Madhyamik Result 2024 | Jalpaiguri: বাবা দিনমজুর, মা অন্য বাড়িতে রাঁধেন! ছেলে ওভার বাউন্ডারি হাঁকাল মাধ্যমিকে...
Madhyamik Result 2024: জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাতকাটা কলোনি-সংলগ্ন জালাদিপাড়া এলাকায় বাড়ি এই তমালের। ছোটো থেকেই জীবনটা বড্ড অভাবের। বাবা দিনমজুরের কাজ করেন, মা বাড়ি-বাড়ি রান্না করেন। অতি সামান্য আয়। কোনোক্রমে চলে সংসার।
প্রদ্যুত দাস: জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বড় সাফল্য অর্জন করল তমাল দে। জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাতকাটা কলোনি-সংলগ্ন জালাদিপাড়া এলাকায় বাড়ি তমালের। ছোটো থেকেই তার জীবনটা বড্ড অভাবের। বাবা বিজন দে দিনমজুরের কাজ করেন, মা বাড়ি-বাড়ি রান্না করেন। অতি সামান্য আয়। কোনোক্রমে চলে সংসার।
তবুও ছেলের শিক্ষায় কোনো খামতি রাখতে চায়নি তমালের পরিবার। জলপাইগুড়ি সোনাউল্লা হাইস্কুলের দশম শ্রেণির এই তমালের হাতেই এসেছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। মাধ্যমিকে ৬২৬ পেয়ে দিনমজুরের পরিবারে এখন খুশির হাওয়া। তবুও আর্থিক অনটন উচ্চশিক্ষায় আরও বড়ো বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন তমালের মা। ভবিষ্যতে তমালের ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা। তমালের দিদির বক্তব্য, পরিশ্রমের ফল পেয়েছে ভাই।
সব মিলিয়ে পরিশ্রম এবং ইচ্ছে থাকলে যে সাফল্য পাওয়া যায়, সেটাই ফের প্রমাণিত হল আরও এক দিনমজুরের ঈর্ষণীয় সাফল্যের মধ্যে। সেই রকমই এক অন্য লড়াইয়ের গল্পে জড়িয়ে গিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের সুদীপা মুর্মুর নাম! তার মা-বাবা দুজনেই নিরক্ষর। তবে পরিবারের প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া সুদীপা এ বারের মাধ্যমিকে ৬০২ নম্বর পেয়ে নজির গড়েছে। তার স্বপ্ন, সে চিকিৎসক হবে। তার সাফল্যে উজ্জ্বল এলাকার মুখ, খুশি স্থানীয় মানুষজন।
আগামীদিনে সুদীপা চিকিৎসক হতে চায়। দিনমজুরির কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালান সুদীপার বাবা সুধীর মুর্মু। অভাব সুদীপার পরিবারে নিত্যসঙ্গী। দিন-আনা-দিন-খাওয়া পরিবারে বেড়ে উঠলেও ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন থেকে সরেনি সে। যদিও এখনও সে জানে না, তার সেই ইচ্ছে পূরণ হবে কি না! কিন্তু লড়াইটা সে থামায়নি। আর্থিক অনটন তার নিত্যসঙ্গী হলেও থেমে থাকেনি সে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসে রীতিমতো সফল হয়েছে!
আরও পড়ুন: West Bengal Weather Update: সোমবার থেকেই শুরু স্বস্তির বৃষ্টি! তাপপ্রবাহের দিন তবে শেষ?
পতিরাম থানার বটুন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দাশুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তথা মাদারগঞ্জ গ্রামের সুদীপা মুর্মু তার পাড়ায় প্রথম ছাত্রী, যার রেজাল্ট দেখে খুশি শিক্ষক-শিক্ষিকারা। খুশি তার পরিবার, তার বাবা-মা। কুমারগঞ্জ ব্লকের মাদারগঞ্জের এই এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। এখনও অনুন্নয়নের ছাপ সেখানে। এলাকায় হয়নি আবাস যোজনার ঘর কিংবা পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থাও। এখনও মাটির বাড়িতেই বসবাস সুদীপাদের। বর্ষাকালে চরম কষ্টের মধ্যে দিয়েই দিনযাপন করতে হয় তাঁদের বলে জানিয়েছে সুদীপার পরিবার। শুধু পড়াশোনা নয়, পাশাপাশি মাকে সাহায্য করতে সংসারের খুঁটিনাটি কাজও করতে হয় সুদীপাকে। কখনও মাঠ থেকে গরু-ছাগল নিয়ে আসা, কখনও ধান ভেজানো কখনোবা বাবাকে মাঠে গিয়ে খাবার দিয়ে আসা-- কত কাজ যে তাকে করতে হয় নিয়মিত! কিন্তু তার মধ্যেই এল সাফল্য।