নিজস্ব প্রতিবেদন: মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারিতে আবার চাঞ্চল্যকর মোড়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের দুই সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগেই থানায় আত্মসমর্পণ করলেন বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারির অভিযুক্ত তৃণমূল নেত্রী তথা হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির নারী-শিশু ত্রাণ কর্মাদক্ষ রোশনারা খাতুন। সোমবার সকালে তিনি থানায় আত্মসমর্পণ করেন। সোমবারই তাকে মালদহের চাঁচল মহকুমা আদালতে তুলবে পুলিশ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

অভিযুক্ত রোশনারা খাতুন জানান তিনি এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত নন। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। মাস্টার রোলের তার সই জাল করা হয়েছে এবং এর পিছনে বড় মাথা রয়েছে। এর আগে তিনি ২০১৯ এবং ২০২১ সালে এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনি থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন এবং পুলিস তদন্ত করলে সব বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।


গত সপ্তাহের শেষে হরিশ্চন্দ্রপুর বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারির আরেক অভিযুক্ত বরুই অঞ্চলের তৃণমূল নেতা আফসার হোসেন আত্মসমর্পণ করেন। তিনিও জেরার মুখে জানিয়েছিলেন দলের বড় নেতারা এর পিছনে রয়েছে। তিনি নির্দোষ এবং তাকে ফাঁসানো হয়েছে। গত সপ্তাহে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বর্তমানে তাকে দশ দিনের পুলিস রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।


প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকে ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দুই দফায় ১৩ কোটি টাকা স্যাংশন হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ এই টাকা প্রকৃত বেনেফিশিয়ারি না পেয়ে বেশ কিছু তৃণমূল নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের পকেটে গিয়েছে। এর মধ্যে পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে।


বিরোধীদের অভিযোগ ২০১৭ সালের বন্যায় সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৭০ হাজার এবং আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৩,৩০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। মালদহ জেলার জন্য মোট ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু ভুয় অ্যাকাউন্ট তৈরি করে বেশিরভাগ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছিল ক্ষমতাশালী এই তৃণমূল নেতা এবং বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ একাধিক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে। ৭৬ লক্ষ টাকা গরমিল ধরা পড়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে। ভিন রাজ্যের বিভিন্ন বাসিন্দাদের একাউন্টে এই টাকা পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।


উত্তর মালদার সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রুপেশ আগরওয়াল বলেন, এদের প্রত্যেককেই আত্মসমর্পণ করতে হবে। যে ভাবে বন্যা দুর্গত মানুষদের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি করেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আদালত জামিনের আবেদন খারিজ করেছে তাই আত্মসমর্পণ করা ছাড়া উপায় নেই। তিনি আরও বলেন যে শুধু বন্যার ত্রাণ কেলেঙ্কারি নয় প্রত্যেকটা সরকারি প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতিতে যুক্ত শাসক দল। কিছু দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তদন্তে নামবে তখন সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। শাসকদল পরিচালিত প্রত্যেকটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ,উপ-প্রধান ফাঁসবে বলে দাবি করেন তিনি।


আরও পড়ুন: Katwa: খাটে মেয়ে; মেঝেতে মৃত স্ত্রী, সিলিংয়ে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে যুবক, চাঞ্চল্য কাটোয়ায়


মূল অভিযোগকারী বরুই গ্রাম-পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন,দুইজন আত্মসমর্পণ করল। আরও একজন বাকি আছে। এরা প্রত্যেকেই কেলেঙ্কারিতে যুক্ত। বন্যা কবলিত অসহায় মানুষদের জন্য পাঠানো কোটি কোটি টাকা এরা আত্মসাৎ করেছে। তাই সুপ্রিম কোর্টের কাছে জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। আইনের উপর আমাদের আস্থা রয়েছে। কঠোর শাস্তির দাবী জানাই।


তৃণমূল নেতা তথা হরিশ্চন্দ্রপুরের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, আমাদের পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধক্ষ্যা রোশনারা খাতুন আত্মসমর্পণ করেছেন। ওনারা বন্যা দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিডিও অভিযোগ দায়ের করেন। সুপ্রিম কোর্ট জামিনের আবেদন খারিজ করেছে। তাই আত্মসমর্পণ ছাড়া উপায় নেই। দল কোন রকম দুর্নীতি মেনে নেবে না। আইন আইনের পথে চলবে।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)