কোয়ারেন্টাইনের জন্য গোটা হাসপাতালকে দান করলেন ট্যাক্সিচালক সহিদুল
চিকিৎসার অবহেলায় বোন মারুফার মৃত্যু হয়েছিল ২০০৪ সালে। হাসপাতালে ঘুরে ঘুরেও মারুফাকে বাঁচাতে পারেননি সহিদুল
কমলাক্ষ ভট্টাচার্য: সর্বস্ব দিয়ে হাসপাতাল গড়েছিলেন। এবার গোটা হাসপাতালটাই করোনা কোয়ারেন্টাইনের জন্য দিয়ে দিলেন বারুইপুরের সেই ট্যাক্সিচালক সহিদুল লস্কর। সহিদুলের আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্যের তরফে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন বারুইপুরের বিডিও মোশারফ হোসেন। হাসপাতালের পরিকাঠামো দেখে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরকে। প্রয়োজন পড়লে ৪০ থেকে ৫০ বেডের কোয়ারেন্টিন সেন্টার হিসেবে সহিদুলের হাসপাতালকে ব্যবহার করতে পারে রাজ্য।
চিকিৎসার অবহেলায় বোন মারুফার মৃত্যু হয়েছিল ২০০৪ সালে। হাসপাতালে ঘুরে ঘুরেও মারুফাকে বাঁচাতে পারেননি সহিদুল। সংকল্প নেন অবহেলায় কাউকে আর মরতে দেবেন না। বোনের স্মরণে মানুষের দান করা অর্থে বারুইপুরের পুঁরি গ্রামে অবশেষে তিলে তিলে ৩তলা হাসপাতাল গড়ে ফেলেছেন বছর পঁয়তাল্লিশের সহিদুল। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে সহিদুলের প্রশংসা করেছিলেন। ‘মন কি বাতের’ পঞ্চাশতম সম্প্রচারে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন- সরকারি কিংবা বেসরকারি, বিনামূল্যে করতে হবে করোনা পরীক্ষা, কেন্দ্রকে পরামর্শ সুপ্রিম কোর্টের
১৯৯১ সালে বারুইপুরের সীতাকুণ্ডু বিদ্যায়তন (হাই) থেকে মাধ্যমিক পাশ করে চম্পাহাটি সুশীল কর কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু অভাবের কারণে পড়াশোনা চালাতে পারেননি সহিদুল। ১৯৯৩ সালে ট্যাক্সির স্টিয়ারিং ধরেন। অবসর সময়ে কবিতা লেখেন।সহিদুলের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন প্রত্যেকেই।
বিডিও মোশারফ হোসেন জানান, এই হাসপাতালের পরিবেশ দারুন স্বাস্থ্যকর। সহিদুলের সচেতন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।” হাসপাতালের একটি ঘরেই স্ত্রী আর ছেলেকে নিয়ে থাকতেন সহিদুল। কোয়ারেন্টিন সেন্টার হলে তাদের জায়গা কোথায়? সহিদুল বলেন, “আগে মানুষগুলোর জন্য কিছু একটা করি। আমাদের থাকার ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাবে। বিডিও সাহেব অন্যত্র ব্যবস্থা করবেন বলেছেন”।