জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্ব থেকেই সংঘর্ষে দীর্ণ বাংলা। নির্বাচনের দিনই রাজ্যে খুন হয়েছেন ২১ জন। মনোনয়ন পর্বে খুন হন ১৬ জন।  বিরোধীদের তরফে এক্ষেত্রে দায়ী করা হয়েছিল তৃণমূলের সন্ত্রাসকে। কিন্তু সেই সন্ত্রাসকে পেছনে ফেলে রাজ্যজুড়েই হুহু করে এগোচ্ছে ঘাসফুল শিবির।  জয় ও এগিয়ে থাকার নীরিখে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির লড়াইয়ে তৃণমূলের আসেপাশে নেই বিজেপি-সহ বিরোধীরা। জেলা পরিষদের কোনও স্পষ্ট ছবি এখনও আসেনি। তবে শাসকদল ভোটের ফলে এগিয়ে থাকলেও এবার ভোটে যেভাবে রক্ত ঝরেছে তা এড়িয়ে যেতে পারে না শাসকদল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-কুড়মি আন্দোলন, বিজেপির উন্নয়ন কর্মসূচির মধ্যেই জঙ্গলমহলে এ কি তৃণমূলের পুনরুত্থান?


আাগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের জন্য অ্যাসিড টেস্ট ছিল উত্তরবঙ্গ। সেই পরীক্ষায় অনকটাই সফল তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তরবঙ্গের হারানো জমি অনেকাংশেই পুনরুদ্ধারের সক্ষম তৃণমূল। উত্তরে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর- সর্বত্রই এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস। আলিপুরদুয়ারে ১২৫২ আসনের মধ্যে ৫১৩ আসনের ফল প্রকাশ হয়েছে। তার মধ্যে তৃণমূল ৩৪৫, বিজেপি ১৩৬, বাম ১৬, কংগ্রেস ৩,অন্যান্য ১১ আসন পেয়েছে। প্রায় একই অবস্থা জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলের হিসাবে তৃণমূল এগিয়ে ছিল ২৫টি আসনে এবং বিজেপি ১৯টি কেন্দ্রে। লোকসভা ভোটের সময় থেকেই উত্তরবঙ্গে তৃণমূলে ধস নামে। সেখানে বিজেপির জমি শক্ত হয়। যে ধারা অব্যাহত ছিল একুশের বিধানসভা ভোটেও। কিন্তু এবার পঞ্চায়েতে উত্তরবঙ্গে বিজেপির জয়ের রথ ধাক্কা খেল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত এই জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার যাত্রা। ভোটের ফলাফল সামনে আসতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যুইট করেছেন, একজন বলেছিল নো ভোট টু মমতা। এখন দেখা যাচ্ছে মানুষ বলছেন, নাউ ভোট ফর মমতা।


অনুব্রত মণ্ডল জেলে যাওয়ার পর বিরোধী মহলের মধ্য থেকে গুঞ্জন উঠেছিল এবার ভাঙবে অনুব্রত গড়। কিন্তু এখনওপর্যন্ত পঞ্চায়তের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে বিরোধীরা ৬টি পঞ্চায়েত দখল করলেও জেলার নীরিখে সেই ফল তৃণমূলের সহ্গে কোনও তুলনাতেই আসে না। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের যেসব কর্মী সারা বছর দলের জন্য খেটেছেন তাদের পছন্দের প্রার্থী করা হয়নি। এনিয়ে দলের মধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে। কিন্তু সেই  ফাঁকফোকর দিয়ে বিরোধীরা তাদের রাস্তা বের করতে পারেনি। বীরভূমে চল্লিশ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছেন তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য কাজল সেখ। বগটুইয়ের মতো জায়গাতেও জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বীরভূমে জেলা পরিষদের ১১ আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ৪৯০ আসনের পঞ্চয়েত সমিতির ২৩৪ আসনে জয়ী হয়েছে তারা।


জঙ্গলমহলে যতটা খারাপ ফল হওয়ার কথা বিরোধীরা বলেছিল তার তেমন কোনও প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। পুরুলিয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৪৭৬ আসনের মধ্যে ইতিমধ্যেই ১২২৬ আসনে জয়ী হয়েছে ঘাসফুল শিবির। বিজেপি সেখানে পেয়েছে ২৭৪ আসন। বামেরা সেখানে পেয়েছে ১৩২ আসন। অন্যানরা পেয়েছে ১৫৯ আসন। বাঁকুড়াতেও এক ছবি। গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন ৩১২৯। সেখানে তৃণমূল পেয়েছে ২০২৭টি আসন।


বিরোধীদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারীর নন্দীগ্রামে ভালো অবস্থায় বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, শাসকদলের অত্যাচারের জবাব দিয়েছে নন্দীগ্রাম। অন্যদিকে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের জবাব, নন্দীগ্রামে বিজেপি ভালো ফল করেছে। কিন্তু গত বিধানসভার নীরিখে ভালো ফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, সবমাত্র জেলা পরিষদের ফলও প্রকাশ হতে শুরু করেছে। সম্পূর্ণ ফল সামনে আসতে বেশকিছু সময় লাগবে। তবে অধিকাংশ জেলাতেই বিরোধীদের থেকে অনেকটা এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)