জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তিস্তায় শুক্রবার সকাল ৭ টায় জলপাইগুড়ি গজলডোবা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ ৩১৬৮.২৮ কিউসেক। তবে কোন সতর্কতা নেই বলে ফ্ল্যাড কন্ট্রোল রুম সূত্রে খবর। এদিকে তিস্তায় ফের আরও দুটি মৃতদেহ উদ্ধার। বৃহস্পতিবার রাতে তিস্তা নদী থেকে আরও দুটি অজ্ঞাতপরিচয় মৃতদেহ উদ্ধার করলো জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিস। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত তিস্তার ১০ ও ১১ নং স্পারের মাঝামাঝি এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে মৃতদেহ দুটি। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন, Basirhat Municipality: টোটো-র যন্ত্রণায় জেরবার বসিরহাট পৌরসভা, রিপোর্ট তলব বিচারপতি অমৃতা সিনহার


এদিন বিকেলে তিস্তা নদীতে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে দেহ দুটিকে দেখতে পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। তারাই খবর দেয় পুলিসকে। খবর পেয়ে ছুটে যান পুলিস, সিভিল ডিফেন্স এবং জলপাইগুড়ি পৌরসভার ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিমের কর্মীরা। কিন্তু তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান দেহ দুটি নদী পার থেকে প্রায় দু কিলোমিটার দূরে রয়েছে। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে চলে আসে NDRF এর একটি টিম।


এরপর সকলে মিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ দুটিকে উদ্ধার করে আনতে আনতে রাত হয়ে যায়। পরে দেহ দুটিকে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়ে দেয় পুলিস। অপরদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে তিস্তা থেকে সেনাবাহিনীর ব্যাবহার করা কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা রবি দাস বলেন, কাঠ কুড়িয়ে ফিরছিলাম। সেইসময় মৃতদেহ দুটি দেখতে পাই। একজন মহিলা ও একজন পুরুষের দেহ বালিতে পড়ে থাকতে দেখি।


NDRF এর আধিকারিক হার্দিক চৌধুরী বলেন, আমরা খবর পেয়ে চলে আসি। এসে দেখি পুলিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা ছিল। এরপর আমরা সকলে মিলে দেহ দুটি উদ্ধার করি। তবে জল কমলেও টটগাওয়ের বুক বেয়ে বইছে তিস্তা, পাঁচ শতাধিক মানুষ ত্রান শিবিরে। সিকিমের মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টির জেরে তিস্তা নদীতে সৃষ্টি হয় প্রবল জলোচ্ছাস। সেই জলোচ্ছাসে মাল ব্লকের তিস্তা পারের টটগাও বস্তি বিপন্ন হয়ে পড়ে। 


বুধবার ভোরে থেকে তিস্তার জল ঢুকতে শুরু করে টটগাও বস্তিতে। জলমগ্ন হয়ে পড়ে বস্তির স্কুল, মন্দির ও বাড়িঘর। পরিস্থিতি বুঝে পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের পক্ষ বাসিন্দাদের সরিয়ে আনা শুরু। প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষকে সরিয়ে এনে এলেনবাড়ি চাবাগানের প্রাথমিক স্কুলে ও ওয়াসাবাড়ি স্কুলের রাখা হয়। খোলা হয় ত্রান শিবির। তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি রাজেশ ছেত্রী ও বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ত্রান শিবিরের তদারকি করেন। 


এদিনও ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল বৃষ্টি হয়নি। তবে আকাশের মুখ ভার রয়েছে। তিস্তার জলচ্ছাস খানিকটা কমলেও দেখা গেল বস্তির গা'ঘেসে প্রবল স্রোতে বয়ে চলছে নদী। স্কুল প্রাঙ্গণ-সহ আশেপাশের এলাকায় জল জমে রয়েছে। তিস্তার ভয়ংকর রূপ দেখে মনে হল বিপদ এখনও কাটেনি। অপর দিকে এদিন ত্রান শিবিরে আশ্রিতদের পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী, কম্বল, পলিথিন চাদর দেওয়া হয়। নির্মাণ করা হয়েছে বাথরুম ও টয়লেট। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা চলছে। 


পাশাপাশি ওদলাবাড়ি কৃষ্ণ কৃপা গৌড়ীয় মঠের পক্ষ থেকে গতকাল রাতে ত্রান শিবিরে রাতের খাবার দেওয়া হয়। এই খাবার পেয়ে খুশি দুর্গতরা। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অনুপ শর্মা জানান, খানিকটা জল কমলেও বিপদ এখনো কাটেনি। গ্রামের পাশ দিয়ে বইছে। ইতিমধ্যেই বহু আবাদি জমি নদীতে চলে গেছে। পাঁচ শতাধিক মানুষ ত্রান শিবিরে আছে। তবে প্রতি বছর বর্ষায় নদী ভয়ংকর হয়ে ওঠে। গতকাল পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে উঠেছিল। তবে নদীর গ্রাস থেকে গ্রাম বাঁচতে স্থায়ী বাধ দেওয়া দরকার। সমস্ত রাজনৈতিক দলের সদস্যরাই দুর্গতদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে।



আরও পড়ুন, Bengal Weather: পুজোর আগে কমবে বৃষ্টি! আর কতদিন চলবে দুর্যোগ?


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)