লকডাউনে দিব্যি চলছে রিক্সা, প্যাসেঞ্জারও আছে! পেটের জ্বালা, বলছেন রিক্সাচালকরা
মৃত্যু ভয় এবং সরকারি নির্দেশিকা উপেক্ষা করেই শুক্রবার সকাল থেকে রোজগারের আশায় রিক্সা নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছেন খড়দা এবং সোদপুরের স্টেশন রোড এবং বিভিন্ন অলিগলির রিক্সাচালকরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন— ক্ষিদের জ্বালা বড় জ্বালা! তার জন্য মৃত্যু ভয়ও উপেক্ষা করা যায়! ক্ষিদের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন খড়দহ, সোদপুর স্টেশন রোড এবং বিভিন্ন শহরতলি এলাকার রিক্সাচালকরা। আটদিন ধরে লকডাউন। ঘরে জমানো যেটুকু সম্বল ছিল তাই দিয়ে কয়েকদিন চলেছে। কিন্তু এবার ভাঁড়ারে টান পড়েছে। রোজগার নেই। পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছেন না শ্যামল, কার্তিকরা। পেটে খিল বেঁধে দুদিন বাড়িতে নিজেকে বন্দি রাখার পর তাঁরা আর খিদে সহ্য করতে পারছেন না। একমুঠো ভাত জোগাড়ের জন্য করোনার থাবা উপেক্ষা করেই রাস্তায় নেমে পড়েছেন।
মৃত্যু ভয় এবং সরকারি নির্দেশিকা উপেক্ষা করেই শুক্রবার সকাল থেকে রোজগারের আশায় রিক্সা নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছেন খড়দা এবং সোদপুরের স্টেশন রোড এবং বিভিন্ন অলিগলির রিক্সাচালকরা। রাস্তায় বেরোতেই ব্যাঙ্ক, ফার্মেসি কিংবা অন্য কোনও গন্তব্যে যাওয়ার প্যাসেঞ্জারও পাচ্ছেন। বাড়ি ফেরার পথে চাল, ডাল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন রিক্সাচালকরা। এই দুর্দিনেও পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছেন, এটাই তাদের বেশি তৃপ্তি দিচ্ছে। কেন বেড়িয়েছেন? আপনার জন্য আরও অনেকে করোনাতে আক্রান্ত হতে পারে, জানেন! রিক্সাচালকদের উত্তর, "খাব কী?" সরকার তো বিনামূল্যে চাল ডাল দিচ্ছে! উত্তর :- তেল কোথায় পাব ? সবজি কিনব কী দিয়ে? মুদি—সদাই কেনার পয়সা নেই। ঘরে থাকলে না খেয়ে মরব। বাইরে এলে করোনাতে মরব। তাই খেয়ে মরাই ভালো।"
আরে পড়ুন— টোটো করে 'পাচারের' ছক! তল্লাশি চালাতেই উদ্ধার সরকারি লোগো-লেবেল লাগানো বস্তা বস্তা চাল
রিক্সাচালকরা দলে দলে রাস্তায়। এই খবর পৌছায় প্রশাসনের কাছে। রাস্তায় নেমে খড়দা এবং ঘোলা থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গিয়ে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে পুলিশও। রিক্সাচালকদের উপর কোনও জোর বা লাঠিচার্জ না করে তাদের পরিস্থিতি বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে পুলিশ। পাশাপাশি আরোহীদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পুলিশ রাস্তায় বেরিয়ে পড়া রিক্সাচালকদের আশ্বস্ত করে, তাদের খাবারের ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। এরপর যে সমস্ত ক্লাব বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অসহায় মানুষগুলোর কাছে খাবার পৌছে দিচ্ছে, সেই সংস্থার মারফত রিক্সাচালকদের কাছে খাবার পৌছে দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয় প্রশাসন।