কমলিকা সেনগুপ্ত 
বাইরে থেকে লোক ঢুকছে। বীজপুরে আতঙ্কের রাজনীতি চলছে। শনিবার ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে এমনটাই অভিযোগ করলেন তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। বললেন, ''আমার ভয় হচ্ছে। আমার অবস্থা বিকাশকাকুর মতো না হয়! মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সবটা জানিয়েছি।'' আরও একবার স্পষ্ট করলেন, তিনি তৃণমূলেই আছেন, থাকবেনও। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- 'মুকুল ভূত' দেখছেন না কি রাজ্য বিজেপি নেতারা?


বীজপুরের বিধায়কের অভিযোগ, বীজপুরে গত ৫-৬ বছরে যা হয়নি, এখন তাই হচ্ছে। রাতে গন্ডগোল হচ্ছে। একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বাইরে থেকে লোক এসে এলাকা দখলের লড়াই করছে। প্রতিদিনই তাঁর এলাকায় মদ, জুয়ার আসর বসাচ্ছে বাইরের লোকেরা। বিধায়ক হয়েও কেন আপনি রুখতে পারছেন না? শুভ্রাংশুর জবাব, ''আমি দায়িত্বে নেই। বাইরের লোকেদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনও পারছে না। এখানে উত্তেজনা বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সবটা জানিয়েছি।'' শুভ্রাংশুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং। এর পিছনে মুকুল-শুভ্রাংশুর গটআপ থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। অর্জুন সিংয়ের কথায়, ''এলাকায় আইনশৃঙ্খলার কোনও সমস্যাই নেই। এভাবে প্রকাশ্যে অভিযোগ করে দলকে বদনাম করছে। কোনও অভিযোগ থাকলে দলের অন্দরে বলুক।'' 
আরও পড়ুন- ট্রেডমার্ক বিতর্কে এবার মমতাকে জড়ালেন মুকুল


চলতি মাসের শুরুতে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মুকুল রায়। তবে মুকুলপুত্র তথা বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় শুরু থেকেই বলেছেন, ''আমি তৃণমূলে ছিলাম, আছি ও থাকব।'' তবে তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁকে ভরসা করছেন না বলে গুঞ্জন। ধর্মতলায় বিজেপির সভার পালটা তৃণমূলের সভায় তাঁকে বক্তা হিসেবে রাখা হয়েছিল। সেই সভায় অনুপস্থিত ছিলেন শুভ্রাংশু রায়। পরে জানিয়েছিলেন, তিনি অসুস্থ থাকায় যেতে পারেননি। যদিও তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায় তৃণমূলের অন্দরে। তাঁকে দলের জেলা বৈঠকেও ডাকা হচ্ছে না বলে খবর। এনিয়ে মুকুলপুত্র বলেন, ''যে যা বলুক ২০১৯ সালে নিজেকে প্রমাণ করব।'' ইতিমধ্যে শুভ্রাংশুকে বিজেপিতে স্বাগত জানিয়েছে রেখেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। তিনি বলেছিলেন, বাবা চলে এসেছেন। ছেলেই বা পরে থাকবেন কেন!  


বাবার সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা হয়নি বলে দাবি শুভ্রাংশুর। একইসঙ্গে জানিয়ে রেখেছেন, বাবা-ছেলের রাজনৈতিক লড়াই আলাদা দলে হলেও ব্যক্তিগত সম্পর্কে তার প্রভাব প়ড়বে না। রাজনীতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়নি। দল চাইলে বাবার বিরুদ্ধে তৃণমূলের মঞ্চ থেকে জবাব দিতেও তিনি তৈরি। তাঁর দাবি, ''আগে অভিষেকের নামে তৃণমূলের কয়েকজন নেতা মুকুল রায়ের কান ভাঙাত।''


বীজপুরের বিধায়কের ওপর থেকে কি ভরসা হারিয়েছে তৃণমূল? তাঁকে কি আর বিশ্বাস করতে পারছেন না শীর্ষ নেতারা? নইলে কেনই বা এহেন অভিযোগ করতে হল শুভ্রাংশু রায়কে। তাঁর এলাকায় বাইরের লোকই বা কারা? উঠছে একাধিক প্রশ্ন।