মনোরঞ্জন মিশ্র: গঙ্গাসাগর যাওয়া হল না। পুরুলিয়ায় নিগৃহীত ৩ সাধু ও তাদের সঙ্গীদের ফেরত পাঠানো হল উত্তরপ্রদেশ। তাঁদের ফেরার ব্যবস্থা করলেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্য়োতির্ময় সিং মাহাতো। সাধুদের প্রহারের প্রতিবাদে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে সামিল হল বিজেপি নেতাকর্মী সমর্থকরা। কাশীপুরে পর এবার পুরুলিয়া সদর থানার বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ করল বিজেপির। মারধরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানালেন বিক্ষোভকারীরা। থানার মূল গেটের বাইরে চলে অবস্থান বিক্ষোভ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-'সিপিএমের বিরুদ্ধেও কম লড়াই করিনি; বাড়িতে কখনও পুলিস আসেনি', ইডি তল্লাশি নিয়ে সরব তাপস


উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশ থেকে গঙ্গাসাগর যাচ্ছিলেন ৩ সাধু ও তাঁদের রাঁধুনি, গাড়ির চালক। বৃহস্পতিবার তাঁরা পুরুলিয়ার কাশীপুরের গৌরাঙ্গডি গ্রামে গঙ্গাসাগর যাওয়ার রাস্তা জিজ্ঞাসা করেন। তার পরই আচমকা গুজবের জেরে তাদের উপরে চড়াও হন গ্রামবাসীদের একাংশ। সাধুদের গাড়িতে ভাঙচুর চলে। কাশীপুর থানার পুলিস গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য থেকে শুরু করে  সর্বভারতীয় বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডা এনিয়ে সরব হন। নিগৃহীত সাধুদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুকান্ত মজুমদার। নাড্ডা সরাসরি প্রশ্ন তোলেন বাংলার গেরুয়া রঙে সমস্যা কীসের?


পুরুলিয়ার সাধুদের নিগ্রহের ঘটনায় এখনওপর্যন্ত মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে ৭ জনের ৫ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে। এনিয়ে পুরুলিয়া জেলা পুলিস সুপার বলেন, কাশীপুরে গৌরাঙ্গডিতে ৩ জন সাধু ও তাদের সঙ্গীরা গঙ্গাসাগর যাচ্ছিলেন। সেইসময় এলাকার ৩ নাবালিকা স্থানীয় কালী মন্দিরে পুজো দিতে যাচ্ছিলেন বলে আমরা খবর পাই। গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাদের ওই সাধুরা কিছু জিজ্ঞাসা করে। তাতেই কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়। ওইসব মেয়েরা চিত্কার করতে থাকে, কোনও খারাপ উদ্দেশ্যে তাদের ফলো করেছে সাধুরা। এলাকার মানুষজন জড়ো হয়ে যায়। স্থানীয় দুর্গামন্দির এলাকায় নিয়ে গিয়ে গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়। সাধুদের নিগ্রহ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিস গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। তাদের সব রকমের সহায়তার করা হয়। তাদের আইনি সহায়তা দেওয়া হয়। ১২ জনকে ওই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের খোঁজ চলছে। এলাকায় পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ।


এক সাধু সংবাদমাধ্যমে বলেন, ভাষা বুঝতে পারছিলাম না। পুলিস আর কিছুক্ষণ দেরিতে এলে আমার প্রাণ চলে যেত। এক ব্যক্তি হাত দেখিয়ে আমাদের গাড়ি থামান। আমাদের বলা হয়, একজন আসছে আপনাদের কিছু দেবে। এরপর কয়েকজন মহিলা চলে আসেন। এরপর কয়েকশো মানুষ জড়ে হয়ে যায়। এরপর মারধর শুরু হয়ে যায়। ওরা বলতে থাকে আমরা মহিলাদের সঙ্গে খারাপ ব্য়বহার করেছি।


সাধুদের ঘটনা নিয়ে সরব রাজ্যপাল। তিনি বলেন, যা হয়েছে তা অসম্মানজনক। এমন সময় ওই ঘটনা ঘটেছে যখন অযোধ্যা নিয়ে মানুষ উজ্জীবিত। এখন রিপোর্ট চাওয়ার সময় নয়। অ্যাকশন নেওয়ার সময়। এনিয়ে অবশ্য মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, চারজন সাধু ছিলেন। তার নাগা সন্ন্যাসী। এদের মধ্যে একজন নগ্ন সন্ন্যাসী ছিলেন। বাকীদের পরিধানও স্বল্প ছিল। একটি বাচ্চা মেয়ের অভিযোগ ছিল ওই সাধুদের ব্যবহার অন্যরকম ছিল। তাতেই রুষ্ঠ হয়ে ওই হিন্দু এলাকার হিন্দুরাই সক্রিয় হয়েছিলেন। যে ১২ জনকে ধরা হয়েছে তারা সবাই হিন্দু। সুতরাং যা বলা হচ্ছে যে সাধুসন্তদের অপমান করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। 


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)