Weather Update: রাজ্যে অতিবৃষ্টির পূর্বাভাস আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের, পুজোয় ভাসবে বাংলা?

এবার বঙ্গে বর্ষার স্থায়িত্ব নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। অত্যন্ত বেশি সম্ভাবনা রয়েছে পুজোয় বৃষ্টি হওয়ার কারণ দেরিতে এসেছে বর্ষা এবং খেলবে দীর্ঘ ইনিংস। এমনকি কালীপুজোতেও পিছু ছাড়তে নাও পারে বৃষ্টি।
অয়ন ঘোষাল: দিল্লীর মৌসম ভবন এবার পূর্বাভাস দিয়েছে যে দেশের কিছু রাজ্যে কম বৃষ্টি হবে। কিন্তু সিকিম সহ উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং বঙ্গে এবার দেরিতে হলেও কোমর বেঁধে স্থায়ী ইনিংস খেলতে আসছে বৃষ্টি এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এবার নির্ধারিত সময়ের সামান্য আগে ভারতের মূল ভূখণ্ডের কেরলে বর্ষা প্রবেশ করেছে। উত্তরবঙ্গ ও সিকিমেও তার প্রবেশ ঘটেছে গত শুক্রবার। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগেই এসে গিয়েছে বর্ষা।
সাপোর্ট সিস্টেম অথবা অনুঘটকের অভাবে দক্ষিণবঙ্গে এখনও প্রবেশ করতে না পারলেও মৌসম ভবন জানিয়েছে ১৪ জুন বিকেলের পর অথবা ১৫ জুন সকালে বর্ষা দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশ করবে। তবে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু অর্থাৎ বর্ষা তার আসল স্বরূপ ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হবে জুন মাসের শেষ সপ্তাহে।
দুই বঙ্গেই বর্ষার প্রকৃত নাছোড়বান্দা বৃষ্টি শুরু হবে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে। যেহেতু ইনিংসের শুরুটা আশানুরূপ হল না সেই কারনেই মনে করা হচ্ছে বর্ষা টি২০ স্টাইল ছেড়ে টেস্ট ম্যাচের মতো ব্যাটিং করবে। অর্থাৎ তার ইনিংস এই মরসুমে দীর্ঘস্থায়ী হতে চলেছে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা।
তারা মনে করছেন, এবার বঙ্গে বর্ষার স্থায়িত্ব নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। তারপর বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। খাতায় কলমে হেমন্ত কাল বলে আর কোনও কিছুর অস্তিত্ব থাকবে না। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বাতাস জলীয় বাষ্প মুক্ত হয়ে গেলে তৈরি হবে শীত শীত ভাব। সেটাই ডিসেম্বরের প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে প্রথমে উত্তরবঙ্গে ও পরে দক্ষিণবঙ্গে শীতের আমেজ আনবে।
কেন অতিবৃষ্টি?
যে সময় বর্ষা তার মূল প্রভাব ফেলতে শুরু করবে, সেই সময়টা বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র পৃষ্ঠে সব থেকে বেশি জলীয় বাষ্প উৎপন্ন হওয়ার সময়। এর ফলে যেদিন ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার কথা, সেইদিন মৌসুমী বায়ু সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ব্যাক আপ সাপোর্ট হিসেবে প্রায় দ্বিগুণ বা তিনগুণ জলীয় বাস্পের অগাধ যোগান পাবে। নিজের স্বভাবসিদ্ধ প্রক্রিয়ায় সেই জলীয় বাষ্প হু হু করে টানবে মৌসুমী বায়ু। তখন ৫০ এর বদলে সেদিনের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৮০ থেকে ১০০ মিলিমিটার। গোটা জুলাই, অগাস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসে লাগাতার এই একই প্রবণতা চলতে থাকায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হবে দুই বঙ্গে।
কতটা অতিবৃষ্টি?
উত্তরবঙ্গে নির্ধারিত পরিমাণের তুলনায় এবার ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বেশী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে আরও বেশী। প্রায় ৭০ শতাংশ অতিবৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। অর্থাত ১০০ শতাংশের বদলে এবার দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হতে চলেছে ১৭০ শতাংশ। যা দ্বিগুণের তুলনায় কিছুটা কম।
অতিবৃষ্টির প্রভাব?
দক্ষিণবঙ্গের ভৌগোলিকভাবে নিচু জেলা যেমন হাওড়া গ্রামীন, হুগলি গ্রামীন, পশ্চিম মেদিনীপুর শহর ও গ্রামীন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামীন এলাকায় সেচ ও নিকাশী ব্যবস্থার দুর্বল পরিকাঠামো, এই পূর্বাভাসের ফলে আশঙ্কার মেঘ দেখছে।
পুজোয় বৃষ্টি?
অত্যন্ত বেশি সম্ভাবনা রয়েছে পুজোয় বৃষ্টি হওয়ার। এর কারণ দেরিতে এসেছে বর্ষা এবং খেলবে দীর্ঘ ইনিংস। তাই পুজোয় বৃষ্টির আশঙ্কা থাকছে। এমনকি কালীপুজোতেও পিছু ছাড়তে নাও পারে বৃষ্টি।