নিজস্ব প্রতিবেদন: পালস্ পাওয়া যাচ্ছিল না, নিয়ন্ত্রণের বাইরে রক্তচাপ ছিল বছর বারোর কিশোরের। সেই আশঙ্কাজনক অবস্থা থেকে 'মাউথ টু মাউথ রেসপিরেশন' দিয়ে কিশোরকে বাঁচিয়ে তুললেন চিকিৎসক। করোনা পরিস্থিতিতে বিশিষ্ট চিকিৎসকের এহেন প্রচেষ্টায় প্রশংসায় পঞ্চমুখ জলপাইগুড়ির বাসিন্দারা। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ি পান্ডা পাড়া এলাকার বাসিন্দা অরুন মুখার্জীর ছেলে অনুতোষ মুখার্জীর আচমকাই খিঁচুনি হতে থাকে। এরপর অজ্ঞান হয়ে যায় ওই কিশোর। সেই অবস্থায় তাঁর মা বাচ্চাটিকে নিয়ে আসে জলপাইগুড়ি বাবু পাড়া এলাকার একটি নার্সিংহোমে। তাঁকে দেখা মাত্রই নার্সিংহোমের চিকিৎসক সিটিস্ক্যান করানোর নির্দেশ দেন। স্ক্যান করিয়ে ফের নার্সিংহোমে নিয়ে আসার পর অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই কিশোরের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। 


আরও পড়ুন:  বেতনের দাবিতে জাতীয় সড়কে অবস্থান বিক্ষোভ, হুমকি আত্মহত্যার


সেই মুহূর্তে নার্সিং হোমে রাউন্ড দিতে আসেন চিকিৎসক দেবাংশু দাস। কিশোরের শারীরিক অবস্থা দেখে ছুটে আসেন তিনি। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখেন তার পালস পাওয়া যাচ্ছে না, রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণহীন। এরপর তিনি বাচ্চাটিকে 'মাউথ টু মাউথ রেসপিরেশন' দিতে থাকেন। একই সঙ্গে বুকের উপর চাপ দিতে থাকেন। এরপর ধীরে ধীরে জ্ঞ্যান ফেরে অনুতোষের। এরপরই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আই সি সি ইউ রুমে। শুরু হয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। এরপর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হয়। এখন অনুতোষ সুস্থ আছে বলে জানান চিকিৎসক। 


ডাক্তার দেবাংশু দাস বলেন, "সেই সময় বাচ্চাটির রক্তচাপ বা পালস সহ অন্যান্য ভাইটাল প্যারামিটার কিছুই ছিল না। এরপর আমি মাউথ টু মাউথ রেসপিরেশন দিয়ে তাকে খানিকটা সুস্থ করার পর তার জ্ঞ্যান ফিরলে আই সি সি ইউতে নিয়ে যাই। তিনি আরও বলেন, "আমি একজন চিকিৎসক মাত্র। রোগীর বাঁচা বা মরা আমার হাতে নেই। আমি চেষ্টা করেছি মাত্র"। 


করোনা আবহে এই ধরনের চেষ্টা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমার বয়স পঞ্চাশ হয়ে গিয়েছে। আমি আর বড় জোর কুড়ি বছর হয়ত বাঁচবো। কিন্তু এই বাচ্চাটির বয়স মাত্র বারো। এরাই দেশের ভবিষ্যৎ তাই একজন বাবা ও চিকিৎসক হিসেবে ঐ পরিস্থিতিতে যা কর্তব্য তাই করেছি। করোনা সংক্রমণের কথা চিন্তা করিনি"।


ঘটনায় অনুতোষের বাবা অরুন মুখার্জী বলেন, "ঐ সময় আমি বাইরে ছিলাম। ওর মা নার্সিংহোমে নিয়ে আসে। ডাক্তার দেবাংশু দাস যে ভাবে এগিয়ে এসে আমার বাচ্চার প্রাণ বাঁচালেন তাতে উনি আমার কাছে ভগবানের সমান। এরকম ডাক্তার শহরে আরও থাকলে ভালো হয়"।


প্রত্যক্ষদর্শী সুজয় রায় বলেন, "এই কোভিড পরিস্থিতিতে মানুষ যখন একে অপরের থেকে দুরে সরে থাকছে, সেই সময় একজন চিকিৎসক যে ভাবে এগিয়ে এসে মুখ দিয়ে অক্সিজেন দিয়ে তার প্রাণ বাঁচালো তাতে আমরা সত্যিই অভিভূত"।