নিজস্ব প্রতিবেদন:  বেশ কয়েকদিন ধরেই লোকালয়ের ধারেকাছে ঘোরাফেরা করছিলেন তিনি। অনেকেরই নজরে এসেছিল ব্যাপারটা। নজর এড়ায়নি বনকর্মীদেরও। এমনকি বনদফতরের সামনে এসেও ঘোরাফেরা করেছেন, বসে থেকেছেন! ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে, দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছিলেন তিনি। প্রথমটায় বিশেষ আমল দেননি বনকর্মীরা। কিন্তু সমস্যা যে অনেকটাই গভীরে, তা বুঝতে দেরি হয়নি দুঁদে বনকর্তাদের। বনদফতরের বাইরে এসে তাঁদের অপেক্ষায় বসে থাকা বাঘিনীর চোখে আসলে ছানি পড়েছে। চোখে কম দেখতে পারছেন তিনি। ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গী তো নেই, তাই ‘ডাক্তার’রের খোঁজে নিজেই হেঁটে এসে উপস্থিত হলেন হাসপাতালে। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের ঝিলা বিট অফিসের বনকর্তারা বোধহয় এরআগে এই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে হয়নি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বেশ কিছুদিন ধরেই ওই বাঘিনীকে বনদফতরের আশেপাশে ঘুরতে দেখা যাচ্ছিল। সকাল-সন্ধ্যায় বসে থাকতে দেখা যাচ্ছিল দফতরের অদূরে। বনকর্মীদের দৃষ্টি এড়ায়নি বিষয়টি। তবে লোকালয়ের তরফে তেমন কোনও অভাব-অভিযোগ, খবর না আসায় প্রথমটায় ওতটাও আমল দেননি তাঁরা। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের ফিল্ড ডিরেক্টর নীলাঞ্জন মল্লিকের কথায়, ‘‘বাঘিনীটিকে দেখে প্রথমে মনে হচ্ছিল যেন দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে ও। কিন্তু আমরা ওর উপর নজর রাখি, গতিবিধি খেয়াল রাখি। বুঝতে পারি, শারীরিক কোনও সমস্যা হয়েছে বাঘিনীর। সেই কারণেই সে এখানে এসে বসে থাকছে।’’


আরও পড়ুন:  যাত্রীর পিঠের ব্যাগের চেন খুলতেই কপালে ঘাম এল রেলপুলিসের!


বাঘিনীটির আসলে বয়স হয়েছে। তার বা চোখে ছানি পড়েছে। দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ। শিকার করতে পারছে না দীর্ঘদিন। ঠিকমতো খাবার না খাওয়ায় দুর্বলও হয়ে পড়েছে সে, সঙ্গে রয়েছে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা। বাঘিনী নিজেই বুঝতে পারছিল, শরীরটা মোটেও ভালো যাচ্ছে না তার। তাই বোধহয় নিজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চলে এসেছিল বনদফতরের সামনেই।


সাধারণত বাঘের বয়স হয়ে গেলে লোকালয়ের কাছাকাছি চলে আসে সে। সেখান থেকে শিকার ধরাটা সহজ হয় তার পক্ষে। এক্ষেত্রেই এই বাঘিনীটিও বোধহয় সেই মত লোকালয়ের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করতে শুরু করেছিল। তাই কোনও প্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বনকর্মীরা উচ্চ পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বাঘিনীকে খাঁচাবন্দি করে।


আরও পড়ুন: জুতোর দোকানে দুই যুবকের সঙ্গে এসেছিল এই মেয়ে, তারপর প্রকাশ্যে যে কাণ্ড ঘটাল, তা দেখে চক্ষু চড়কগাছ দোকানির


বর্তমানে ওই বাঘিনীকে চিকিত্সার জন্য ঝাড়খালি টাইগার রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই তার চিকিত্সা চলছে। বাঘিনীটিকে আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে কিনা, সেবিষয়ে এখনই কিছু বলেননি বনকর্মীরা। মূলত পশুচিকিত্সকদের পরামর্শ মতোই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।