নিজস্ব প্রতিবেদন:  বেগুনি রঙের অর্থ কী?


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রং-বিশেষজ্ঞেরা সাধারণত বলে থাকেন, বেগুনির মধ্যে আসলে মিশে থাকে লালের শক্তি ও সক্ষমতা এবং নীলের আধ্যাত্মিকতা ও সম্প্রীতির গুণধর্ম। 


বেগুনি রঙের সঙ্গে বাংলার রাজনীতির কোনও যোগ আছে?


সুদূরতম যোগাযোগ আছে বলেও মনে করা যাচ্ছে না। নীল আমাদের কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতীক-রং নয়। লাল বামেদের। সবুজ কংগ্রেস এবং তৃণমূলের। গেরুয়া বিজেপির।


দোল নয়, তবু রঙ-চর্চার এই প্রশ্ন উঠছে, কারণ, আজ নবান্ন অভিযানকামী বিজেপিকর্মীদের প্রতিরোধ করতে তৃণমূল সরকার যে-জলকামানের ব্যবস্থা করেছে, তার জলে মেশানো হয়েছে বেগুনি রঙ!


রঙের কারণ একেবারেই যে নেই, তা-ও হয়তো নয়। সরকার এই রঙ-জল ছুঁড়ে হয়তো বোঝাতে চাইছে-- ওহে বিরোধী, মিছে ঝামেলা বাঁধাতে এসো না, আমি কিন্তু শক্তি-সামর্থ্য-আধ্যাত্মিকতায় সংহত এক অস্তিত্ব, আমাকে ঘাঁটিও না। 


বাইরের কারণ অবশ্য আছে। এবং সেটা যে কোনও রঙের ক্ষেত্রেই খাটে। কোথাও প্রতিবাদীদের দিকে জলকামান ছুঁড়লে পরে সেই সূত্র ধরে যাতে তাদের চট করে চিহ্নিত করে ফেলা যায়।


কিন্তু আজ বাংলায় পরিস্থিতি কী?


রাজ্য সরকার গতকাল বিকেলেই ঘোষণা করে দিয়েছিল, নবান্ন জীবাণুমুক্ত করা হবে, তাই বন্ধ থাকবে। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে বিজেপির এই নবান্ন অভিযানের আর কোনও অর্থই হয় না। তবু দু'তরফেই পেশিশক্তির প্রদর্শন রয়েছে। আর সেই সূত্রেই এই রঙখেলা।



এই রঙ-চর্চার অবসরে আপাতত কী বলছেন বিজেপি নেতৃত্ব?


দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভ্যাস আছে যখন-তখন লকডাউন করা। আজকে লকডাউন করবেন আমরা জানতাম না। হঠাৎ লকডাউন হয়ে গিয়েছে। সারা ওয়েস্ট বেঙ্গলে সাধারণ ধর্মঘটের মতো অবস্থা। কলকাতা সারা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সমস্ত হাইওয়ের মোড়ে-মোড়ে রাস্তা-ঘাটে হলদিয়া, বর্ধমানে পর্যন্ত পুলিশ বিজেপি সমর্থকদের আটকাচ্ছে।' দিলীপ আরও বলেন, 'এত ভয় পাওয়ার কী আছে? এমনিতে নবান্ন বন্ধ করে আপনারা চলে গিয়েছেন। তার পরেও কি ভাবছেন, নবান্ন ভেঙে ফেলা হবে? যা আসার তার চার ভাগের এক ভাগ লোক আমরা নিয়ে আসছি। সেটাকে সরকার এত ভয় পাচ্ছে যে, হাইওয়ে জ্যাম করে কলকাতায় ঢুকতে দিচ্ছে না। অভিনব ব্যবস্থা। আমার মনে হয় ওরা বিজেপিকে সত্যি সত্যি ভয় পাচ্ছে।'



মুকুল রায় এই তৃণমূল সরকার নিয়ে খুবই হতাশ। তাঁকে সকালের দিকে একবার ধরা হলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তিনি দিল্লি ছিলেন। আজকের অভিযানে যুবমোর্চার দায়িত্ব তাঁর। শুনছি, সর্বত্র বিজেপি সমর্থকদের আটকানো হচ্ছে। তিনি বলেন, 'কোনও সরকার যখন প্রশাসন-নির্ভর হয়ে দাঁড়ায় তখন তার ভবিষ্যৎ খুবই খারাপ ধরে নিতে হবে।' 


কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও প্রায় একই সুরে সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, 'শুনছি নবান্ন স্যানিটাইজেশন হবে বলে বন্ধ। আমরা বলছি, নবান্ন কেন এই সরকারের স্যানিটাইজেশন দরকার। সিন্ডিকেট-রাজ থেকে, দুর্নীতি থেকে শুদ্ধ মুক্ত হোক এই সরকার। এখানে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছি। কিন্তু আমাদের সমর্থকদের ওপর পুলিস লাঠিচার্জ করছে। এটা প্রজাতন্ত্রের হত্যা। এখানে ভ্রষ্টাচার চলছে। অরাজকতা চলছে।'


তা হলে কী বোঝা গেল? 


তোমারই রঙ তোমার থাকুক বলে বিজেপি নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বেরঙ সমালোচনাই করলেন।


আরও পড়ুুন: সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই, বিজেপির অভিযানে শিকেয় বিধিনিষেধ