Visva-Bharati: `কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের মাঝে স্যান্ডউইচ হচ্ছি`, বিস্ফোরক উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী
`সিপিএম, তৃণমূলের মদতে এসব হচ্ছে`।
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'আমি রাজনীতির শিকার। কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের মাঝে স্যান্ডউইচ হচ্ছি'। বিস্ফোরক বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। জি ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন, 'সিপিএম, তৃণমূলের মদতে এসব হচ্ছে'।
পাঠভবনের পড়ুয়ার মৃত্যুতে উত্তাল বিশ্বভারতী। স্রেফ ধর্ণা আর ক্লাস বয়কট নয়, গতকাল শুক্রবার রাতে উপাচার্যের বাড়ির গেটের তালা ভেঙে বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিবারের লোক ও পড়ুয়ারা। এমনকী, দেহ নিয়ে ঢুকে যান বাড়ির ভিতরেও! এদিন সকালে উপাচার্যের বাড়ির সামনে এসেছিল বাইকবাহিনী। পুলিসে তাড়া খেয়ে পালিয়ে যান একদল যুবক।
আরও পড়ুন: সাধের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত পছন্দের সহকর্মীরা; ক্ষোভে মারপিট স্কুলে, জ্ঞান হারালেন প্রধান শিক্ষিকা
কেন এমন পরিস্থিতি বিশ্বভারতীতে? জি ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া সাক্ষাৎকার উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, 'সাদা চোখে যদি দেখা যায, তাহলে নেতৃত্ব আছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আর এসএফআই। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মেন পার্টি তৃণমূল কংগ্রেস, আর এসএফআই-র মেন পার্টি সিপিএম। এদের এত সাহস আসছে এই কারণে যে, রাজনৈতিক দলের মদত আছে। যে মদত ছাড়া এত সাহস হয় না'। উপাচার্যের আক্ষেপ, 'বিশ্বভারতীর অধ্যাপক হিসেবে আমরা ব্যর্থ। ছাত্রছাত্রীদের সামনে মূল্যবোধ তুলে ধরতে পারিনি'।
মৃত ছাত্রের নাম অসীম দাস। ঘড়িতে তখন ৮টা। বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর পাঠভবনের উত্তরশিক্ষা হস্টেলের ঘর থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ছেলের মৃত্যু খবর পেয়ে বিশ্বভারতীতে আসেন বাবা-মা। দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টার ধরে উপাচার্যের বাড়ির সামনে ধর্ণায় বসেন মৃতের পরিবারের লোকেরা। তাঁদের দাবি, ২ দিন আগেও মোবাইলে ছেলের সঙ্গে কথা হয়। তখন ফুচকা খাচ্ছিল সে। হস্টেলে ওই পড়ুয়াকে খুন করা বলে অভিযোগ।
এদিন জি ২৪ ঘণ্টাকে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, 'সুবিধামতো আসুন, আমি কথা বলতে রাজি। পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে রাজি। আমি চেষ্টাও করছি, যাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারি। কিন্তু বাবা-মায়ের সঙ্গে যে সাঙ্গোপাঙ্গোরা আছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি নই। কারণ, মৃত্যুকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। আমাদের একটা তরতাজা ছেলে চলে গেল, আমরা সকলেই মর্মাহত'। সঙ্গে যোগ করেন, 'আমি যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের মনোনীত উপাচার্য, অতএব আমাকে কেন্দ্রীয় সরকারের যে রাজনৈতিক দল, তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সেটা ঠিক নয়। আমি একজন শিক্ষাবিদ। এখানে আসার আগে জার্মানিতে পড়াতাম। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন মাস্টারি করেছি। কেন্দ্র-রাজ্যে দ্বন্দ্বের মাঝে স্যান্ডউইচ হচ্ছি'।
এদিকে রাতে যখন তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ চলছে, তখন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে টুইট করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড। রাজ্যপালের তিনি 'চিরঋণী' বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।