DVC-র জলে বাংলায় `ম্যানমেড বন্যা`, মোদীর হস্তক্ষেপ চেয়ে সংসদে সরব তৃণমূল
ওয়েব ডেস্ক : ডিভিসির জলে ভাসছে বাংলা। 'ম্যানমেড বন্যা'র অভিযোগে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে সংসদে সরব হল তৃণমূল। জলাধারগুলির পলি সরাতে বাড়তি অর্থ বরাদ্দের দাবি করলেন সাংসদরা। দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ যাই হোক না কেন, ঝাড়খণ্ডে অতিবৃষ্টি হলেই বাংলার বিপদ। ছোটনাগপুর মালভূমি থেকে নেমে আসা ভরা নদীর জল ভাসিয়ে দেয় দুকুল। ঝাড়খণ্ডের জলাধারগুলি জল ছাড়তে শুরু করলে সেই জল নেমে এসে গিলে খায় এ রাজ্যের গ্রাম-জনপদ।
ঝাড়খণ্ডে DVC-র চারটি জলাধার। তিলাইয়া, কোনার, মাইথন এবং পাঞ্চেত। এ ছাড়াও রয়েছে ঝাড়খণ্ড সরকারের পরিচালনাধীন তেনুঘাট জলাধার। এই জলাধারগুলি থেকে বাড়তি জল ছাড়া হলেই দুর্গাপুরের ওপর চাপ বাড়ে। দুর্গাপুর ব্যারাজ বাড়তি জল ছাড়তে বাধ্য হলে হাওড়া, হুগলি-সহ একাধিক জেলা ভাসে দামোদরের জলে।
দুমকার ম্যাসাঞ্জোর ড্যাম জল ছাড়লে ভয়ঙ্কর চেহারা নেয় ময়ূরাক্ষী। তখন নিম্ন অববাহিকার তিলপাড়া ব্যারাজকেও বাড়তি জল ছাড়তে হয়। ভেসে যায় বীরভূমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ঝাড়খণ্ড-ঝাড়গ্রাম সীমানা দিয়ে বাংলায় ঢুকেছে সুবর্ণরেখা। চাণ্ডিল ও গালুডি বাড়তি জল ছাড়লে সুবর্ণরেখা ভাসিয়ে দেয় গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রাম, সাঁকরাইল-সহ পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা।
সমস্যা সমাধানে ফি-বছর DVC এবং ঝাড়খণ্ড সরকারের সঙ্গে কথা হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। কিন্তু, পরিস্থিতি রয়ে যায় সেই তিমিরেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষার গোড়া থেকেই যদি ঝাড়খণ্ডের জলাধারগুলি একটু একটু করে জল ছাড়তে শুরু করে তা হলে ভারী বৃষ্টির সময় একসঙ্গে বেশি জল ছাড়ার প্রয়োজন কমে। পলি সরানোর কাজ ঠিকমতো হলে জলাধারগুলির জলধারণ ক্ষমতা বাড়বে। তাহলে ঝাড়খণ্ডের জলে বাংলার বিপদের আশঙ্কা কমবে।
যদিও, এগুলির কোনওটিই না হওয়ায় এবারও দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার ভ্রুকুটি। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সংসদে সরব হয় তৃণমূল। নবান্নের অভিযোগ, নিম্ন দামোদরে কাজের জন্য রাজ্য সরকার বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট কেন্দ্রকে জমা দিলেও মিলছে না অর্থ। উন্নয়নে ভারসাম্যের অভাব দূর করতে খোদ প্রধানমন্ত্রী পূর্বাঞ্চলের দিকে তাকানোর কথা বলছেন। এরপরও কেন উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাবে ফি-বছর ভাসবে বাংলা? প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ।