অরূপ লাহা: পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল বর্ধমানে। প্রথা মেনে প্রতিপদে ঘটস্থাপন হল সর্বমঙ্গলা মন্দিরে। রবিবার প্রতিপদে রাজাদের খনন করা কৃষ্ণসায়র থেকে জল ভরা হল ঘটে। ঘটস্থাপনের মাধ্যমে কার্যত গোটা রাঢ়বঙ্গে দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গেল। বর্ধমানের রাজারা জন্মসূত্রে ছিলেন পাঞ্জাবি। পরে বধূ হিসেবে এ-পরিবারে নানা রাজ্যের মেয়েরা এসেছেন। ফলে, নানা সংস্কৃতি ও লোকাচারের মিশেল সম্ভব হয়েছে এখানে। এখানকার দুর্গাপুজোর মধ্যেও মিলেমিশে গিয়েছে সেই সব।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Durga Puja 2023: মন-মন ঘি আর বেলকাঠে জ্বলে উঠল কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির হোমকুণ্ড...


প্রতিবার এখানে প্রতিপদে শুরু হয় রাঢ়-জননী সর্বমঙ্গলার পুজো। কৃষ্ণসায়র থেকে আচার মেনে জল ভরা হয়। এরপর হয় ঘটস্থাপন। পুজো চলবে নবমী অর্থাৎ নবরাত্রি পর্যন্ত। পূর্ব বর্ধমানের সবচেয়ে প্রাচীন আর জাগ্রত বলে পরিচিতি দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দির। মহালয়ার দিনে ঘট উত্তোলন হল রাজার প্রতিষ্ঠিত কৃষ্ণসায়রে, প্রতিস্থাপিত হল ঘট। দেবীকে এদিন রাজবেশ পরানো হল।


রাজা তেজচন্দ্রের আমলে এই মন্দির নির্মাণ হয়েছিল। মন্দির ঘিরে অনেক উপকথা আছে। চুনুরি বাড়ির মেয়েরা নাকি দেবীর পাষাণপ্রতিমায় গেঁড়ি-গুগলি থেঁতো করতেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবীকে এই প্রাচীন মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা হয়। দেবী দুর্গা এখানে সর্বমঙ্গলারূপে পূজিতা। সারাবছর বিরাজ করেন তিনি। সব ক'টি উৎসব রাজ-আমল থেকেই মহাসমারোহে পালিত হয়ে আসছে। পুজোর চারদিন ষোড়শোপচারে দেবী আরাধনা হয় সর্বমঙ্গলা মন্দিরে। আগে মহিষ ও পাঁঠাবলি হত। পূর্বতন জেলাশাসকের উদ্যোগে বলি এখন বন্ধ। আগে সন্ধিপুজোর মহালগ্নে কামান দাগা হত। ১৯৯৭ সালে বিস্ফোরণের পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় সেই প্রথাও।


তবে দেবীর আরাধনা ঘিরে ভক্তদের আবেগ এখনও একইরকম। পুজোর পাঁচদিন এখানে তিলধারণের জায়গা থাকে না। হাজারে হাজারে ভক্ত সমবেত হন এখানে। মাছের টক-সহ নানা উপাচারে মায়ের ভোগ দেওয়া হয়। মালসা ভোগ নিতে ভক্তরা ভিড় করেন। নবমীতে কয়েক হাজার মানুষকে ভোগ বিলি করা হয়। 


আরও পড়ুন: Durga Puja 2023: 'কাউকে ডাকতে হয় না! ঢাকি থেকে নাপিত সকলে নিজেরাই এসে পুজোর দায়িত্ব নেন'...


সকালে পূজার্চনার পরে মন্দির থেকে মায়ের রূপোর ঘট নিয়ে শোভাযাত্রা বের হয়। ঢাক-সহ বিভিন্ন বাজনা নিয়ে ঘোড়ায় টানা রথের উপর বিশেষ ছাতার তলায় ঘট নিয়ে বসেন পুরোহিতরা। বেশ খানিকটা পথ পরিক্রমা করে শোভাযাত্রা যায় কৃষ্ণসায়রে। সেখানে মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ঘট জলপূর্ণ করেন। এরপর তা নিয়ে এসে মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়।অনুষ্ঠানে ছিলেন  প্রশাসনের আধিকারিকরা।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)