শ্রেয়সী গাঙ্গুলি


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাজ্যের ভোট-আবহে বিরোধীদল বলছে এখানে 'গণতন্ত্র নেই'; সেই 'অভিযোগ' উড়িয়ে দিয়ে শাসকদল অন্য বয়ান দিচ্ছে। কিন্তু মহামায়া প্রামাণিক জানিয়ে দিলেন, গণতন্ত্র আছে গণতন্ত্রতেই! 


'জানিয়ে দিলেন' বললে হয়তো একটু ভুল বলা হয়। কারণ কথা তো কিছু বলেলনি মহামায়া। স্রেফ নিজের ভোট (vote) নিজে দিয়েছেন। হুগলির (hooghly) তারকেশ্বরের পঁচাশি বছরের অশক্ত অসুস্থ বৃদ্ধা মহামায়া প্রামাণিক ছেলের কোলে চেপে প্রয়োগ করে গেলেন নিজের ভোটাধিকার। পাঁচ বছর পর-পর ভোট আসে, তা আমজনতার কাছে তো উৎসবও। মহামায়ার আচরণে লাঠি-গুলির রক্তাক্ত লড়াই-সংঘর্ষের বাইরের সেই ভোটোৎসবের মাধুর্যই যেন বেরিয়ে এল।   


কোনও 'রাজনৈতিক' ভাবনার দিকে ঝুঁকে যে তিনি এ কাজ করলেন, তা নয়। এ দেশের, এ রাজ্যের কোটি কোটি সাধারণ মানুষের মনের ভিতরে নীরবে নিভৃতে অতি স্বাভাবিক ভাবেই বসবাস করে যে Sense of Democracy, কোনও রকম তর্ক-বাহাস না-জুড়েই সেই জরুরি কথাটি জানিয়ে দিলেন মহামায়া।


আরও পড়ুন: WB Assembly Election 2021: একসঙ্গে রান্না করছে TMC-BJP, তৃতীয় দফায় দুপুরের মেনুতে লুচি আর কষা আলুরদম


মহামায়া যে ৮৫ বছরের বৃদ্ধা তাই-ই নয়, তিনি বেশ অসুস্থও। তাঁর শরীরের নীচের অংশ অসাড়। তাঁর বাড়ি থেকে তাঁর ভোটকেন্দ্র আধ কিলোমিটার দূরে। এই বয়সে এবং এই শারীরিক পরিস্থিতিতে এই দূরত্বই রোদে ও গরমে অতিক্রম করা তাঁর পক্ষে বেশ কঠিন। তাই একেবারে প্রাথমিক ভাবে ভেবেওছিলেন মহামায়া যে, এত কষ্ট করে ভোটটা আর দিতে যাবেন না তিনি। তাঁর ছেলে তাঁকে  বলেন, কেন তোমার ভোটটা নষ্ট করবে? ছেলের কথায় মত বদলান বৃদ্ধা। শেষমেশ ছেলের কোলে চেপেই তাঁর ভোটকেন্দ্র আকনাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিতে আসেন তিনি।


দেখতে গেলে, গণতন্ত্রের যে-স্বাভাবিক বোধের কথা মহামায়ার বিষয়ে বলা যায়, তা তাঁর ছেলের বিষয়েও বলা যায়। তিনিও মাকে কষ্ট করে ভোটটা দিতে ভোটকেন্দ্রে এনে প্রমাণ করলেন, রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা যতই 'গণতন্ত্র' নিয়ে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করুন না কেন, এখনও বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের আলোজলবাতাসে সাবলীল ভাবেই বেঁচে রয়েছে গণতন্ত্রের প্রখর বোধ, নিজের ভোট নিজে দেওয়ার অধিকারের প্রবল বোধ!


আরও পড়ুন: West Bengal 3rd Phase Election 2021: গোঘাটে ভোটারদের মারধরের অভিযোগ, বাহিনীর 'অপব্যবহারে' ক্ষুব্ধ Mamata