নীলেশ্বর সান্যাল:  হার্ডিং ব্রিজে দার্জিলিং মেল উঠলেই ট্রেনের আওয়াজে কানে তালা লেগে যেত। তারপর ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই শিয়ালদহ পৌঁছে দেখতাম রাস্তা ধুয়ে দিচ্ছে কর্পোরেশনের গাড়ি। কথাগুলো বলতে বলতে নস্টালজিয়ায় চোখের কোণ চিকচিক করে উঠল সাধন বোসের। ১৯৫০ সালের কথা। তখন কিশোর বয়স কাটিয়ে সদ্য যুবক জলপাইগুড়ির রায়কত পাড়া এলাকার বাসিন্দা সাধন বোস। পারিবারিক কারণে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন থেকে দার্জিলিং মেলে চেপে বেশকয়েকবার হলদিবাড়ি, চিলাহাটি হয়ে শিয়ালদহ গিয়েছেন তিনি।  কেমন ছিল সেকালের রেলযাত্রা? সেই অভিজ্ঞতা Zee ২৪ ঘণ্টা-কে জানালেন জলপাইগুড়ি শহরের বিশিষ্ট এই ব্যবসায়ী।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তখন ব্রিটিশ আমল। শিলিগুড়ি স্টেশন থেকে সন্ধে নাগাদ ছাড়ত দার্জিলিং মেল। জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন, হলদিবাড়ি, চিলাহাটি, পার্বতীপুর,শান্তাহার... ভারতের দর্শনা পেরিয়ে শিয়ালদহে পৌঁছাত কাকভোরে। তখন ছিল স্টিম ইঞ্জিন। শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশ হয়ে শিয়ালদহ। ট্রেনে চেপে সফর করতে হত ৩৭৩ কিমি পথ। আর এখন? পথের দূরত্ব বেড়ে হয়েছে ৫৭৩ কিমি! শিলিগুড়ি থেকে মালদহ, বর্ধমান হয়ে ট্রেন যায় শিয়ালদহে।  সাধন বোস জানালেন,  '১৯৫০ সাল নাগাদ তিনি রাত ৯ টা নাগাদ জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন থেকে দার্জিলিং মেলে চাপতেন। এরপর সেই স্টিম ইঞ্জিন হলদিবাড়ি, চিলাহাটি, পার্বতীপুর স্টেশন পার করে ভোর হতে না হতেই ট্রেন শিয়ালদহ পৌঁছে যেত। এই ট্রেন সফরের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার। আর ট্রেন হার্ডিং ব্রিজে উঠলে তো কথাই নেই! লোহার সেতুতে ঝমাঝম শব্দে ঘুম ভেঙে যেত যাত্রীদের। এত জোর শব্দ হত যে, পাশের লোকের কথাও শোনা যেত না!'


ভারতীয় রেলের অনেক উন্নতি হয়েছে। স্ট্রিম ইঞ্জিনের পরিবর্ত চলেছে ইলেকট্রিক ইঞ্জিন। হলদিবাড়ি থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত যখন ফের রেলপথ চালু হচ্ছে, তখন ওই পথে মালবাহী ট্রেনের পাশাপাশি যাত্রীবাহী ট্রেনও চলুক। তাহলে উত্তরবঙ্গ থেকে অনেক কম সময়ে কলকাতায় পৌঁছে যাওয়া যাবে। ব্যবসা অন্তত ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। স্থানীয় বাসিন্দারা উপকৃত হবেন। তেমনটাই মত সাধন বসুর।