নিজস্ব প্রতিবেদন: 'আমি দলিত'-- হাথরস-কাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতার বিক্ষোভ-মঞ্চ থেকে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বোঝাই যাচ্ছে, নিছক আবেগের বশে সে কথা বলেননি তিনি। জানা গিয়েছে, এ রাজ্যের দলিতদের নিয়ে তৃণমূলের নির্দিষ্ট কর্মসূচিও রয়েছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

হাথরস-কাণ্ডকে সামনে রেখে এ বার দলিতদের নিয়ে আলাদা করে ভাবছে তৃণমূল। সংখ্যালঘু ভোট, আদিবাসী ভোটের মতো এ বার রাজ্যের দলিত ভোট নিয়েও ভাবনা-চিন্তা শুরু করল তারা। গোটা অক্টোবর মাস জুড়ে গ্রামে-গ্রামে চলবে দলিতদের নিয়ে নানা রকম কর্মসূচি।


কেন হঠাৎ এই দলিত-চিন্তা? 


২০১৯-এর ভোটে আশানুরূপ ফল হয়নি তৃণমূলের। তখনই তৃণমূলের থিঙ্কট্যাঙ্কের তরফে ভোট-ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছিল, ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৮৪ টি-তেই দলিতদের ভাল প্রভাব আছে। শতাংশের হিসেবে এ রাজ্যের মোট ভোটের নিরিখে দলিত ভোট ২৯ শতাংশ। ২০১৯-এর ভোট-নিরীক্ষা করতে গিয়ে তৃণমূল খেয়াল করে, ওই ৮৪টি-র মধ্যে বিজেপি এগিয়ে ৩৪টি আসনে, তারা নিজেরা এগিয়ে ৩৩টি আসনে। তখন থেকেই দলিত-ভোটকে নিজেদের দিকে টেনে রাখার ভাবনাচিন্তা শুরু করে তৃণমূল।


ভোট-অঙ্কে চিরকাল মুসলিম-ভোটই গুরুত্ব পেয়ে এসেছে। আর কিছুটা আদিবাসী ভোট। কিন্তু দলিত-ভোটও যে 'ফ্যাক্টর' হতে পারে, এই সত্যটা ২০১৯-য়েই তৃণমূল উপলব্ধি করে। কাজও শুরু করার কথা ভাবে। গত মার্চে শুরুও হয়েছিল 'বাংলার গর্ব মমতা' ক্যামপেইন। সেখানে দলিত-ভাবনা ছিল। কিন্তু করোনা-প্রভাবে তা স্থগিত থাকে। 


হাথরস-কাণ্ড বিষয়টার ওপর নতুন করে জোর দেওয়ার লগ্ন বোধ হয় সামনে এনে দিল তৃণমূলের। রাজ্যের দলিত-প্রভাবিত গ্রামে গিয়ে এ বার থেকে তৃণমূলের দলিত নেতারা রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য কী ভালো কাজ করছে তা জানাবেন। মনে করিয়ে দেওয়া হবে, বিজেপি দলিতদের জন্য কিছুই করছে না। শুধু তাই নয়, বিজেপি যে দলিতদের ওপর অত্যাচার করছে, সেটাও সামনে আনা হবে। অক্টোবর মাস জুড়ে বাংলার গ্রামে-গ্রামে চলবে এই কর্মসূচি। দলিত নেতারা সংশ্লিষ্ট গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূলের ভোট-প্রচার চালাবেন। প্রত্যেকের সঙ্গে দেখা করবেন। ছোট ছোট সভা করবেন। তাঁরা দলিতদের বোঝাবেন, বিজেপি তাঁদের দল নয়, বিজেপি উচ্চবর্ণের দল। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী যে-সব ক্ষেত্রগুলি সাধারণত থাকে, সেই সব জায়গাতেও তৃণমূল প্রভাবশালীদের সঙ্গে দেখা করবে, বৈঠক করবে, স্পষ্ট করবে নিজেদের অবস্থান।


করোনাকালে তৃণমূলের প্রচার-প্রকল্প সাময়িক থেমে গিয়েছিল ঠিকই। এবং এখন হাথরস-কাণ্ডের পরে আবার তা নতুন রূপে আরও জোরদার হয়ে ফিরে এল তা-ও ঠিক। তবে, এখানে ছোট্ট একটা তথ্য দেওয়ার আছে। এই অবসরেই কিন্তু তৃণমূল সরকার এ রাজ্যে দলিত সাহিত্য আকাদেমি প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। ফলে বলতেই হবে, সব দিক দিয়েই তৃণমূল দলিতদের নিয়ে কোমর বেঁধেছে। 


আরও পড়ুন: ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে? আরএসএস প্রধানের বড় বয়ান