নিজস্ব প্রতিবেদন: কেন্দ্রের তরফে আপত্তি ছিল। রেলের তরফে দেওয়া হয়েছিল ব্যারিকেড, পোস্টার। চরমে ছিল স্নায়ুযুদ্ধ। তারইমধ্যে ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার বর্ধমানের রেল স্টেশনের উপরে নতুন রেল ব্রিজের উদ্বোধন করল রাজ্য। আর তারই সঙ্গে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী বার্তাও দিয়ে দিলেন, “আর কোনও উদ্বোধন হবে না, এটাই আসল উদ্বোধন।”


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 



মঙ্গলবার এই সেতুটির উদ্বোধন করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিল রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে আপত্তি জানানো হয়েছিল। এদিন সকালেই সেতুর গার্ডওয়ালে বেশ কয়েকটি পোস্টারকে ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। পোস্টারে লেখা ছিল, “সেতুর কাজ চলছে। সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল বারণ। নির্দেশ মানা না হলে মোটা টাকার জরিমানা, হতে পারে জেলও।” এই পোস্টারে উদ্বোধনের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর বলে উল্লেখ করা হয়। এমনকি সেতুর ওপর রেলের তরফে ব্যারিকেড লাগিয়েও দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। তাতেই স্নায়ুযুদ্ধ চরম আকার নেয়। বেকায়দায় পড়েন জেলা প্রশাসনিক কর্তারাও।


একটি প্রকল্পের উদ্বোধন নিয়ে কেন্দ্র রাজ্যের সংঘাত নতুন কিছু নয়। এর আগেও জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন ঘিরে কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত চরমে ওঠে। তবে এদিন এই হুঁশিয়ারি পোস্টার পড়ার পর আদৌ রাজ্যের তরফে উদ্বোধন করা হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।


বাড়ছে ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরির সময়সীমা, জানালেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক


কিন্তু সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্দিষ্ট সময়েই ঘাটাল থেকে  দূরনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার মাধ্যমে সেতুর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বোধনের সময়েই সরিয়ে দেওয়া হয় সমস্ত ব্যারিকেড। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, জেলাশাসক বিজয় ভারতী-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। উদ্বোধনের পর সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সবাইকে নিয়েই সেতুর উদ্বোধন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কেউ কেউ কাজে বাধা দিচ্ছে।”


প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে অনুমোদন হলেও ২০১১ সাল পর্যন্ত জমিজটে আটকে ছিল ওই সেতুর কাজ। ২০১১ সালে শেষ পর্যন্ত শুরু হয় সেতু নির্মাণের কাজ। বর্ধমান রেল স্টেশনের উপরে পুরনো যে সেতুটি রয়েছে সেটির ভার বহন ক্ষমতা কমে আসার কারণেই নতুন এই সেতু নির্মাণ করা হয়। বছর দু'য়েক আগেই তার কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্যের টানাপোড়েনে থমকে সেতুর উদ্বোধন।


পরিসংখ্যান বলছে, এই সেতু নির্মাণে রাজ্য সরকার দিয়েছে ১৬২ কোটি টাকা, রেল দিয়েছে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র-রাজ্যের যৌথ উদ্যোগেই সেতু উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এটাই ‘আসল উদ্বোধন’ বলে এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তবে এই সেতুর ওপর দিয়ে কবে থেকে যান চলাচল সম্ভব, সেবিষয়ে এখনও কোনও সদুত্তর মেলেনি।