শুভপম সাহা


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দু-তিন দিনের জন্য কাছে-পিঠে কোথায় যাওয়া যায়? ব্যস্ত জীবনের জাঁতাকলে পড়া বাঙালি প্রায়ই  নিজেকে কিংবা পরিচিতকে এই প্রশ্ন করে থাকেন! সময়ের অভাবেই মূলত এখনও বাঙালির চেনা ডেস্টিনেশন মূলত দিঘা, মন্দারমণি বা বকখালিই। ভ্রমণপিপাসু বাঙালিকে এই জায়গাগুলি নিয়ে নতুন করে একটি কথাও বলার নেই। বারবার যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে এখন এই সব জায়গা নিয়ে আস্ত এক প্রবন্ধও লিখে ফেলতে পারবেন তাঁরা। এর উপর ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ট্র্যাভেল গ্রুপ রয়েছে, যেখানে ঘোরাফেরার যাবতীয় সুলুকসন্ধান মজুত। 'ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলি'বার অপেক্ষা। 


আসুন, আজ বরং একটা অফবিট জায়গার কথা বলি। যেখানে আক্ষরিক অর্থেই ঘর হতে দুই পা ফেলিয়া পৌঁছে যাওয়া যাবে। এ জায়গাটিতে লোকজন সাধারণত গিয়ে রাত কাটান না। ডে-আউটিংয়ে গিয়ে ঘুরে চলে আসেন। অথচ এ জায়গাটিও হতে পারে এক পুরোদস্তুর ট্রাভেল ডেস্টিনেশন। 


উদয়পুর!উদয়পুর সৈকত। দিঘার খুব কাছেই। জায়গাটা এখনও তত ট্রেন্ডি নয়। বিচটা নিয়ে সেভাবে কথাও হয় না। কিন্তু তবুও কেন মন ভালোর অক্সিজেনের জোগানদার হিসাবে উদয়পুরকে বেছে নেওয়া যেতে পারে? দিঘা বা নিউ দিঘায় সব চেয়ে বড় সমস্যা ভিড়। আর উদয়পুরের সব চেয়ে বড় আকর্ষণ নির্জনতা। দিগন্ত বিস্তৃত সি-বিচ। লোকজন কম। বোল্ডারের বাধা না থাকায় শতকরা একশো ভাগ উপভোগ করা যায় সমুদ্রস্নান। তবে স্নানের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখাটা জরুরি। একটা সময়ে উদয়পুর বিচে স্নান করতেন না ট্যুরিস্টরা।


তবে স্নান হোক বা না হোক, আজ সমুদ্র! এদিকে ভিটামিন 'সি' (সমুদ্র) পেলেই বাঙালির মনটা বেশি করে যেন মাছ-মাছ করে ওঠে। উদয়পুরে মাছের সমারোহ। টাটকা চিংড়ি, কাঁকড়া, পমফ্রেট, ভেটকির কোনও অভাব নেই। সমুদ্রের ধারেই রয়েছে একাধিক গুমটি। যেখানে মাছ বেছে কিনে নেওয়া যাবে। ভাজা তো মেলেই। দোকানিরাই দুরন্ত সব পদও রেঁধে দেন-- পমফ্রেট ফ্রাই, কাঁকড়া কষা কিংবা চিংড়ির গা-মাখা ঝাল। স্বাদ মুখে লেগে থাকবে। হলফ করে বলা যায়, অনেক তথাকথিত নামীদামি রেস্তোরাঁও এই সব গুমটির সামুদ্রিক রান্নার স্বাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে না। আর যাঁরা সুরার রসে-বশে থাকেন তাঁদের জন্যও উদয়পুর পছন্দের। কারণ এখানে তাঁরা পেয়ে যাবেন 'চিলড' বিয়ার। ব্র্যান্ড বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা থাকে না অবশ্য। 


উদয়পুরে আরও এক বিশেষ আকর্ষণ আছে। চেয়ারে বসে সমুদ্রের জলে পা ডুবিয়ে অতল জলরাশি দেখা। এর যে অনুভূতি, তা সচরাচর সি-বিচগুলিতে পাওয়া যায় না। আর সন্ধ্যায় চাঁদের আলোর বিচ্ছুরণ যখন খেলে যাবে সমুদ্রের ফেনিল জলে তখন মনে হবে 'মেজাজটাই আসল রাজা'। আপনার সঙ্গে পরিবারের ছোট সদস্য এলে তার জন্যও রয়েছে বিনোদনের আয়োজন। বিচে রয়েছে ব্যাটারিচালিত রিমোট গাড়ি। খুদের মন ভাল করে দেবে এর এক চক্কর। এমনকি বড়দের জন্যও রয়েছে স্কুটার বা বাইকের আয়োজন। আধ ঘণ্টা বা ঘণ্টাখানেকের জন্য ভাড়া করে নিয়ে সি-বিচে দীর্ঘক্ষণ চালানো যায়। সব মিলিয়ে উদরপুরের সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা  ভালই। 


কী ভাবে যাবেন? 


দিঘা যাওয়ার বাসে বা ট্রেনে চেপে দিঘা পৌঁছে যান। তারপর সেখান থেকে কাঠের গাড়ি নিয়ে চলে যান উদয়পুর সৈকত। আর আপনি দিঘা বা নিউ দিঘায় উঠলে সেখান থেকে রিকশা করেই চলে যান উদয়পুর। মিনিট পনেরোর মধ্যেই উদয়পুর সৈকত। 


কোথায় থাকবেন?


থাকার জন্য উদয়পুরে বাছাবাছির অপশন নেই। এখানে একটাই ভালমানের থাকার জায়গা। অনলাইন বুক করে যাওয়া চলে। ভিড় থেকে একটু 'অ্যাওয়ে' এই হোটেলে থাকাটাও প্লেজার। কোনও ভাবে এখানে ঠাঁই না মিললে দিঘা বা নিউ দিঘা তো রইলই।


(Zee 24 Ghanta App: দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)


আরও পড়ুন: #ভ্রমণ: এই শীতের ছুটিতে চলুন সুন্দরী কমলার দেশে