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, স্লিপারগুলি ওই ভাবে রাখা ঠিক হয়নি। আর একটু ভিতরে রাখতে পারত। ট্রেনের জন্য কতটা জায়গা লাগবে, সেটা বোঝা উচিত ছিল। রাত ৯ টা ২ মিনিট নাগাদ ওই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন তিনি। কৌশিক মিত্র জানান, চালক বুঝতে পেরেই ট্রেনটি দাঁড় করিয়ে দেন।
ট্রেনের যাত্রী মুজিবুর রহমান বলেন, স্লিপারগুলে প্লাটফর্মে রাখা ছিল। প্লাটফর্ম থেকে সেগুলি বেরিয়ে ছিল। সেগুলোতেই ধাক্কা মারে ট্রেন। ঢোকার মুখে ট্রেনের গতি খুবই কম ছিল। তার পরেও প্রবল ঝাঁকুনি টের পাই। যাত্রীরা সকলেই ভয় পেয়ে য়ায়।
শনিবার বর্ধমান মেইন লাইনে প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে স্তব্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। রাত পোহাতেই বাঁকুড়ার ওন্দায় দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িকে ধাক্কা মারল অন্য একটি মালগাড়ি। ভেঙে চুরমার ইঞ্জিন ও একাধিক বগি। ওই দুর্ঘটনার জেরে বন্ধ আদ্রা-খড়গপুর শাখায় রেল চলাচল। দুর্ঘটনার জেরে বাতিল ১১টি ট্রেন।
ওই দুর্ঘটনায় লাইন থেকে ছিটকে বেরিয়ে যায় ১৩টি বগি। চালকের ভুলেই এই দুর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। অনুমান করা হচ্ছে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন মালগাড়ির চালক। যে মালগাড়িটি অন্য মালগাড়িকে ধাক্কা মারে সেটির ইঞ্জিনের সামনের অংশ মাটি থেকে অনেকটাই উপরে উঠে যায়। তা থেকে বোঝা যা কতটা প্রবল গতিতে মালগাড়িটি অন্য মালগাড়িকে ধাক্কা মারে। যেখানে দুর্ঘটনা হয়েছে তার পাশের রেলের একটি ঘর ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
ওন্দাতেও লুপ লাইনে একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। সেই লাইনেই ঢুকে পড়ে অন্য একটি গাড়ি। রেলের তরফে দাবি করা হচ্ছে লাইনে রেড সিগন্যাল ছিল। তার পরেই গাড়িটি ওই লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে। চালক সম্ভবত ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সেই কারণেই এই ধাক্কা। প্রবল ধাক্কার শব্দ এতটাই ছিল ছুটে আসেন আসপাশের লোকজন। তারাই এসে আহত চালককে হাসপাতালে ভর্তি করেন। শুরু হয়ে যায় উদ্ধারকাজ। আপলাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ধাক্কা লাগার পর ইঞ্জিন কেবিনের যে অবস্থা তাতে চালকের যে খুব বেশি ক্ষতি হয়েছে তা মনে হয় না। কিন্তু ইঞ্জিনের পেছনের অংশে বগির পেছনের অংশর চাকা ভেঙে বেরিয়ে পড়েছে। দেখলে বোঝা যায় সংঘর্ষ কতটা তীব্র ছিল।