অরূপ বসাক : গত কয়েকদিন যাবত চোরের উপদ্রব বেড়েছে মালবাজার মহকুমায়। দিনে বা রাতে বাড়িতে গৃহকর্তা না থাকলেই, চোরের দল সব চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এরকম ছবি সোমবার দেখা গেল মাল ব্লকের চেল কলোনি এলাকায়। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

চেল কলোনি এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় পাল বলেন, 'আমি চেল কলোনির রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছি। সেই সময় দেখি এক অচেনা যুবক বস্তা পিঠে নিয়ে বাজারের দিকে যাচ্ছে। বস্তা প্রচন্ড ভারীর জন্য ঠিকঠাক হাঁটতে পর্যন্ত পারছে না। সন্দেহ হওয়ায় যুবকের বস্তা পরীক্ষা করে দেখি বস্তার মধ্যে চুরি করা লোহার তার, কিছু বাসনপত্র, কিছু ইমিটেশনের অলঙ্কার এবং আমাদের পাড়ার মহিলা জোৎস্না বর্মনের কিছু স্ট্যাম্প সাইজের ফটো। সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবককে ধরে জোৎস্না বর্মনের বাড়িতে নিয়ে আসি। আর জোৎস্না বর্মনকেও ফোন করে সব জানাই। এরপর ওই যুবককে কিছু মানুষ ওই বাড়িতেই বেঁধে রাখেন।'


চেল কলোনির বাসিন্দা জোৎস্না বর্মন অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করেন। সেই মতো সোমবার সকালে বাড়িতে তালা মেরে কাজে বেরিয়ে ছিলেন জোৎস্না বর্মন। বেলা ১টা নাগাদ তিনি খবর পান যে তাঁর বাড়ির দরজার তালা ভেঙে চুরি হয়ে গিয়েছে সব কিছু। এমনকি চোরও ধরা পড়েছে। তড়িঘড়ি কাজ ফেলে বাড়িতে ছুটে আসেন জোৎস্না বর্মন। এসে দেখেন, স্থানীয়রা চোরকে ধরে ঘরের খুঁটিতে বেঁধে রেখেছে। ঘরের ভিতর ঢুকে দেখেন আলমারি ভাঙা। ঘরের সমস্ত জিনিস তছনছ। সোনার হার ও নগদ উধাও। 


এরপর চোরের কাছ থেকে চুরি হওয়া এক হাজার টাকা উদ্ধার হলেও, খোঁজ মেলেনি সোনার চেনের। তাই তাকে বেঁধে রাখা হয়। পাশাপাশি, ওই যুবকের বাড়িতেও ফোন করা হয়। ইতিমধ্যে, এদিন এক অন্য চিত্র দেখা গেল জোৎস্না বর্মনের বাড়িতে। তিনি আশেপাশের লোকজনকে বলেন, কেউ এই যুবককে মারধর করবেন না। আমি চাই আমার যা ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করুক ওই যুবকের বাড়ির লোক। এরপর জোৎস্না বর্মন বাড়ির বারান্দায়  ক্ষুধার্ত চোরকে খেতেও দেন। 


মেনুতে ছিল মাছের ঝোল, কচুর শাক, ডাল ও লাউ চিংড়ি।  জ্যোৎস্না বর্মন বলেন, ওই যুবকের খিদে পেয়েছে দেখে আমার খাবারই তাকে দিয়ে দিলাম। সে সুস্থ থাকুক। কিন্তু আমার সোনার চেন যেন ফিরিয়ে দেয় তার বাড়ির লোক। পেট ভরে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে তারপর একটি ছোটো ঘরে চোর বাবাজিকে আটকে রাখা হয়। কারণ যতক্ষণ না ওই যুবকের বাড়ির লোক এসে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে, ততক্ষণ তাকে ছাড়া হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন জ্যোস্না বর্মন। 


এব্যাপারে চুরি করতে আসা যুবকের নাম অমর সাহানি বলে জানা গেছে। তার বক্তব্য,  আমি এবং আর একজন এই সব এলাকায় লোহা টিন কুরাতে এসেছিলাম। আমার সঙ্গে আর একজন যে সঙ্গি ছিলো, সে এইসব কাজ করেছে। তবে স্থানিয়দের বক্তব্য সব মিথ্যে কথা বলছে এই যুবক। সকালেও অন্য একজায়গায়  লোহার তার চুরি করতে এসে মারধরও খেয়েছে সে। এই সব যুবকেরা নেশায় আসোক্ত।  এই ভাবে বিভিন্ন বাড়িতে চুরি করে যা পায়, সেইসব জিনিস বিক্রি করে নেশা করে বলে স্থানিয়দের অভিযোগ। 


আরও পড়ুন, 'ভোগ করেছেন সবই', কীসের 'টানে' পার্থর কুকীর্তিতে জড়ান অর্পিতা? আদালতে ফাঁস করল ইডি!



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)